মাটি ছেড়ে সবে আকাশে পাড়ি দিয়েছিল একটি বিমান। আর একটি বিমান আকাশ থেকে নেমে আসছিল মাটিতে। হঠাৎই বিপজ্জনক ভাবে কাছাকাছি চলে আসে তারা। দু’টি বিমান তখন পরস্পরের থেকে মাত্র ৭০০ ফুট দূরে! প্রায় নাক বরাবর। তবে শেষ মুহূর্তে বিপদসঙ্কেত পেয়ে দু’টি বিমানের দুই পাইলটই দ্রুত অবস্থান বদলে নেন। তাই কোনও বিপর্যয় ঘটেনি।
শুক্রবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে বাগডোগরার আকাশে। বিপদ না-ঘটলেও কী ভাবে দু’টি বিমান এত কাছাকাছি পৌঁছে গেল, সেই প্রশ্ন উঠছেই। এই বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বিমান চলাচলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন বা ডিজিসিএ-র কাছে। কাদের গাফিলতিতে বিমান দু’টি ভয়াবহ বিপদের মুখোমুখি হতে যাচ্ছিল, তা জানার জন্য তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে তারা।
ঠিক কী ঘটেছিল?
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, এ দিন বেলা ১২টা ২২ মিনিট নাগাদ ইন্ডিগোর দিল্লিগামী বিমানটি ১৩১ জন যাত্রী নিয়ে বাগডোগরা থেকে ওড়ে। মাটি ছাড়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই ৩০ হাজার ফুট উচ্চতায় পৌঁছে যাওয়ার কথা ছিল তার। তার কিছু পরেই দিল্লি থেকে আসা এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমানের বাগডোগরায় নামার কথা ছিল। ইন্ডিগোর বিমানটি ওড়ার কিছু পরেই পাইলট বিপদসঙ্কেত পান। বিপদসঙ্কেত পান এয়ার ইন্ডিয়ার পাইলটও। সেই সময় দু’টি বিমান পরস্পরের থেকে মাত্র ৭০০ ফুট দূরে ছিল। বিপদসঙ্কেত পেয়েই ইন্ডিগোর পাইলট তাঁর বিমানটিকে নির্ধারিত উচ্চতার থেকে নীচে নামিয়ে আনেন। আর এয়ার ইন্ডিয়ার পাইলট নিজের বিমানের মুখ ঘুরিয়ে দেন ডান দিকে। পরে নিরাপদেই বিমানবন্দরে অবতরণ করে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটি। উড়ান অব্যাহত রাখে ইন্ডিগোর বিমান।
বাগডোগরা বিমানবন্দরে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল বা এটিসি-র দায়িত্বে আছে বায়ুসেনা। তারা এই ঘটনা নিয়ে সরকারি ভাবে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি। মন্তব্য করতে চাননি বাগডোগরা বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষও। তবে বায়ুসেনার একটি সূত্র জানাচ্ছে, তাদের কাছে এমন কোনও বিপদসঙ্কেত আসেনি। দুই পাইলটের কেউই এই বিষয়ে তাদের কাছে কোনও অভিযোগ জানাননি।
বিমানবন্দরের খবর, ইন্ডিগোর বিমানটি বেলা সওয়া ২টো নাগাদ দিল্লি পৌঁছয়। তার পরে ওই বিমানের পাইলট এই ঘটনা নিয়ে ডিজিসিএ-র কাছে অভিযোগ জানান। ঘটনার গুরুত্ব বুঝতে পেরে ডিজিসিএ-কর্তৃপক্ষ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। ডিজিসিএ-র খবর, ওই দু’টি বিমানের ব্ল্যাকবক্সে থাকা ভয়েস ও ডেটা রেকর্ডারের তথ্য জোগাড় করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঠিক কী ঘটেছিল, ওই তথ্যের ভিত্তিতেই তা খতিয়ে দেখা হবে।
৭ জুলাই স্পেনের এল প্র্যাট বিমানবন্দরেও একই ধরনের বিপদের মুখে পড়েছিল দু’টি বিমান। রাশিয়ার একটি বিমান নামছিল। শেষ মুহূর্তে তার পাইলট দেখতে পান, অন্য একটি বিমান উড়তে প্রস্তুত। বিপত্তি এড়াতে তিনি ‘গো-অ্যারাউন্ড’ করেন অর্থাৎ মুখ ঘুরিয়ে ফের উড়ে যান। তার পরে অবতরণ করেন নিরাপদেই।
বকেয়া টাকা আদায়ে দিল্লিকে চিঠি সুব্রতর
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা
রাজ্যে গ্রামোন্নয়নের কাজে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বকেয়া টাকা আদায়ের জন্য আগামী সপ্তাহে দিল্লির সরকারকে চিঠি দেবেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। গ্রামে ১০০দিনের কাজের সুনিশ্চিত প্রকল্প থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনা-সহ বিভিন্ন প্রকল্পের কাজের জন্য কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের পাওনা হয়েছে প্রায় ৮কোটি টাকা। সেই টাকা অবিলম্বে রাজ্যকে দেওয়ার জন্য দিল্লির সরকারকে তিনি চিঠি দেবেন বলে শুক্রবার সুব্রতবাবু জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, “আমরা কেন্দ্রকে বলব, ভিক্ষা নয়, আমাদের প্রাপ্যটা দ্রুত মেটানোর ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ, টাকার অভাবে অধিকাংশ কাজই মাঝপথে থমকে রয়েছে।” পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বাজেটেরও কঠোর সমালোচনা করেছেন তিনি। কেন্দ্রীয় বাজেট তাঁকে হতাশ করেছে জানিয়ে এ দিন সুব্রতবাবু বলেন, “আমরা তিন বছরে প্রায় ১২ হাজার কিলোমিটার রাস্তা যেখানে করেছি, সেখানে বাজেটে সারা দেশে মাত্র ৮হাজার কিলোমিটার রাস্তা তৈরির কথা বলা হয়েছে। গ্রামীণ দরিদ্রদের জন্য ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে বরাদ্দ গতবারের ৩৩ হাজার কোটি টাকার জায়গায় ৩৪ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে।” মাত্র ১ হাজার কোটি টাকা বাড়িয়ে সারা দেশে এই প্রকল্পের কাজ কী ভাবে সফল হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সুব্রতবাবুর তির্যক মন্তব্য, “এ বারের বাজেট দেখে মনে হচ্ছে, এটা সারা দেশের নয়, আমদাবাদ পুরসভার বাজেট!”
চাঙ্গি গোষ্ঠীর কর্তাদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার নবান্নে। ছবি: সুদীপ আচার্য।