লাভপুর গণধর্ষণ কাণ্ডে রাজ্য সরকার ও পুলিশের ভূমিকায় সুপ্রিম কোর্ট বিরক্তি প্রকাশ করলেও ওই ঘটনার ফরেন্সিক রিপোর্ট এখনও জমা পড়েনি। ফলে ওই ঘটনার চার্জশিট আদালতে জমা দিতে পারছে না জেলা পুলিশ। শনিবার এসপি অলক রাজোরিয়া বলেন, “ফরেন্সিক রিপোর্ট হাতে পেলেই চার্জশিট দেব। আশা, এপ্রিলের মধ্যে রিপোর্ট পেয়ে যাব।”
২০ জানুয়ারি লাভপুরের সুবলপুর গ্রামে সালিশি সভার ফতোয়া মেনে ওই তরুণী গণধর্ষিতা হন বলে অভিযোগ। ঘটনার পরে মোড়ল-সহ ১৩ জন অভিযুক্ত গ্রেফতার হন। ২৭ জানুয়ারি সবোর্চ্চ আদালত ওই ঘটনা সম্পর্কে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা করে। শুক্রবার পুলিশের ভূমিকা সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্ট অসন্তোষ প্রকাশ করে। ফরেন্সিক রিপোর্ট জেলা পুলিশের হাতে না আসায় তদন্তের কাজ বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে বলে পুলিশ প্রশাসনের একাংশ ক্ষুব্ধ। ৩ এপ্রিল মামলার পরবর্তী দিন ধার্য হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী ফিরোজকুমার পাল। অভিযুক্তদের পক্ষের আইনজীবী দিলীপ ঘোষ বলেন, “রাজ্যের বাইরের কোনও সংস্থাকে দিয়ে যাবতীয় পরীক্ষার আবেদন জানান আদালতে। গ্রাহ্য হয়নি। ফের আবেদন জানাব।”
ঘটনার পর থেকে সিউড়ির হোমে ওই তরুণী তাঁর মায়ের সঙ্গে রয়েছেন। মানসিক ঝঞ্ঝা কাটিয়ে এখন হোমে সেলাই ও হাতের কাজ শিখছেন। পড়াশোনা করছেন। আবাসিকদের সঙ্গে গল্পও করছেন। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তরুণীকে দেওয়া ক্ষতিপূরণের টাকা তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে।” জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা বলেন, “ওই তরুণীর ইচ্ছাকেই আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। তিনি যখন টালিপাড়ায় তাঁর জন্য তৈরি করে দেওয়া বাড়িতে যেতে চাইবেন, তখনই ব্যবস্থা করে দেব। তিনি যদি নিজের গ্রামে ফিরতে চান, প্রশাসন সে ব্যবস্থা করবে।” পুলিশ সুপার জানান, বাড়ি ও হোমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে।
তরুণীকে সরকারি চাকরি দেওয়ার দাবি জানান তাঁর ভাই ও বৌদি। এস পি বলেন, “যোগ্যতা অনুুযায়ী চাকরি দেওয়া যেতে পারে। তবে এ ব্যাপারে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার সরকার নেবে।”