রায়দিঘিতে চার জনকে খুনের ঘটনায় সিবিআই-কে দিয়ে তদন্তের আবেদনের শুনানি শুরু হল কলকাতা হাইকোর্টে। এই মামলায় ধৃত সিপিএম নেতা বিমল ভাণ্ডারীর স্ত্রী যমুনাদেবী হাইকোর্টে সিবিআই তদন্তের আবেদন জানান। সোমবার মামলাটি ওঠে বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের এজলাসে। এর মধ্যেই আজ, মঙ্গলবার রায়দিঘি যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
চার খুনের ওই মামলার এফআইআরে প্রাক্তন মন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম আছে। কান্তিবাবুর দাবি, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা মেটাতেই তাঁর এবং বিমলবাবুর নাম এফআইআরে ঢোকানো হয়েছে। কান্তিবাবু জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি আগাম জামিনের রাস্তায় যাবেন না। সিপিএম সূত্রের খবর, কান্তিবাবুকে গ্রেফতার করা হলে রাজ্য জুড়ে রাস্তায় নামবেন দলের কর্মী-সমর্থকেরা।
১৪ জুন রাতে একটি সালিশি সভা থেকে ফেরার পথে আতিয়ার মোল্লা, হাসান গাজি ও হাফিজুল গাজি নামে তিন তৃণমূল-কর্মী এবং ছকু মোল্লা নামের তাঁদের এক সঙ্গী খুন হন। তৃণমূলকর্মীরা অভিযোগ করেন, খুনিরা সিপিএম-কর্মী। পরের দিন অকুস্থলে যান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক মুকুল রায়, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, শোভন চট্টোপাধ্যায়। সিপিএম-ও বিমলবাবুর স্ত্রীকে নিয়ে সিবিআই তদন্তের দাবিতে আইনি লড়াইয়ে নামে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, আজ রায়দিঘিতে এক সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন মমতা। তার আগে তিনি নিহতদের বাড়িতে যেতে পারেন। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “বাড়ি যেতে না-পারলে অনুষ্ঠানের মঞ্চেও নিহতদের পরিজনদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী।”
হাইকোর্টে আবেদনকারিণীর আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য এ দিন বলেন, পেশায় শিক্ষক বিমল ভাণ্ডারী চোখে দেখতে পান না। তিনি খুবই অসুস্থ। পুলিশ একটি সাদা কাগজে তাঁর সই করিয়ে নিয়েছে। পরে দেখা যায়, ওই কাগজে লেখা আছে, তাঁর বাড়ি থেকে বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া গিয়েছে। বিকাশবাবুর বক্তব্য, এই ঘটনায় শেখ ওয়াজেদ খামারু নামে মূল অভিযুক্তকে পুলিশ ধরছে না। তাই তদন্তও এগোচ্ছে না। বিচারপতির নির্দেশে বিকাশবাবু একটি অতিরিক্ত হলফনামা জমা দেন।
পুলিশি সূত্রের খবর, আতিয়ারের ভাই আয়ুব মোল্লা যে-এফআইআর করেন, তাতে খামারুর নাম ছিল না। তবে ওয়াজেদ ফেরার। তার খোঁজ চলছে। হাসান ও হাফিজুলের বিরুদ্ধে ডাকাতি, নারী পাচার ও মাদক বিক্রির একাধিক অভিযোগ ছিল বলে পুলিশ জানায়। চার খুনের ঘটনায় আরও তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের নাম আনার মোল্লা, মহম্মদ গোলাম রসুল মোল্লা ও সইদুল্লা মোল্লা।