পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন এলাকায় ইউনিট পিছু গড়ে তিন পয়সা করে মাসুল কমছে। আগামী এপ্রিল মাস থেকে এই নয়া হার কার্যকর হবে।
দিন কয়েক আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বণ্টন সংস্থা এলাকায় বিদ্যুৎ মাসুল কমানোর কথা ঘোষণা করেন। বিদ্যুৎ দফতর সূত্রের খবর, সে কথা মাথায় রেখেই রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা তাদের মাসুলের হার সংশোধনের প্রস্তাব পেশ করেছে বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের কাছে। যা কার্যকর হলে আগামী অর্থবর্ষ (২০১৪-’১৫) থেকে বণ্টন এলাকার গ্রাহকদের বিদ্যুৎ বিল কিছুটা হলেও কমবে বলে দাবি করা হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, নানা উপায়ে খরচ কমিয়ে প্রায় ১,৫০০ কোটি টাকার মতো সাশ্রয় করা হচ্ছে। ওই টাকাই গ্রাহকদের মাসুল কমানোর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে। বণ্টন সংস্থা সূত্রের খবর, সব ধরনের গ্রাহকদের জন্য মাসুল গড়ে তিন পয়সা কমলেও যাঁরা খুবই কম (তিন মাসে ১০২ ইউনিট) বিদ্যুৎ খরচ করেন, তাঁদের ইউনিট পিছু প্রায় ১৮ পয়সার মতো মাসুল কমতে পারে। বিভিন্ন শ্রমিক কলোনিগুলিতেও ইউনিট পিছু গড়ে পাঁচ পয়সা করে মাসুল কমানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে রাজ্য বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশন।
দফতর সূত্রের খবর, মাসুল কতটা কমানো যেতে পারে, সে ব্যাপারে চূড়ান্ত প্রস্তাব কমিশনের কাছে পেশ করার আগে রাজ্যের বিদ্যুৎ কর্তারা বারবার বৈঠকে বসেছেন। কয়েক দিন ধরে অনেক অঙ্ক কষে গড় মাসুল তিন পয়সা কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও এই সিদ্ধান্ত বণ্টন সংস্থার স্বাস্থ্যহানি করবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বিদ্যুৎ কর্তাদের একাংশের মধ্যেই।
তাঁদের বক্তব্য, বিল আদায় অনেকটাই কমে গিয়েছে বলে বণ্টন সংস্থার আর্থিক স্বাস্থ্য এমনিতেই খারাপ। তার উপরে এই মাসুল কমানোর সিদ্ধান্তে সংস্থার কোষাগারের হাল আরও খারাপ হতে পারে। সে ক্ষেত্রে বণ্টন সংস্থা যাদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনে গ্রাহকদের সরবরাহ করে, তাদের টাকা মেটাতে সমস্যা হতে পারে। অন্য এক কর্তা অবশ্য জানান, খরচ কমিয়ে যদি গ্রাহকের বোঝা লাঘব করা সম্ভব হয়, তবে তা কেন করা হবে না?
বণ্টন এলাকায় মাসুল কমলেও সিইএসসি এলাকার গ্রাহকেরা এই ধরনের কোনও সুবিধা পাবেন না। বরং সিইএসসি এলাকায় আগামী অর্থবর্ষে ইউনিট পিছু গড়ে এক টাকার কিছু বেশি মাসুল বাড়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ফলে আগামী দিনে সিইএসসি-র গ্রাহকদের বিদ্যুৎ বিল এক ধাক্কায় অনেকটাই বেড়ে যাবে।