এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের পরে এ বার সিবিআই।
ময়দানের চারটি ক্লাবকে নোটিস পাঠাল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। এই চার ক্লাবেই টাকা ঢেলেছিলেন সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেন। সারদা কেলেঙ্কারির ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের কর্তা দেবব্রত ওরফে নীতু সরকারকে এর আগে গ্রেফতারও করেছে সিবিআই। কিন্তু সে অর্থে ক্লাবগুলির হিসেবপত্র নিয়ে এখনও কাউকে জেরা করেনি তারা।
ইডি-র তরফে ইতিমধ্যেই চারটি ক্লাব ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, ভবানীপুর এবং কালীঘাট-এর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সিল করে দেওয়া হয়েছে। ফলে খেলোয়াড়দের টাকা মেটানো যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন ক্লাব-কর্তারা। অ্যাকাউন্ট সচল করার জন্য ইডি-র কাছে আবেদন করেছে ইস্টবেঙ্গল আর মোহনবাগান। বাকি দুই ক্লাব তা করেনি। বিভিন্ন সময়ে ইডি অফিসারেরা এই চার ক্লাব-কর্তাদের ডেকে পাঠিয়ে জেরা করেছেন। এ বার ওই একই কাজ করতে চায় সিবিআই।
সূত্রের খবর, মঙ্গলবারই সল্টলেকে সিবিআই অফিস থেকে চারটি ক্লাবে নোটিস পাঠানো হয়েছে। বলা হয়েছে, সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে কী ধরনের চুক্তি হয়েছিল সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নিয়ে সিবিআইয়ের সঙ্গে দেখা করতে। কবে দেখা করতে হবে, তা নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি। জানতে চাওয়া হয়েছে সারদার সঙ্গে যে টাকার লেনদেন হয়েছে তা চেক মারফত হয়েছে কি না। সিবিআইয়ের ধারণা, জনসাধারণের কাছ থেকে তোলা টাকার কিছু অংশ এই ক্লাবগুলিতেও ঢেলেছিলেন সুদীপ্ত। তাই, বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের তদন্তে নেমে এই ক্লাবগুলিকেও আতসকাচের তলায় আনা হচ্ছে।
ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সচিব কল্যাণ মজুমদার অবশ্য দাবি করছেন, সারদার সঙ্গে তাঁদের যা লেনদেন হয়েছে সমস্তই চেক মারফত। জানা গিয়েছে, ২০১২-১৩ সালে সারদার কাছ থেকে কো-স্পনসর হিসেবে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা পায় ইস্টবেঙ্গল। কল্যাণবাবুর কথায়, “ওই বিষয়টি নিয়ে আমাদের আলাদা ফাইল তৈরি করা আছে। যখন যে চাইছে সেই তথ্য-নথি তাদের হাতে তুলে দিচ্ছি।” তবে এ দিন রাত পর্যন্ত সিবিআইয়ের কোনও চিঠি তাঁরা পাননি বলে জানিয়েছেন কল্যাণবাবু।
মোহনবাগানের সচিব অঞ্জন মিত্র সিবিআই-এর নোটিস পেয়েছেন। জানা গিয়েছে, ২০১০-১১, ২০১১-১২ এবং ২০১২-১৩ সালের জন্য কো-স্পনসর হিসেবে দু’কোটির কিছু কম টাকা এসেছিল সারদার কাছ থেকে। তার মধ্যে ২০১০-১১ সালে সারদার লোগো ব্যবহার করেছিল ক্লাব। অঞ্জনবাবু বলেন, “চুক্তি সংক্রান্ত যাবতীয় নথিপত্র আমাদের তৈরি আছে। এর আগে ইডি-কে দিয়েছি। সিবিআই-কেও দিয়ে দেব।” ভবানীপুর ক্লাবও এ দিন সিবিআইয়ের নোটিস পায়নি বলে জানিয়েছে। ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ বিষ্ণু চক্রবর্তী জানান, দুর্গাপুজো উপলক্ষে ষষ্ঠী থেকে ক্লাব বন্ধ। এখনও সিবিআইয়ের চিঠি তাঁদের কাছে আসেনি। এলে নথিপত্র দেওয়া হবে। কালীঘাট ক্লাবের কোনও কর্তার সঙ্গে এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি।