নম্বর-দৌড়ে ভরসা জোগাতে জোর ছোট প্রশ্নে

পাঠ্যক্রম নতুন। নতুন প্রশ্নপত্রের আদলও। এত দিন পরীক্ষায় ছোট প্রশ্ন থাকত বড়জোর ৪০ শতাংশ। এ বছর থেকে তা বেড়ে হবে ৭০ থেকে ৭৫ ভাগ। এই নয়া ব্যবস্থার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আগামী শুক্রবার, ১৩ মার্চ। পুরনো পাঠ্যক্রমের পরীক্ষা আরম্ভ ১২ মার্চ। মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৮ লক্ষ ২৩ হাজার ২৪১।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৫ ০২:৪৫
Share:

পাঠ্যক্রম নতুন। নতুন প্রশ্নপত্রের আদলও। এত দিন পরীক্ষায় ছোট প্রশ্ন থাকত বড়জোর ৪০ শতাংশ। এ বছর থেকে তা বেড়ে হবে ৭০ থেকে ৭৫ ভাগ। এই নয়া ব্যবস্থার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আগামী শুক্রবার, ১৩ মার্চ। পুরনো পাঠ্যক্রমের পরীক্ষা আরম্ভ ১২ মার্চ। মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৮ লক্ষ ২৩ হাজার ২৪১।

Advertisement

একাদশ-দ্বাদশের পাঠ্যক্রম বদলেছে ২০১৩ সালে। নয়া পাঠ্যক্রমে প্রথম পরীক্ষা এ বছরই। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের কর্তাদের দাবি, এই ব্যবস্থায় পাশের হার বাড়বে। ছোট প্রশ্নের ফলে বাড়বে পরীক্ষার্থীদের নম্বরও। আইসিএসই, সিবিএসই-র মতো দিল্লি বোর্ডের পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় যাতে পড়ুয়ারা পিছিয়ে না পড়েন, সে দিকে তাকিয়ে প্রশ্নপত্রে এই রদবদল বলে জানিয়েছেন সংসদের সভানেত্রী মহুয়া দাস। কিন্তু ওই বোর্ডগুলির পরীক্ষাতেও তো এত বেশি নম্বরের ছোট প্রশ্ন থাকে না! শিক্ষক সংখ্যা ও পরিকাঠামোর উন্নতি না ঘটিয়ে এ ভাবে নতুন ব্যবস্থা চালু করলে উচ্চ মাধ্যমিকের মানের সঙ্গে আপস হতে পারে, আশঙ্কা করছেন অনেক প্রবীণ শিক্ষকই।

সংসদ সভানেত্রীর যদিও দাবি, “আশঙ্কার কোনও কারণ নেই। ছোট প্রশ্ন বেশি থাকলেও আন্দাজে ঢিল ছুড়ে এই পরীক্ষায় বাজিমাত করা যাবে না। নয়া প্রশ্নের ধাঁচে নম্বর তোলা ও পাশ করা যেমন সহজ, তেমনই সে জন্য যথেষ্ট পরিশ্রমও করতে হবে ছেলেমেয়েদের। খুঁটিয়ে পড়তে হবে পাঠ্যবই।”

Advertisement

উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্রছাত্রীরা যাতে নম্বরের দৌড়ে অন্য বোর্ডের পড়ুয়াদের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারেন, সে দিকে নজর দিতে বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর ‘স্বপ্নপূরণ’ করতেই পরীক্ষার ধাঁচে বদলের এই উদ্যোগ জানিয়েছেন মহুয়াদেবী। শনিবার তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী চান আমাদের রাজ্যের ছেলেমেয়েরা যেন অন্যদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে না পড়ে। তাঁর সেই স্বপ্ন পূরণ করতেই পরীক্ষায় বদল আনা হচ্ছে।”

কী এই পরিবর্তন? এ বছর উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞানের বিষয়গুলিতে ৩০ নম্বরের প্র্যাক্টিক্যাল এবং কলা ও বাণিজ্যের বিষয়ে প্রজেক্ট বা প্রকল্পের কাজের জন্য ২০ নম্বর রয়েছে। বাকি নম্বরের লেখা পরীক্ষা হবে। পরীক্ষার্থীদের প্র্যাক্টিক্যাল ও প্রকল্পের কাজের মূল্যায়ন করে নম্বর দিয়েছেন নিজেদের স্কুলেরই শিক্ষক-শিক্ষিকারা। সেই নম্বর ও খাতা জমা পড়েছে সংসদের কাছে। সংসদ খাতাগুলি স্ক্রুটিনি করবে।

৩ ঘণ্টা ১৫ মিনিটের লেখা পরীক্ষায় থাকছে দু’টি ভাগ পার্ট এ এবং পার্ট বি। পার্ট বি হবে একটি বুকলেটের আকারে। ওই বুকলেটেই উত্তর লিখে জমা দিতে হবে পরীক্ষার্থীদের। এতে থাকবে সব ১ নম্বরের প্রশ্ন। আর ১ এর বেশি নম্বরের প্রশ্ন থাকবে পার্ট এ-তে। মহুয়াদেবী জানিয়েছেন,“যে সব প্রশ্নের নম্বর ১ থেকে ৫ এর মধ্যে, তাদেরই একসঙ্গে ছোট প্রশ্ন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রশ্নপত্রে এই ধরনের প্রশ্নই থাকবে ৭০ থেকে ৭৫ ভাগ। আর বড় প্রশ্ন হবে সর্বোচ্চ ৮ বা ১০ নম্বরের।”

পরীক্ষাকেন্দ্রের ভিতরে নকল রুখতে ১ নম্বরের প্রশ্নের একাধিক সেট বানাচ্ছে সংসদ। এতে পাশাপাশি বসা পরীক্ষার্থীদের প্রশ্নপত্রে প্রশ্নের ক্রম আলাদা হবে। ফলে পাশের জনের খাতা দেখে হুবহু টোকার উপায় থাকবে না। তা ছাড়া, টোকাটুকি বন্ধে কড়া নজরদারির জন্য পরীক্ষাকেন্দ্রে নজরদার শিক্ষক বা ইনভিজিলেটরের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংসদ সভাপতি। এর পরেও কেউ নকলের চেষ্টা করলে, তার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন