শিক্ষামেলায় টিএমসিপির বৃত্তি, টাকা কে দিল প্রশ্ন সংগঠনেই

নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তিন দিনের শিক্ষামেলায় শাসক দলের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি) দেদার টাকা তুলছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। রবিবার, মেলার শেষ দিনে সেই টিএমসিপি-ই বিভিন্ন জেলার দু’হাজার পড়ুয়াকে ৫০০ টাকা করে এককালীন বৃত্তি দিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৪ ০৩:৪৭
Share:

নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তিন দিনের শিক্ষামেলায় শাসক দলের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি) দেদার টাকা তুলছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। রবিবার, মেলার শেষ দিনে সেই টিএমসিপি-ই বিভিন্ন জেলার দু’হাজার পড়ুয়াকে ৫০০ টাকা করে এককালীন বৃত্তি দিল। প্রশ্ন উঠেছে, কোথা থেকে এল ওই টাকা? এমনকী টিএমসিপি-র অন্দরেও প্রশ্ন জোরালো হয়েছে, কে দিল টাকা?

Advertisement

টিএমসিপি সূত্রের খবর, প্রশ্নটা শুধু বৃত্তির টাকা নিয়েই নয়। খান দশেক বিয়েবাড়ি ভাড়া করে জেলা থেকে এই মেলায় আসা ছাত্রছাত্রীদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আবার কলকাতার পাশের জেলা থেকে বাস, মিনি ট্রাক ভাড়া করে আনা হয়েছিল বেশ কিছু পড়ুয়াকে। সেই সব ভাড়ার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে তিন দিনের খাওয়াদাওয়ার খরচও। এই বিপুল খরচ টিএমসিপি কী ভাবে মেটাল, কে তাদের এত টাকা দিল প্রশ্ন উঠেছে ওই ছাত্র সংগঠনের মধ্যেই।

ছাত্র সংগঠনের টাকা তোলার রাস্তা খোলা রাখতেই স্নাতকে ভর্তির কেন্দ্রীয় অনলাইন ব্যবস্থাকে নির্বাসন দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। তার পরেই অভিযোগ ওঠে, শিক্ষামেলায় যে-সব সংস্থা স্টল দিয়েছিল, তাদের অধিকাংশের কাছ থেকেই মোটা টাকা নেওয়া হয়েছে। বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং, ম্যানেজমেন্ট, মেডিক্যাল ইত্যাদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান-কর্তৃপক্ষের একটি সংগঠনের তরফে ৫০ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে বলে ওই সংগঠন সূত্রের খবর। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ দিয়েছে সাড়ে ১১ লক্ষ টাকা। সব মিলিয়ে প্রায় ৭৫ লক্ষ টাকা আয় হয়েছে বলে টিএমসিপি সূত্রের খবর। সেই টাকা কোথায় গেল, তার হিসেব চায় টিএমসিপি-র একটি অংশ। ওই টাকা কী ভাবে ব্যয় করা হবে, টিএমসিপি নেতৃত্বের তরফে সেই বিষয়ে এখনও কিছু বলা হয়নি।

Advertisement

শিক্ষামেলার আয়োজক ছিল টিএমসিপি পরিচালিত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ। কিন্তু ওই ছাত্র সংসদের বকলমে টিএমসিপি-র রাজ্য নেতৃত্বই পুরো মেলা ও অনুষ্ঠান পরিচালনা করেছেন। টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি শঙ্কু পণ্ডাকে তিন দিনই সবুজ টি-শার্ট পরে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গিয়েছে মেলায়। রবিবারের সমাপ্তি অনুষ্ঠানেও যোগ দিয়েছিলেন তিনি। শঙ্কু অবশ্য মেলার খরচখরচা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, “এই অনুষ্ঠান কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের। আমি এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়ে এসেছি।”

সংগঠনের সহ-সম্পাদক তমোঘ্ন ঘোষও একই ভাবে সব বিতর্কিত প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে গিয়েছেন। যদিও সমাপ্তি অনুষ্ঠানে এই শিক্ষামেলার আয়োজন করা এবং ভাতা দেওয়ার জন্য শঙ্কু ও তমোঘ্নকেই ধন্যবাদ জানান পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র।

অনুষ্ঠানের মূল উদ্যোক্তা হিসেবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের নেতা তথা শিক্ষামেলার সভাপতি সৌরভ অধিকারীর কথা উল্লেখ করেছেন শঙ্কু ও তমোঘ্ন। মেলায় স্টল দেওয়ার জন্য সৌরভের নামেই চিঠি পাঠানো হয়েছিল বিভিন্ন সংস্থার কাছে। টাকাপয়সার ব্যাপারে সৌরভ অবশ্য দায় এড়িয়ে গিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাধারণ ছাত্র। কোনও সংসদের সদস্য বা নেতা নই। আমি টাকা বা স্কলারশিপের বিষয়ে কিছু জানি না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন