সৃঞ্জয় বসুর দৃষ্টান্ত টেনে আলিপুরের জেলা ও দায়রা বিচারক সমরেশপ্রসাদ চৌধুরীর এজলাসে জামিনের আবেদন করলেন জেলবন্দি পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র। এই এজলাস থেকেই বুধবার জামিন পান সৃঞ্জয়। পরিবহণমন্ত্রীর কৌঁসুলি জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবারই বিচারপতি চৌধুরীর এজলাসে তাঁর মক্কেলের জামিনের আর্জি পেশ হয়ে গিয়েছে।
সারদা রিয়েলটি মামলায় সিবিআই ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারায় চার্জশিট জমা দিয়েছিল। কিন্তু গত ১৮ নভেম্বর আদালত বলে দেয়, নিম্ন আদালতে ৪০৯ ধারা বিচারগ্রাহ্য নয়। তাই চার্জশিট থেকে ধারাটি বাদ পড়ে। ৪০৯ বাদ পড়ার অর্থ: গ্রেফতারের ৬০ দিনের মধ্যে অতিরিক্ত চার্জশিট পেশ না-হলে অভিযুক্ত জামিনের আবেদন করতে পারেন। এই যুক্তি দেখিয়েই সৃঞ্জয়ের কৌঁসুলিরা তাঁর জামিন চেয়েছিলেন, যা মঞ্জুরও হয়েছে।
কোর্ট-সূত্রের খবর: মদনের জামিন-আর্জির শুনানি আগামী সপ্তাহে হওয়ার কথা। তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে গত ১২ ডিসেম্বর। সেই হিসেবে আগামী সোমবার, ৯ ফেব্রুয়ারি তাঁর কারাবাসের ৬০ দিন পূর্ণ হচ্ছে। প্রসঙ্গত, মদনকেও সারদা রিয়েলটি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। এবং চার্জশিটে ৪০৯ ধারা না-থাকায় আগামী সপ্তাহে শুনানি হলে সৃঞ্জয়ের মতো মদনেরও জামিনলাভের সম্ভাবনা দেখছেন আইনজীবীরা। সিবিআই অবশ্য শুক্রবার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারক হারাধন মুখোপাধ্যায়ের এজলাসে সারদা রিয়েলটি মামলায় ৪০৯ ধারা সংযোজনের আবেদন করেছে। ৯ ফেব্রুয়ারি তার শুনানি। সিবিআইয়ের আবেদন মঞ্জুর হলে কী হবে?
আইনজীবীদের একাংশের দাবি, সিবিআইয়ের আর্জি মঞ্জুরের সম্ভাবনা প্রায় নেই। ওঁদের ব্যাখ্যা: এর আগে বিচারক মুখোপাধ্যায় ৪০৯ ধারা বিচারগ্রাহ্য মনে করেননি। সিবিআই ফের তাঁরই আদালতে গিয়েছে। “যে কোর্ট এক বার কোনও মামলায় একটি বিশেষ ধারার প্রয়োগকে মান্যতা দেয়নি, পরে একই মামলায় একই ধারা সংযোগে সে সম্মতি দেবে কোন যুক্তিতে?” প্রশ্ন তুলছে আইনজীবীদের এই মহল।
সিবিআই তা হলে এমন পদক্ষেপ করল কেন?
কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরোর আইনজীবীদের অবশ্য যুক্তি, আগের কাগজপত্রে ভুল হয়ে থাকতে পারে। তাই ওই আদালতেই ফের আবেদন করা হয়েছে। সিবিআই সূত্রের ইঙ্গিত, ৯ ফেব্রুয়ারির শুনানির পরে তারা পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া শুরু করবে। প্রয়োজনে এ ব্যাপারে সিবিআই হাইকোর্টেরও দ্বারস্থ হতে পারে।
এ দিকে সারদা-কাণ্ডে ধৃত প্রাক্তন মন্ত্রী মাতঙ্গ সিংহকে এ দিন অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারকের আদালতে পেশ করা যায়নি। কোর্ট-সূত্রের খবর: মাতঙ্গ সিংহ অসুস্থ হয়ে জেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এই মর্মে আদালতে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। তাঁকে আদালতে পেশ করার পরেই শুনানি হবে।