বাংলায় নজর দিন, সনিয়াকে আর্জি মানসের

রাজ্যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে। পরিস্থিতির ফায়দা নেওয়ার জন্য বাংলার কংগ্রেসের দিকে আরও বেশি নজর দিতে দলের সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর কাছে আর্জি জানালেন মানস ভুঁইয়া। অন্য দিকে আবার রাজ্যে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে পথে নামার আরও কিছু কর্মসূচি ঘোষণা করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তৃণমূল-বিরোধী হাওয়ার সুযোগ নিতে দিল্লি ও কলকাতায় এ ভাবেই তৎপর হলেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:৩৬
Share:

রাজ্যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে। পরিস্থিতির ফায়দা নেওয়ার জন্য বাংলার কংগ্রেসের দিকে আরও বেশি নজর দিতে দলের সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর কাছে আর্জি জানালেন মানস ভুঁইয়া। অন্য দিকে আবার রাজ্যে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে পথে নামার আরও কিছু কর্মসূচি ঘোষণা করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তৃণমূল-বিরোধী হাওয়ার সুযোগ নিতে দিল্লি ও কলকাতায় এ ভাবেই তৎপর হলেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।

Advertisement

রাষ্ট্রপতি-তনয়া শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায়ের হয়ে প্রচারের জন্য দিল্লি গিয়েছেন প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি মানসবাবু। সঙ্গে তাঁর ‘টিমে’র দুই প্রদেশ সাধারণ সম্পাদক অজয় ঘোষ ও খালিদ এবাদুল্লা। দলের আর এক বর্ষীয়ান নেতা সোমেন মিত্রের সঙ্গে সোমবারই চিত্তরঞ্জন পার্কের বাঙালি মহল্লায় দিল্লি বিধানসভা ভোটের কংগ্রেস প্রার্থী শর্মিষ্ঠার সমর্থনে প্রচারে অংশ নিয়েছেন মানসবাবু। প্রচারের অবসরেই ১০ জনপথে গিয়ে সনিয়ার সঙ্গে দেখা করেছিলেন তিনি। দলের সভানেত্রীর কাছে তাঁর আর্জি, কেন্দ্রীয় কংগ্রেস নেতৃত্বকে পশ্চিমবঙ্গের জন্য আরও বেশি মনোযোগ দিতে হবে। রাজ্যে বিজেপি-র পর্যবেক্ষক সিদ্ধার্থনাথ সিংহ যেখানে প্রায় কলকাতায় পড়ে থাকছেন, সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ একাধিক বার সভা করতে যাচ্ছেন, সেখানে কংগ্রেস হাইকম্যান্ডকে আরও সক্রিয় হওয়ার কথা বলেছেন তিনি।

পরে মানসবাবু বলেন, “তৃণমূলের উত্থান হয়েছিল হাউই গতিতে, এখন জেট গতিতে তারা নীচে নামছে! বিজেপি এই অবস্থার ফায়দা নিচ্ছে। বামপন্থীরাও আন্দোলন করে কিছুটা জায়গা নেওয়ার চেষ্টা করছে। এখন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নজর না দিলে কংগ্রেসের আরও ক্ষতি হয়ে যাবে।” রাহুল গাঁধী যে ভাবে প্রদেশের সব নেতাকে বসিয়ে একসঙ্গে কাজ করার কথা বলেছিলেন, সেই পথেই চলার কথা সভানেত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছেন বিধায়ক মানসবাবু। কংগ্রেস সূত্রের খবর, এ রাজ্যে এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক সি পি জোশী কয়েক দিনের মধ্যেই কলকাতায় এসে জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলতে পারেন বলে ইতিমধ্যেই ঠিক হয়েছে। মানসবাবুর দরবারের পরে সেই প্রক্রিয়া আরও ত্বরান্বিত হতে পারে।

Advertisement

এরই মধ্যে প্রদেশ সভাপতি অধীর জানিয়েছেন, বিভিন্ন বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থায় প্রতারিতদের ক্ষতিপূরণ, ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা এবং রাজ্যে খাদ্য সুরক্ষা আইন চালুর দাবিতে ১২ ফেব্রুয়ারি বিডিও দফতরগুলিতে দাবিপত্র দেবে কংগ্রেস। অধীর এ দিন বলেন, “সারদা-সহ বিভিন্ন চিট ফান্ডে লক্ষ লক্ষ মানুষ সর্বস্বান্ত। তাঁদের ক্ষতিপূরণের জন্য কেন্দ্র ও রাজ্যকে এগিয়ে আসতে হবে।” একই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, মোদী সরকার আসার পরে ১০০ দিনের কাজ প্রায় বন্ধের মুখে। গ্রামের মানুষ ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা পাচ্ছেন না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকাকে দুষে অধীরের আরও বক্তব্য, “কৃষকেরা এখন ধানের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না। মধ্যস্বত্ত্বভোগীরা অর্ধেক দামে চাষিদের থেকে ধান কিনে মুনাফা লুটছে। অথচ রাজ্য সরকার উদাসীন!”

উন্নয়নের প্রশ্নেও রাজ্যকে বিঁধেছেন অধীর। উত্তরবঙ্গ যাওয়ার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের বেহাল অবস্থা নিয়ে কটাক্ষের পাশাপাশিই তাঁর অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার কাজ থেমে আছে। অধিকাংশ জায়গায় ভাঙাচোরা রাস্তা। তবে তিনি নিজে তাঁর নির্বাচনী কেন্দ্রের অধীনে ফরাক্কা থেকে বহরমপুর পর্যন্ত জাতীয় সড়কের সংস্কার করিয়েছেন বলে দাবি করেছেন অধীর। তাঁর কথায়, “আমার নির্বাচনী কেন্দ্রের অধীনে ওই রাস্তার উন্নয়নের ক্ষেত্রে রাজনীতি করিনি! সেই জন্য ওই অংশে রাস্তা ভাল।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন