সাত বছর ধরে ধর্ষণ, নালিশ নার্সিংহোম মালিকের নামে

মোবাইলে তোলা আপত্তিকর ছবি প্রকাশ করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে এক নার্সকে টানা সাত বছর ধরে বারবার ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে মেদিনীপুরের এক নার্সিংহোমের মালিকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত নিজে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক। তাঁর বক্তব্য, “অভিযোগ একেবারে ভিত্তিহীন।” রোগী এবং রোগীর পরিজনদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের জন্য ওই নার্সকে গত ৩১ মে কাজ থেকে ছাড়িয়ে দেওয়ার আক্রোশেই তিনি মিথ্যা অভিযোগ করছেন বলে দাবি ওই নার্সিংহোম মালিকের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা ও মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৪ ০২:৩০
Share:

মোবাইলে তোলা আপত্তিকর ছবি প্রকাশ করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে এক নার্সকে টানা সাত বছর ধরে বারবার ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে মেদিনীপুরের এক নার্সিংহোমের মালিকের বিরুদ্ধে।

Advertisement

অভিযুক্ত নিজে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক। তাঁর বক্তব্য, “অভিযোগ একেবারে ভিত্তিহীন।” রোগী এবং রোগীর পরিজনদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের জন্য ওই নার্সকে গত ৩১ মে কাজ থেকে ছাড়িয়ে দেওয়ার আক্রোশেই তিনি মিথ্যা অভিযোগ করছেন বলে দাবি ওই নার্সিংহোম মালিকের।

অভিযোগকারিণী নার্স ২০০৬ সাল থেকে এই নার্সিংহোমে চাকরি করতেন। বছর পঁয়তাল্লিশের স্বামী বিচ্ছিন্না ওই মহিলার অভিযোগ, ২০০৭ সালের মে মাসে অসুস্থ ভাইয়ের চিকিৎসার জন্য তিনি কটকে গিয়েছিলেন। সেখানে পৌঁছে যান অভিযুক্ত নার্সিংহোম মালিক এবং কটকের এক হোটেলে প্রথম তাঁকে ধর্ষণ করেন। অভিযোগকারিণীর কথায়, “তখন আমার আপত্তিকর ছবি উনি মোবাইল ক্যামেরায় তুলে নেন। হুমকি দেন, কাউকে জানালে ছবি সর্বত্র প্রকাশ করে দেবেন। এমন ব্যবস্থা করবেন, যাতে আমি কোথাও চাকরি না পাই।” এরপর থেকে বহুবার স্ত্রী পরিচয় দিয়ে ওই নার্সকে মেচেদা ও কলকাতার হোটেলে নিয়ে গিয়ে ওই নার্সিংহোম মালিক ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ।

Advertisement

কিন্তু কেন ওই নার্স এত বছর পরে অভিযোগ জানালেন, কেনই বা প্রতিবার ধর্ষণের সময় তিনি চিৎকার করলেন না, সে সব প্রশ্ন ঘিরে ধোঁয়াশা থেকেই গিয়েছে। মহিলার অবশ্য দাবি, স্বামী বিচ্ছিন্না অবস্থায় অসহায়তার জন্যই তিনি তখন প্রতিবাদ করতে পারেননি। তাহলে এ বার পারলেন কী করে? মহিলার বক্তব্য, চাকরি যাওয়ার ভয়ে এতদিন তিনি চুপ করেছিলেন। সেই চাকরিই যখন গিয়েছে, আর ভয় কীসের!

ওই নার্সের আরও অভিযোগ, গত ১ জুলাই ওই চিকিৎসক ও তাঁর এক মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ বন্ধু নার্সিংহোমের চেম্বারে তাঁকে ডেকে অশালীন ব্যবহার করেন। তিনি চিৎকার করলে ওই নার্সিংহোম মালিক পিস্তল বার করে হুমকি দেন। এরপর ২ জুলাই কোতয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই মহিলা। তবে তা ছিল জেনারেল ডায়েরি, এফআইআর নয়। ওই মহিলার বয়ানের ভিডিও রেকর্ডও করে পুলিশ। ৭ জুলাই সন্ধেয় ফের চেম্বারে ডেকে নার্সিংহোম মালিক তাঁকে ধর্ষণ করেন বলে ওই নার্সের অভিযোগ। ৮ জুলাই সরাসরি পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ জানান ওই মহিলা।

পুলিশ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় ১১ জুলাই ওই নার্স মেদিনীপুর আদালতের দ্বারস্থ হন বলে জানিয়েছেন। আদালতের নির্দেশে কোতয়ালি থানা ২৪ জুলাই এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করে। ২৬ জুলাই মহিলার ডাক্তারি পরীক্ষা হয়। ২৮ জুলাই আদালতে গোপন জবানবন্দি দেন তিনি। তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ মানেনি পুলিশ। তাদের বক্তব্য, জিডি-র পরেই অভিযুক্তের সঙ্গে যোগাযোগ করে তদন্ত শুরু হয়। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের কথায়, “এ ক্ষেত্রে অভিযোগের প্রতিটি স্তর খতিয়ে দেখা জরুরি। সেই মতো পদক্ষেপ করা হচ্ছে।” ওই নার্সিংহোমে সিসিটিভি রয়েছে। অভিযুক্ত তার ফুটেজ পুলিশে জমাও দিয়েছেন। তার মধ্যে ১ জুলাইয়ের ফুটেজ রয়েছে। পুলিশ চাইলে ৭ জুলাইয়ের ফুটেজও তিনি দেবেন বলে জানান। মঙ্গলবার রাতে অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।

দু’টি পৃথক পথ দুর্ঘটনায় জখম ১১

দু’টি পৃথক দুর্ঘটনায় আহত হলেন ১১ জন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রামপুরহাট-দুনিগ্রাম রাস্তায় মাড়গ্রাম থানা এলাকার ডাঙাপাড়া মোড়ে মোটরবাইকের সঙ্গে যন্ত্রচালিত ভ্যানের ধাক্কা লাগে। একজন বালক-সহ পাঁচজন জখম হন। অন্য দিকে, এ দিনই রানিগঞ্জ-মোরগ্রাম ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে নলহাটির তেজহাটি ও চামটিবাগানের মাঝে পিকআপ ভ্যান উল্টে জখম হন ছ’জন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন