সুদীপ্ত সেন: শরীর স্যার, ঠিক থাকতে পারে স্যার? ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করবেন স্যার। আপনি ভাল থাকুন স্যার। আমার তো যাওয়ার পথের শেষ সময় এসেই গেছে।
সুমন দে: হুঁ...
সুদীপ্ত: এটুকুই স্যার আমার বলার ছিল স্যার। আপনি তো...আপনি তো সারা ভারতবর্ষের একটা রোল মডেল স্যার। আজকে দুর্ভাগ্যের জন্য আমার এই অবস্থা স্যার। কিছু নেই স্যার আমার। কিচ্ছু নেই স্যার আমার, মনের জোর রাখার মতো স্যার।...তবে একটা কথা আমি আপনাকে বলে যাচ্ছি সেটা হচ্ছে...
সুমন: হ্যাঁ ।
সুদীপ্ত: ...যে আমার প্রচুর সম্পত্তি রয়েছে যেগুলো কিন্তু এখনও ইডির নাগালের বাইরে এবং সেটার দায়িত্ব ছিল...
সুমন: হ্যাঁ ।
সুদীপ্ত: সেগুলো আমার নন-রেজিস্টার্ড এবং নন-এগ্রিমেন্ট করা আছে। ঠিক আছে?
সুমন: হ্যাঁ হ্যাঁ...
সুদীপ্ত: আপনারা যদি ইডিকে একটু পুশ করে...তা হলে আজ হোক কাল হোক সেন্ট্রাল গভর্নমেন্ট নিশ্চয় একটা স্টেপ নেবে। একটা কিছু করে ইয়ে করবে। তা হলে স্যার একটা কথা আপনাকে বলে যাচ্ছি, এটা তো একটা মৃত্যুকালীন মানুষের জবানবন্দি। তা হলে কিন্তু সবাইকে যে টাকাটুকু আছে অরিজিনাল....
সুমন: হ্যাঁ ।
সুদীপ্ত: সেই টাকাটুকু ফেরত পেয়ে যাবে।
সুমন: হ্যাঁ ।
সুদীপ্ত: লাভবানের তালিকায় কিন্তু কোম্পানির অনেক লোকই আছে, হ্যাঁ?
সুমন: তাই না?
সুদীপ্ত: তারা অনেক লাভবান হয়েছে। যারা নিজেদের গা বাঁচিয়ে নিল। এ ছাড়া একটা কথা বলুন স্যার...।
সুমন: বলুন।
সুদীপ্ত: যারা লক্ষ লক্ষ টাকা মাইনে পেয়েছে, তারা এক দিনের জন্যও আমাকে সতর্ক করে বলেছে, সুদীপ্তবাবু এই কাজটা ঠিক হচ্ছে না? তাদেরকে প্রসেস অফ ক্রাইমের টাকাতে তারা মাইনে নেয়নি স্যার? কত কত লক্ষ টাকা মাইনে নিয়েছে আর তারা আজকে স্যার, সরে গেছে স্যার। আসলে এটা দেখবেন স্যার, আপনারা একটা বিশেষ ভূমিকা পালন করছেন। সারদায় সমস্ত সম্পত্তি, বিশেষ করে যে সমস্ত এগ্রিমেন্ট হয়ে আছে, যেগুলো রেজিস্ট্রি হয়নি....
সুমন: হ্যাঁ।
সুদীপ্ত: সেগুলো যেন, মানে লুঠপাটের দল যেন না খায়।
সুমন: হ্যাঁ ।
সুদীপ্ত: এটাই স্যার আমার বক্তব্য স্যার। আপনারা স্যার সেটা দেখলে অন্তত মানুষ সচেতন হবে।...যে যে এগ্রিমেন্ট করেছি, সে তো আমার কাছ থেকে অধিকাংশ সময় নাইন্টিনাইন পয়েন্ট নাইন্টিনাইন পার্সেন্ট তো আমি চেকে পেমেন্ট করেছি। এখন এত চেক ঘেঁটে বার করা তো মুশকিলের ব্যাপার।
জানেন স্যার আমি সতেরো মাস ধরে কমিশনে গেছি বারবার করে, আমি তিরিশে জানুয়ারি দু’হাজার চোদ্দো সালে, কমিশনে একটা দরখাস্ত করেছিলাম। আমি দু’হাজার তেরোর চোদ্দোই জুন আমি হাইকোর্ট থেকে একটা অর্ডার নিয়ে এসেছিলাম, ডক্টর এন চক্রবর্তী এবং অসীম ব্যানার্জি জাস্টিসের কাছ থেকে। সারদার সমস্ত সম্পত্তি বিক্রি করে কমিশনকে দায়িত্ব দেওয়া হোক। আইন অনুযায়ী সেটা বাধা দিয়েছে। সেটা আমার বক্তব্য নয়। কারণ আমি তো আইন বিশেষজ্ঞ নই। আমার বক্তব্য ছিল, আজকে বিক্রি করে মানুষের হাতে যদি টাকাটা পৌঁছে যেত, তো বিচার হতো।
ঠিক আছে।
স্যার আপনি জানেন স্যার, আজকে যারা পনেরো হাজার কোটি টাকা এবং আমি আপনাকে বলছি যে, আপনার, সাহারা দু’লক্ষ হাজার কোটি টাকা তুলেছে স্যার। অ্যালকেমিস্ট কত টাকা তুলেছে? তাদের কোনও বিচার হচ্ছে না। এটা কি স্যার প্রসেস অফ ক্রাইমে নয়? একই তো ছক স্যার। একই তো লোক স্যার। জামা পাল্টে কখনও রোজ ভ্যালি কখনও...।
শুক্রবার এ বি পি আনন্দে প্রচারিত সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেনের বক্তব্য।