মাটিতীর্থে আড়াই হাজার বাস, দুর্ভোগের আশঙ্কা

সরকারি কর্মীদের দিয়ে লোক জুটিয়ে কেন্দ্রের টাকায় উৎসব করা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে আগেই। এ বার বর্ধমানে সেই ‘মাটিতীর্থ কৃষিকথা’ উৎসবে নানা জেলা থেকে বাস আনা নিয়েও চাপানউতোর তৈরি হল। আজ, সোমবার ওই অনুষ্ঠানে লোক নিয়ে যেতে দক্ষিণবঙ্গের নানা জেলায় বাস ভাড়া করেছে প্রশাসন। বর্ধমান জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রায় আড়াই হাজার বাস রাখার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে তাদের।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:৩০
Share:

মাটি উৎসবে আসা নানা জেলার বাস দাঁড়ানোর জায়গা। ছবি: উদিত সিংহ

সরকারি কর্মীদের দিয়ে লোক জুটিয়ে কেন্দ্রের টাকায় উৎসব করা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে আগেই। এ বার বর্ধমানে সেই ‘মাটিতীর্থ কৃষিকথা’ উৎসবে নানা জেলা থেকে বাস আনা নিয়েও চাপানউতোর তৈরি হল।

Advertisement

আজ, সোমবার ওই অনুষ্ঠানে লোক নিয়ে যেতে দক্ষিণবঙ্গের নানা জেলায় বাস ভাড়া করেছে প্রশাসন। বর্ধমান জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রায় আড়াই হাজার বাস রাখার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে তাদের। আর তা নিয়েই সরব হয়েছে বিরোধীরা। সরকারি অনুষ্ঠানের জন্য এক দিনে এত বাস নেওয়া নজিরবিহীন বলে দাবি করে সিপিএমের বর্ধমান জেলা সম্পাদক অমল হালদার বলেন, “আমাদের আমলেও বহু সভা-সমাবেশ হয়েছে। কিন্তু সীমিত সংখ্যক বাস নেওয়া হত। এক সঙ্গে এত বাস তুলে নেওয়ায় চূড়ান্ত দুর্ভোগ হবে। এ তো উৎসবের নামে অপরাধ!”

কোন জেলার বাস কোন রুট দিয়ে গিয়ে কোথায় দাঁড়াবে, সেই ছক কষতে গত কয়েক দিন ধরেই হিমশিম খাচ্ছেন বর্ধমান জেলা প্রশাসনের কর্তারা। চারটি জায়গায় মোট ছ’একর জমিতে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা হয়েছে। তার মধ্যে আবার তিন একর কৃষি জমি। এলাকাবাসীর দাবি, এই জমিতে এ বার জলের অভাবে বোরো চাষ হয়নি। চাষিদের অভিযোগ, জমি ব্যবহারের জন্য অনুমতিও নেওয়া হয়নি। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের বক্তব্যে আবার দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। এক কর্তার দাবি, “পঞ্চায়েত নো-অবজেকশন সার্টিফিকেট নিয়েছে।” আর এক কর্তার বক্তব্য, “টাকা দিয়ে মাঠ নেওয়া হয়েছে।”

Advertisement

চাষিদের আরও দাবি, আশপাশের জমিতে সর্ষে, তিল চাষ হচ্ছে। এত লোকের যাতায়াতে তার ক্ষতি হতে পারে। সিপিএমের অমলবাবুও বলেন, “এ ভাবে জমিতে বাস রাখার ফলে চাষিরা পরে সমস্যায় পড়বেন।”

কাজের দিনে এত বাস নিয়ে নেওয়ায় বাসমালিকদের মধ্যেও ক্ষোভ ছড়িয়েছে। বর্ধমানের এক জন যেমন বলেন, “টাকা কবে পাব ঠিক নেই। কিন্তু সরকারি অনুষ্ঠান, না বলারও উপায় নেই।” এর ফলে জেলায়-জেলায় ভোগান্তির আশঙ্কা করছেন তাঁরাও। বীরভূমের দু’টি বাসমালিক সংগঠন জানায়, রবিবার বিকেল থেকেই বহু বাস নিয়ে নেওয়া হয়েছে। বাঁকুড়ার এক বাসমালিক বলেন, “অনেক বাস নেওয়া হচ্ছে। জেলা জুড়েই তার প্রভাব পড়বে।”

প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, পরিবহণ ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখতে জেলাগুলিতে পুলিশের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। তবে তা আদৌ ফলপ্রসূ হবে কি না, সে জবাব মেলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন