জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক
সোমবার বনগাঁ উপনির্বাচনে ভোটের ফল বলছে, ২ লক্ষ ১১ হাজার ৭৮৫ ভোটে জয়ী হয়েছেন মমতা ঠাকুর। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী, সিপিএমের দেবেশ দাস। বিস্তর রক্তক্ষরণের পরেও বনগাঁ আসনে দ্বিতীয় স্থান ধরে রাখতে পেরেছেন দেবেশ। গতবারও এই আসনে প্রার্থী ছিলেন তিনি। তৃতীয় স্থানে মতুয়া বাড়িরই আর এক প্রতিনিধি, বিজেপির সুব্রত ঠাকুর। সংখ্যার বিচারে সামান্য হলেও ভোট বেড়েছে তৃণমূলের। ২০১৪ সালে বনগাঁ আসনে তৃণমূল প্রার্থী কপিলকৃষ্ণ ঠাকুর পেয়েছিলেন ৪৩.২৭ শতাংশ ভোট। এ বার তাঁর মৃত্যুতে এই কেন্দ্রের উপনির্বাচনে স্ত্রী মমতা পেলেন ৪৩.৬৮ শতাংশ ভোট।
নতুন এলাকাতেও শক্তি বাড়িয়েছে তৃণমূল। স্বরূপনগর বিধানসভা এলাকায় গত লোকসভা ভোটে ৩,৬৫০ ভোটে এগিয়ে ছিল বামেরা। এ বার সেখান থেকেই ২৪,৯৩৯ ভোটে লিড পেয়েছে তৃণমূল। নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক ও মধ্যমগ্রামের বিধায়ক রথীন ঘোষকে এই এলাকার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের বাকি সব ক’টি বিধানসভা এলাকাতেও এ বার এগিয়ে তৃণমূল। গাইঘাটাতে গত বার তৃণমূলের লিড ছিল ২১,৩৯১। এ বার তা বেড়ে হয়েছে ২৫,৬৫২। গাইঘাটার বিধায়ক মঞ্জুলকৃষ্ণকে নিয়ে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে নানা অসন্তোষ ছিল। তিনি দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় খুশিই হয়েছিল তৃণমূল শিবির। দলের নেতা গোবিন্দ দাস বলেন, “উনি চলে যাওয়ায় দলের বোঝা হালকা হয়েছিল। সেটা প্রমাণের জন্য আমরা সকলে মরিয়া হয়ে উঠেছিলাম।”
গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করছিলেন অনেকে। বিশেষত, বাগদায় তৃণমূলের অন্দরে কোন্দলের দীর্ঘ ইতিহাস আছে। ভোটের দিন প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক দুলাল বর-সহ একাধিক নেতাকে ভোট-প্রক্রিয়া থেকে দূরে নিজেদের কাজে ব্যস্ত থাকতে দেখা গিয়েছে। স্থানীয় বিধায়ক উপেন বিশ্বাসের উপরে দলের এই অংশের ক্ষোভ তাঁরা গোপনও করেননি। কিন্তু সেই বাগদাতেও ৩১,৪২৪ ভোটের লিড পেয়েছেন মমতা ঠাকুর। গত বার যে সংখ্যাটা ছিল ২২,৮৭৩।