শুভাপ্রসন্নর স্ত্রীকেও ডেকে জেরা ইডি-র

আগামী সপ্তাহের গোড়ায় চিত্রশিল্পী শুভাপ্রসন্ন ভট্টাচার্যকে ফের ডাকতে চলেছে ইডি। তার আগে, শুক্রবার শিল্পীর স্ত্রী শিপ্রাদেবীকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করল তারা। পাশাপাশি, কলকাতার এক ব্যবসায়ীকেও সারদা কাণ্ডে তলব করা হচ্ছে বলে ইডি সূত্রের খবর। মিডিয়া ব্যবসায় সারদার বিপর্যয়ের কারণ খুঁজতে গিয়ে দু’টি চুক্তির ক্ষেত্রে বিশেষ নজর দিচ্ছে সিবিআই ও ইডি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৪ ০৩:২৬
Share:

ইডি-র দফতরে শুভাপ্রসন্নর স্ত্রী শিপ্রা ভট্টাচার্য। শুক্রবার শৌভিক দে-র তোলা ছবি।

আগামী সপ্তাহের গোড়ায় চিত্রশিল্পী শুভাপ্রসন্ন ভট্টাচার্যকে ফের ডাকতে চলেছে ইডি। তার আগে, শুক্রবার শিল্পীর স্ত্রী শিপ্রাদেবীকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করল তারা। পাশাপাশি, কলকাতার এক ব্যবসায়ীকেও সারদা কাণ্ডে তলব করা হচ্ছে বলে ইডি সূত্রের খবর।

Advertisement

মিডিয়া ব্যবসায় সারদার বিপর্যয়ের কারণ খুঁজতে গিয়ে দু’টি চুক্তির ক্ষেত্রে বিশেষ নজর দিচ্ছে সিবিআই ও ইডি। একটি হল, চালু না হওয়া টিভি চ্যানেল, অন্যটি একটি দৈনিক পত্রিকা। সেই দুই সংস্থার সঙ্গে চুক্তি নিয়ে সুদীপ্ত সেন-সহ সারদার একাধিক কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কিছু ধোঁয়াশাও তৈরি হয়েছে। সেই ধোঁয়াশা দূর করতেই এ দিন শিপ্রাদেবীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলে ইডি সূত্রে জানানো হয়েছে।

ইডি সূত্রের খবর, ২০১২ সালের গোড়ায় টিভি চ্যানেলটি হস্তান্তরের জন্য চুক্তি হয়। চ্যানেলটির মালিকানা ছিল দেবকৃপা ব্যাপার লিমিটেড নামের একটি সংস্থার। ওই সংস্থার অন্যতম কর্তা ছিলেন তৃণমূল ঘনিষ্ঠ শিল্পী শুভাপ্রসন্ন। ওই সংস্থারই অন্যতম শেয়ারহোল্ডার ছিলেন শিপ্রাদেবী। জানা গিয়েছে, কয়েক কোটি টাকায় সুদীপ্ত ওই চ্যানেলটি কিনে নেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসে ইডি-র তদন্তকারীরা ওই চুক্তি নিয়ে শুভাপ্রসন্নকে এক দফা জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন। এ বার চুক্তি সংক্রান্ত বিষয়ে তাঁর স্ত্রীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হল।

Advertisement

শুক্রবার সকাল ১১টা নাগাদ সল্টলেকে ইডি-র দফতরে যান শিপ্রাদেবী। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ইডির দফতর থেকে বেরিয়ে তিনি অবশ্য সংবাদমাধ্যমের কোনও প্রশ্নের জবাব দেননি। পরে বাড়ির ফোনও বেজে গিয়েছে।

২০১২ সালে সারদার সঙ্গে একটি দৈনিক পত্রিকার চুক্তি হয়েছিল। ২০১৩ সালে সারদা বিপর্যয়ের পরে গ্রেফতার হন সুদীপ্ত। পুলিশ, ইডি ও সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের জেরার মুখে সারদা কর্তা অভিযোগ করেছিলেন, ওই দৈনিকটি কেনার জন্য তিনি কয়েক কোটি টাকা দিয়েছিলেন। পরে সেই চুক্তি বাতিল হয়ে গেলেও তাঁকে টাকা ফেরত দেওয়া হয়নি। সিবিআইয়ের দাবি, এই ধোঁয়াশা দূর করতে এ দিন ওই পত্রিকার তদানীন্তন সম্পাদক সুমন চট্টোপাধ্যায়কে তলব করা হয়। এ দিন সকালে সিবিআই দফতরে যান সুমনবাবু। চুক্তি সংক্রান্ত নথিও জমা করেন তিনি। পরে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “নাথিং সিগনিফিক্যান্ট।”

সূত্রের খবর, মিডিয়া ব্যবসায় কত টাকা লগ্নি করা হয়েছিল, সেই খোঁজে নেমে দক্ষিণ কলকাতার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিস মিলেছে। দেখা গিয়েছে, বেঙ্গল মিডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের অ্যাকাউন্ট থেকে ওই দৈনিক পত্রিকা এবং এক ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করা হয়েছে। সিবিআই সূত্রের খবর, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট দু’টিতে জমা পড়া টাকার সঙ্গে চুক্তির অঙ্কে অসঙ্গতি পেয়েছেন তদন্তকারীরা।

এ দিন সিবিআই দফতরে যান ভবানীপুর ক্লাবের দুই প্রতিনিধিও। ওই ক্লাবের সঙ্গে সারদার চুক্তি সংক্রান্ত নথি জমা করেন তাঁরা। রোজ ভ্যালি চেয়ারম্যান গৌতম কুণ্ডুকেও ডেকেছে ইডি। যদিও রোজ ভ্যালি জানিয়েছে, ইডি-র নোটিসের বিরুদ্ধে দিল্লি হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ পেয়েছে তারা। তাই জিজ্ঞাসাবাদও করা যাবে না গৌতমবাবুকে। ইডি-র অভিযোগ, বাজার থেকে বেআইনি ভাবে টাকা তুলেছে রোজ ভ্যালি। তা নিয়েই গৌতমবাবুকে তারা জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায়। কিন্তু তার আগেই দিল্লি হাইকোর্টের নির্দেশ পেশ করেছে রোজ ভ্যালি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন