বিশ্বভারতীর ছাত্র ভর্তিতে কোটা চান না ১৮২ শিক্ষক

পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের পড়ুয়াদের জন্য বিশ্বভারতীর স্নাতকস্তরে আসন সংরক্ষণ প্রথা সমর্থন করছেন না বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের একটি বড় অংশ। এ বিষয়ে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরের শিক্ষকদের ২৬৪জন গোপন ব্যালটে তাঁদের মত জানান। শুক্রবার গণনার ফল, প্রায় ৭০ শতাংশ অধ্যাপক সংরক্ষণের বিরোধিতা করেছেন। অর্থাৎ মেধার ভিত্তিতে ছাত্রভর্তির প্রশ্নে শিক্ষকদের একটি বড় অংশ দাঁড়ালেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের পাশে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:৫৫
Share:

পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের পড়ুয়াদের জন্য বিশ্বভারতীর স্নাতকস্তরে আসন সংরক্ষণ প্রথা সমর্থন করছেন না বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের একটি বড় অংশ। এ বিষয়ে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরের শিক্ষকদের ২৬৪জন গোপন ব্যালটে তাঁদের মত জানান। শুক্রবার গণনার ফল, প্রায় ৭০ শতাংশ অধ্যাপক সংরক্ষণের বিরোধিতা করেছেন। অর্থাৎ মেধার ভিত্তিতে ছাত্রভর্তির প্রশ্নে শিক্ষকদের একটি বড় অংশ দাঁড়ালেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের পাশে।

Advertisement

পাঠভবন-শিক্ষাসত্রের পড়ুয়াদের জন্য বিশ্বভারতীর প্রায় অর্ধেক আসন সংরক্ষিত রাখার প্রথা চলে আসছিল কয়েক দশক ধরে। গত ২২ নভেম্বর বিশ্বভারতীর শিক্ষাসমিতির বৈঠকে প্রস্তাব নেওয়া হয়, আগামী শিক্ষাবর্ষ (২০১৫-১৬) থেকে এই নিয়ম তুলে দেওয়া হবে। এখন থেকে স্নাতক স্তরে ভর্তি হতে গেলে সর্বভারতীয় স্তরের পরীক্ষায় বসতে হবে।

এর প্রতিবাদে গত ২৪ নভেম্বর থেকে লাগাতার আন্দোলন শুরু হয়। উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্তের কুশপুত্তলিকা দাহ, উপাচার্য এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের ২১ ঘণ্টারও বেশি সময় ঘেরাও, এমন নানা উপায়ে আন্দোলন চালানো হয়। এ দিন গোপন ব্যালটের ফলাফল ঘোষিত হতে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ অধ্যাপকদের একটি বড় অংশের থেকে সমর্থন পেলেন।

Advertisement

বিশ্বভারতীর শিক্ষকদের সাবেকি সংগঠন ‘অধ্যাপক সভা’-র সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন পাঠভবন, শিক্ষাসত্রের শিক্ষকরাও (তাঁদেরও ‘অধ্যাপক’ বলা হয় বিশ্বভারতীতে)। অধ্যাপক সভা গোড়া থেকেই স্কুলপড়ুয়াদের ‘কোটা’ বজায় রাখতে আন্দোলন করছে। অন্য দিকে, কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের শিক্ষকদের নিয়ে তৈরি নতুন সংগঠন ‘বিশ্বভারতী ইউনিভাসিটি ফ্যাকাল্টি অ্যাসোসিয়েশন’ (ভিবিইউএফ) ওই আন্দোলনে যোগ দেয়নি। স্নাতক, স্নাতকোত্তর স্তরের পাঁচশোরও বেশি শিক্ষকের মধ্যে ৩১৯জন ভিবিইউএফ-এর সদস্য। ওই সদস্যদের মধ্যে সংরক্ষণের বিষয়ে গত দেড় মাস ধরে গোপন ব্যালটে মত সংগ্রহ করছিল ভিবিইউএফ।

এ দিন সন্ধ্যায় ভিবিইউএফ-এর সভাপতি মহম্মদ সিরাজুল ইসলাম এবং সম্পাদক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য জানান, সংগঠনের ৩১৯ সদস্যের মধ্যে ২৬৪ জনের মতামত সংগ্রহ করা গিয়েছিল। সংরক্ষণ বহাল রাখার বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন ১৮২ জন। পক্ষে রয়েছেন ৭৬ জন। কোনও সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি ৬জন অধ্যাপক। সুদীপ্তবাবুরা বলেন, “ফলাফলের সিদ্ধান্তের কথা সংগঠনের সাধারণ সভায় জানানো হবে। তার পরে এ নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

ওই ফলাফলকে অবশ্য গুরুত্ব দিতে রাজি নন সংরক্ষণের পক্ষে আন্দোলনকারীরা। বিশ্বভারতীর কর্মিসভা, অধ্যাপক সভা এবং আধিকারিকদের ‘জয়েন্ট স্টিয়ারিং কমিটি’-র আহ্বায়ক কিশোর ভট্টাচার্যের প্রতিক্রিয়া, “উচ্চশিক্ষায় ভর্তির ক্ষেত্রে যে প্রথা রয়েছে, সেটাই বহাল রাখার জন্য কর্মী, অধ্যাপক এবং আধিকারিকদের সংগঠন তাদের সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটাই বিশ্বভারতীর সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের মতামত।”

২৪ জানুয়ারি বিশ্বভারতীর কর্মসমিতির পরবর্তী বৈঠক। সেখানে অভ্যন্তরীণ সংরক্ষণ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে, দাবি বিশ্বভারতীর একটি সূত্রের।

ছাত্রী নিখোঁজ: পাঠভবনের হস্টেল থেকে এক ছাত্রী নিখোঁজ হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ জানালেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, দশম শ্রেণির ওই ছাত্রী মাধবী গার্লস হস্টেলে থাকত। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে তার খোঁজ মিলছে না।

রাতে বোলপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। পুলিশ জানায়, মেয়েটির খোঁজ চলছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement