ভর্তি পরীক্ষায় অ্যাডমিট কার্ড না দেওয়ার বিতর্কে জড়াল কেপিসি কলেজ

মেডিক্যালের আসন নিয়ে সদ্য অনিশ্চয়তা কেটেছে রাজ্যে। কাউন্সেলিংও শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে ভর্তিকে ঘিরে বিতর্কে জড়াল কলকাতার এক বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ। সেখানে ভর্তির জন্য কলেজের তরফে পৃথক প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসতে হয়। সে জন্য নির্দিষ্ট ফি-ও আছে। অভিযোগ, টাকা জমা দেওয়ার পরেও এক ছাত্রীকে সেই পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেওয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে এমসিআই-এর দ্বারস্থ হয়েছেন ওই ছাত্রী। তদন্ত হবে বলে জানিয়েছে এমসিআই-ও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৪ ০৩:১১
Share:

মেডিক্যালের আসন নিয়ে সদ্য অনিশ্চয়তা কেটেছে রাজ্যে। কাউন্সেলিংও শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে ভর্তিকে ঘিরে বিতর্কে জড়াল কলকাতার এক বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ। সেখানে ভর্তির জন্য কলেজের তরফে পৃথক প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসতে হয়। সে জন্য নির্দিষ্ট ফি-ও আছে। অভিযোগ, টাকা জমা দেওয়ার পরেও এক ছাত্রীকে সেই পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেওয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে এমসিআই-এর দ্বারস্থ হয়েছেন ওই ছাত্রী। তদন্ত হবে বলে জানিয়েছে এমসিআই-ও।

Advertisement

কেপিসি মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ সব অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, সংশ্লিষ্ট ছাত্রীই সময় মতো তাঁর অ্যাডমিট কার্ড নেননি। তাই তাঁর পরীক্ষায় বসার সুযোগ হয়নি। এই দায় কোনও ভাবেই কলেজের পক্ষে নেওয়া সম্ভব নয়।

রয়িনা সাহা নামে ওই ছাত্রীর বাবা, চিকিৎসক শতদল সাহা জানান, ওই কলেজের নিয়ম মেনে তাঁরা আবেদনপত্র এবং পরীক্ষার ফি বাবদ ৬ হাজার টাকার ব্যাঙ্ক ড্রাফট স্পিড পোস্টে পাঠিয়েছিলেন। ৬ জুলাই কেপিসি মেডিক্যাল কলেজের অ্যাডমিশন টেস্ট ছিল। ৩ তারিখ পর্যন্ত অ্যাডমিট কার্ড না পেয়ে রয়িনা কলেজে যোগাযোগ করলে তাঁকে ৫ তারিখ আসতে বলা হয়। অভিযোগ, ওই দিন কলেজে যাওয়ার পরে জানানো হয়, ফি জমা পড়েনি বলে অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া যাবে না। শতদলবাবু বলেন, “আমার মেয়ে বার বার জানায় নিয়ম মেনেই ১৩ জুন সব কিছু যথাসময়ে পাঠানো হয়েছে। তাতে কেউ কান দেননি।” সে দিনই কলেজের প্রতিষ্ঠাতা কালীপ্রদীপ চৌধুরীকে ই-মেলে পুরো ঘটনাটি জানান তিনি। সেখান থেকেও উত্তর আসেনি।

Advertisement

ইতিমধ্যেই ৬ জুলাই, রবিবার অ্যাডমিশন টেস্ট হয়ে যায়। সোমবার ব্যাঙ্কে গিয়ে শতদলবাবু জানতে পারেন, ওই কলেজের তরফে ব্যাঙ্ক ড্রাফটটি ২১ জুন ভাঙানো হয়েছে। এর পরেই গোটা বিষয়টি জানিয়ে এমসিআই-এর দ্বারস্থ হন তিনি। তাঁর বক্তব্য, “টাকা নিয়েও এক জন পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেওয়া হল না। এটা কি শুধুই প্রশাসনিক গাফিলতি? যদি তা-ই হয়, তা হলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। নাকি এর পিছনে অন্য কারণ আছে, তাই কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে না?”

কলেজের সিইও জয়দীপ মিত্র বলেন, “নিয়ম মতো অ্যাডমিট কার্ড পরীক্ষার্থীকে এসে নিতে হয়। ওই মেয়েটি আসেইনি। ১৭০০ আবেদনকারীর মধ্যে বেশিরভাগই অ্যাডমিট কার্ড সংগ্রহ করেছে। পরীক্ষার দিনও অনেকে অ্যাডমিট কার্ড সংগ্রহ করেছে। আমাদের সঙ্গে তো মেয়েটির কোনও শত্রুতা নেই, তা হলে কেন ওকে পরীক্ষায় বসতে দেব না?”

কলেজের প্রতিষ্ঠাতা কালীপ্রদীপবাবু আমেরিকা প্রবাসী। কেন কলেজের স্থানীয় কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ না করে তাঁকে ই-মেল করা হল, সেই প্রশ্নও তুলেছেন কর্তৃপক্ষ। তাঁদের বক্তব্য, কালীপ্রদীপবাবুও তাঁদের কাছে ই-মেলটি ফরওয়ার্ড করেছিলেন। সুতরাং অভিযোগ থাকলে ওই ছাত্রী তাঁদের কাছে আসতে পারতেন। এর উত্তরে শতদলবাবু বলেন, “৫ তারিখ মেডিক্যাল ডিরেক্টরকে ফোন করলেও উনি ধরেননি। সেই রেকর্ড আমার কাছে রয়েছে।” তিনি পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন, পরীক্ষার তারিখ তো ছিল ৬ তারিখ। সিইও এখন যা বলছেন, ৫ তারিখ ই-মেলে বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরে কেন উত্তর দেওয়া হল না? কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, “ওটাই আমাদের তরফে একমাত্র ভুল হয়েছে। আমাদের উত্তর দেওয়া উচিত ছিল।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন