খোদ মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ এক সংস্থাকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার জন্য লেক মল লিজের ক্ষেত্রে বিশেষ পদ্ধতি নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। বিষয়টি পরিষ্কার করার জন্য এ বার শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি তুললেন বাম কাউন্সিলরেরা। বুধবার পুরসভার মাসিক অধিবেশনে ওই দাবি তোলেন সিপিএম কাউন্সিলর চয়ন ভট্টাচার্য।
সম্প্রতি লেক মলের ব্যাপারে ডেভেলপার ভেঙ্কটেশ ফাউন্ডেশনের সঙ্গে পুরসভার লিজ চুক্তি হয়েছে। অভিযোগ, ৬০ বছরের লিজ চুক্তি দু’ভাগে (৩০ বছর করে) ভেঙে দেওয়ায় রেজিস্ট্রির জন্য স্ট্যাম্প ডিউটি বাবদ রাজ্য সরকারের প্রায় ২৪ কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে। পুর-প্রশাসন কেন ওই সংস্থাকে এমন সুবিধা দিয়েছে, তা জনসমক্ষে প্রকাশ করার জন্য এ দিন অধিবেশনে দাবি তোলেন চয়নবাবু। তবে শ্বেতপত্র প্রকাশের ব্যাপারে বাম দাবিতে কর্ণপাত করেননি মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী-ঘনিষ্ঠ ওই সংস্থাকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। কংগ্রেস, বিজেপি এবং বাম দলের পক্ষে বিক্ষোভ আন্দোলন হয়েছে পুরভবনের সামনে। কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল বা সিএজি-র রেসিডেন্ট অডিট বিভাগও ২০ দিন আগে লেক মল সংক্রান্ত ফাইলপত্র চেয়ে পাঠিয়েছে পুরসভার কাছে। নথিপত্র পাঠানোর ব্যাপারে কতটা কী হল, সেই প্রশ্নও তোলেন চয়নবাবু। জবাবে মেয়র শোভনবাবু বলেন, “রেসিডেন্ট অডিট বিভাগ ফাইলপত্র চেয়েছে। তবে এখনও তা দেওয়া হয়নি।”
চয়নবাবুর অভিযোগ, ভেঙ্কটেশ ফাউন্ডেশনের প্রস্তাব অনুসারে চুক্তিটিকে দু’ভাগে ভাগ করেছে পুরসভা। প্রথম ৩০ বছর ভেঙ্কটেশ ফাউন্ডেশন নিজেরাই লেক মল লিজ নিচ্ছে। বাকি ৩০ বছরের জন্য ওই ফাউন্ডেশন তাদেরই আত্মীয় সংস্থা (বিএম লেজারস এলএলপি)-কে মল লিজ দেওয়ার যে-আর্জি জানিয়েছিল, তা-ও মেনে নিয়েছে তৃণমূল শাসিত পুর বোর্ড। তবে রাজ্য সরকারের অর্থ দফতর প্রথম ৩০ বছরের চুক্তি রেজিস্ট্রেশনের অনুমতি দিলেও পরের চুক্তির রেজিস্ট্রেশন আটকে রেখেছে। কিন্তু সেটাও যে-কোনও দিন ছাড়পত্র পেয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন অর্থ দফতরের একাধিক কর্তা। যদিও পুরসভার অর্থ দফতর স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিল, ওই চুক্তি ভাঙলে সরকারের বেশ কয়েক কোটি টাকা আয় কমে যাবে। শোভনবাবুরা সেই সতর্কবাণী উপেক্ষা করেছেন বলে বামেদের অভিযোগ। জবাবে বামেদের সবজান্তা বলে কটাক্ষ করেন মেয়র।