পল্টু দাসের বাড়িতে নিতুর লকারের চাবি পেল সিবিআই

সারদা কেলেঙ্কারির তদন্তে এগিয়ে এ বার নতুন আর একটি লকারের সন্ধান পেল সিবিআই। কেন্দ্রীয় এই তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা জানান, দেবব্রত সরকার ওরফে নিতুকে জেরা করে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের প্রয়াত কর্তা পল্টু দাসের সীতারাম ঘোষ স্ট্রিটের বাড়িতে হানা দেওয়া হয়েছিল। সেখান থেকেই নানা নথিপত্রের সঙ্গে মিলেছে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কলেজ স্ট্রিট শাখার একটি লকারের চাবি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:৪৫
Share:

সারদা কেলেঙ্কারির তদন্তে এগিয়ে এ বার নতুন আর একটি লকারের সন্ধান পেল সিবিআই। কেন্দ্রীয় এই তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা জানান, দেবব্রত সরকার ওরফে নিতুকে জেরা করে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের প্রয়াত কর্তা পল্টু দাসের সীতারাম ঘোষ স্ট্রিটের বাড়িতে হানা দেওয়া হয়েছিল। সেখান থেকেই নানা নথিপত্রের সঙ্গে মিলেছে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কলেজ স্ট্রিট শাখার একটি লকারের চাবি। সেই লকারের সঙ্গে নিতুর যোগ রয়েছে বলে তদন্তকারীদের দাবি।

Advertisement

ওই লকারের ভিতরে সারদা কেলেঙ্কারির বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সূত্র মিলতে পারে বলে মনে করছেন সিবিআই অফিসারেরা। সেই কারণেই তাঁরা আগামী সপ্তাহে লকারটি খুলতে চান। এর আগে গোলপার্কের একটি ব্যাঙ্কে সারদার একটি প্রধান অ্যাকাউন্টের খোঁজ পেয়েছিলেন সিবিআই অফিসারেরা। সেখানে হানা দিয়েও লেনদেন সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে বলে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন। সারদা কেলেঙ্কারির তদন্তে নেমে ইতিমধ্যেই সল্টলেকের একটি ব্যাঙ্কের লকারের খোঁজ পেয়েছিল বিধাননগর পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। তদন্ত শুরুর পরে বছর ঘুরে গেলেও বিধাননগর পুলিশ লকারটি খোলেনি। কিন্তু ইডি লকার খুলতে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগেই তড়িঘড়ি লকারটি খোলে বিধাননগর পুলিশ। গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্যপ্রমাণ সরিয়ে ফেলা হয় বলেও অভিযোগ ওঠে। সিবিআইয়ের একাংশ মনে করছেন, কলেজ স্ট্রিটের এই লকারটির খবর পুলিশ আগে পায়নি। সে জন্যই এই লকারে বেশ কিছু তথ্যপ্রমাণ মিলতে পারে।

শুক্রবার সল্টলেকের সিবিআই দফতরে হাজির হয়েছিলেন কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর প্রকাশ উপাধ্যায় ও বিধাননগর যুব কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধি দল। সিবিআই কর্তাদের সঙ্গে কথা বলার পর বেরিয়ে এসে প্রকাশবাবু জানান, কলকাতা পুরসভার সঙ্গে একটি ভুঁইফোঁড় হোর্ডিং সংস্থার চুক্তি হয়েছিল। নিয়ম অনুযায়ী পাঁচ বছরের কম অভিজ্ঞতা সম্পন্ন কোনও সংস্থা পুরসভার সঙ্গে চুক্তি করতে পারে না। কিন্তু এই সংস্থাটির সেই অভিজ্ঞতা ছিল না। প্রকাশবাবুর অভিযোগ, ওই বিজ্ঞাপন সংস্থাটির পিছনেও সারদা ও সুদীপ্ত সেন ছিলেন।

Advertisement

বিধাননগরের যুব কংগ্রেস কর্মীরা এ দিন আঙুল তুলেছেন বিধাননগর পুরসভার বিরুদ্ধে। তাঁদের অভিযোগ, সারদার কাছ থেকে একটি গাড়ি নিয়েছিলেন বিধাননগরের চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী। বিধাননগর মেলা এবং চলচ্চিত্র উৎসবের বিধাননগর চ্যাপ্টারেও সারদার টাকা ঢুকেছিল বলে যুব কংগ্রেসের অভিযোগ। যদিও কৃষ্ণাদেবী বলেন, “সব অভিযোগই ভিত্তিহীন। সিবিআই গাড়ি সংক্রান্ত তথ্য চাইলে দেব। মেলার হিসেবেরও অডিট করানো হয়েছে।” আর চলচ্চিত্র উৎসব নিয়ে কৃষ্ণাদেবীর বক্তব্য, ওই উৎসব পুরসভার আওতাধীনই নয়।

যদিও তদন্তকারীদের একটি সূত্র বলছেন, ওই চলচ্চিত্র উৎসবের শেষে একটি পাঁচতারা হোটেলে নৈশভোজ হয়েছিল। তার জন্য সারদার টাকা নেওয়া হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। তবে তার সঙ্গে পুরসভার যোগ রয়েছে কি না, তা নিয়ে কোনও নিশ্চিত তথ্য সিবিআই জানায়নি।

এ দিন বিক্ষোভ হয়েছে শ্যামল সেন কমিশনেও। কমিশন সূত্রের খবর, হিমাঙ্গিনী ইনফ্রাটেক নামে একটি সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর ফণীভূষণ সমাদ্দারকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। কমিশনে হাজিরা দিয়ে বেরোনোর মুখে তাঁর উপরে এক দল লোক চড়াও হয়। ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। শেষে পুলিশ ফণীভূষণকে কর্ডন করে বিক্ষোভ থেকে বার করে নিয়ে যায়। এর আগে এমপিএসের কর্ণধার প্রমথ মান্নার হাজিরার দিনেও একই রকম বিক্ষোভ হয়েছিল। ভারত কৃষি সমৃদ্ধি ইন্ডাস্ট্রিজ (বিকেএসআইএল) নামে আর একটি সংস্থার তহবিল সংগ্রহও এ দিন নিষিদ্ধ করেছে সেবি। সেবি জানিয়েছে, এই সংস্থাটি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ডিবেঞ্চার বিক্রি করে টাকা তুলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন