শেষ বেলাতেও ঘূর্ণাবর্তে কুপোকাত শীত

মরসুমের শেষ ভাগে পৌঁছেও সহজ মসৃণ পথ পাচ্ছে না শীত। কয়েক দিন পারদ নিম্নমুখী থাকায় অনেকে আশা করছিলেন, দ্বিতীয় ইনিংসে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে শীত। কিন্তু ফের বাধা হাজির হওয়ায় সেটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এর আগে উত্তুরে হাওয়ার পথ আটকেছিল মধ্য ভারতের ঘূর্ণাবর্ত কিংবা বিহার-ঝাড়খণ্ডের উচ্চচাপ। এ বার শীতের সামনে পাঁচিল তুলে দিয়েছে বাংলাদেশের ঘূর্ণাবর্ত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৪ ২২:০৩
Share:

মরসুমের শেষ ভাগে পৌঁছেও সহজ মসৃণ পথ পাচ্ছে না শীত। কয়েক দিন পারদ নিম্নমুখী থাকায় অনেকে আশা করছিলেন, দ্বিতীয় ইনিংসে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে শীত। কিন্তু ফের বাধা হাজির হওয়ায় সেটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এর আগে উত্তুরে হাওয়ার পথ আটকেছিল মধ্য ভারতের ঘূর্ণাবর্ত কিংবা বিহার-ঝাড়খণ্ডের উচ্চচাপ। এ বার শীতের সামনে পাঁচিল তুলে দিয়েছে বাংলাদেশের ঘূর্ণাবর্ত।

Advertisement

কয়েক দিন ধরে উত্তুরে হাওয়ার সামনে তেমন বাধা ছিল না। ফলে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলায় ঠান্ডার মালুম হচ্ছিল ভাল ভাবেই। বুধবার কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে দু’ডিগ্রি কম। বাঁকুড়া-বীরভূমে রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের নীচে রয়েছে আরও বেশি দিন ধরে। বিহার-ঝাড়খণ্ডেও জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়েছে। বিহারের ছাপরায় রাতের তাপমাত্রা নেমে গিয়েছে সাত ডিগ্রিতে। সব মিলিয়ে শেষ বেলায় বঙ্গ ও বৃহত্তর বঙ্গে অন্তত শীতকে স্বমেজাজে দেখা যাবে বলে আশা জোরদার হচ্ছিল।

কিন্তু পারদের এমন পতন খুব স্থায়ী হবে না বলে হাওয়া অফিসের খবর। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ জানান, বাংলাদেশে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হচ্ছে। তার জেরে আজ, বৃহস্পতিবার থেকে ফের উত্তুরে হাওয়ার দাপট কমতে থাকবে। তাপমাত্রাও সামান্য বাড়বে। বুধবার কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা (২৪.৯ ডিগ্রি)-ও স্বাভাবিকের থেকে দু’ডিগ্রি কম থাকায় দিনের বেলাতেও ঠান্ডা মালুম হচ্ছিল। কিন্তু হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, আজ থেকে সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও বাড়বে। ফলে শীতের আমেজ ফিকে হয়ে যাবে। আগামী কয়েক দিন কলকাতা এবং সংলগ্ন এলাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪ ডিগ্রির আশেপাশে ঘোরাফেরা করবে।

Advertisement

পারদের এমন ওঠানামা অবশ্য চলতি মরসুমে নতুন নয়। একের পর এক ঘূর্ণাবর্ত ও উচ্চচাপ বলয়ের দাপটে দক্ষিণবঙ্গে এ বার সে-ভাবে ঠান্ডা তো পড়েইনি। থিতু হতে পারেনি পারদও। দু’-এক দিন পারদ স্বাভাবিকের নীচে থাকতে না-থাকতেই ফের লাফ দিয়ে উপরে উঠতে শুরু করেছে। তার পরেই আবার এক লাফে দু’তিন ডিগ্রি নেমে যেতেও দেখা গিয়েছে তাকে। সব মিলিয়ে দেখা মেলেনি তেমন শৈত্যপ্রবাহেরও। অন্যান্য বছর পৌষেই একাধিক বার শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়ে দক্ষিণবঙ্গ। এমনকী কলকাতাও শৈত্যপ্রবাহের দেখা পায়। এ বার কিন্তু শুধু বীরভূমে শৈত্যপ্রবাহ হয়েছে। তা-ও মাত্র এক দিনের জন্য!

কলকাতায় এ বার ঠান্ডা মালুম হয়েছে শুধু পৌষের শেষে। ওই সময় উচ্চচাপ-ঘূর্ণাবর্তের জেরে টানা দিন দুয়েক দক্ষিণবঙ্গের আকাশ মেঘলা ছিল। ফলে দিনের বেলায় কনকনে ঠান্ডা ছিল। কিন্তু পৌষ পেরোনোর সঙ্গে সঙ্গে শীতও প্রায় উধাও হয়ে গিয়েছিল দক্ষিণবঙ্গ থেকে। মাঘের শুরুতে শীতের বেহাল দশা দেখে অনেকেই ভেবেছিলেন, শীত বোধ হয় বাংলা ছেড়ে পালিয়েছে। তবে মাঘের মাঝামাঝি ফের উত্তুরে হাওয়ার দাপট বাড়ায় শীত-প্রত্যাশীদের মুখে কিছুটা হলেও হাসি ফুটেছিল। কিন্তু পৌষের মতো এ বারেও শীতটা থিতু হচ্ছে না।

হাওয়া অফিস অবশ্য এখনই শীতের বিদায়-ঘণ্টা বাজাচ্ছে না। আবহবিদেরা বলছেন, বাংলাদেশের ঘূর্ণাবর্ত কেটে গেলে ফের উত্তুরে হাওয়ার দাপট বাড়বে। তার সৌজন্যে তাপমাত্রাও কিছুটা কমে যেতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন