সরব বিরোধীরা। হাওড়া ব্রিজের উপর কংগ্রেস সমর্থকদের অবস্থান। (ডান দিকে) শনিবার ধর্মতলা থেকে মৌলালি পর্যন্ত বাম দলগুলির মিছিল। ছবি:দীপঙ্কর মজুমদার ও দেবাশিস রায়।
সারদা-কাণ্ডে পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র গ্রেফতারের পরে, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে সিপিএম ও বিজেপি-র কর্মীদের উপরে আক্রমণ চালানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এমনকী, সন্দেশখালির সিপিএম বিধায়কের উপরে হামলা করাতেও অভিযুক্ত শাসক দল।
শনিবার বিকেলে সারদা-কাণ্ডে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেরা করার দাবিতে বর্ধমান স্টেশনে সভা করার কথা ছিল সিপিএমের। দলের বর্ধমান জেলা কমিটির সদস্য আইনুল হকের অভিযোগ, “সভা শুরুর আগে আমাদের কর্মীরা যখন মাইক বাঁধছিলেন, তখন স্থানীয় তৃণমূল নেতা ইফতিকার আহমেদ পাপ্পুর নেতৃত্বে এক দল সমাজবিরোধী তাঁদের মারধর করে।” অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে শহর যুব তৃণমূলের সভাপতি খোকন দাসের পাল্টা দাবি, “সিপিএমের লোকেরাই পাপ্পুদের উপরে চড়াও হয়। ওদের ছোড়া ঢিলে আমাদের কয়েকজন চোট পায়।”
সংঘর্ষে দু’পক্ষের জনা দশেক আহত হন। আহতদের মধ্যে সিটু নেতা বিশ্বজিৎ সেনের অবস্থা গুরুতর। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। জেলার পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা জানান, সিপিএম ও তৃণমূলের দু’জন করে সমর্থককে ধরা হয়েছে।
এ দিন সন্ধ্যায় সন্দেশখালির বয়ারমারি গ্রামে সিপিএমের পথসভায় হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সভায় উপস্থিত সিপিএম বিধায়ক নিরাপদ সর্দারকে বাঁচাতে গেলে জখম হন তাঁর দেহরক্ষী এবং সন্দেশখালি ১-এর জোনাল সম্পাদক রবীন সরকার। বিধায়ক পুলিশে লিখিত অভিযোগ করেছেন। যদিও তৃণমূলের ব্লক নেতা রঞ্জিত দাস দাবি করেছেন, “ওই সভায় তৃণমূল নেতা-নেত্রীদের নামে গালিগালাজ করা হচ্ছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা তার প্রতিবাদ করেন। এর সঙ্গে তৃণমূলের যোগ নেই।” শুক্রবার রাত থেকে শনিবার পর্যন্ত উত্তর ২৪ পরগনার কামারহাটি, বরাহনগর, বেলঘরিয়ার বিভিন্ন এলাকাতেও সিপিএম কর্মীদের উপরে হামলার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরায় আবার বিজেপি কর্মীদের উপরে হামলার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শনিবার বিকেলে ডেবরার বালিচকে মদন মিত্রকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে তৃণমূলের মিছিল বেরোয়। অভিযোগ, মিছিলের নেতৃত্বে থাকা তৃণমূলের ব্লক সভাপতি প্রদীপ কর-সহ দলের চার জন স্থানীয় দুই বিজেপি কর্মীকে মারধর করেন। অরুণ বিয়ানি ও তাপস হালুই নামে প্রহৃত দুই বিজেপি কর্মী ডেবরা থানায় অভিযোগ জানান। প্রদীপবাবুর অবশ্য দাবি, “মারধরের কোনও ঘটনা ঘটেনি।”
কোচবিহারের শালমারায় এ দিন সকালে বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষ বাধে। দু’পক্ষের তিন জন জখম হন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তৃণমূলের অভিযোগ, মাইক বাঁধার সময় দুই তৃণমূল সমর্থকের উপরে হামলা চালায় বিজেপি কর্মীরা। বিজেপি-র পাল্টা অভিযোগ, এ দিন বাজারে যাওয়ার পথে তাঁদের সমর্থক মনভোলা বর্মনকে মারধর করে তৃণমূল কর্মীরা। তবে রাত পর্যন্ত কেউ পুলিশে অভিযোগ জানায়নি।