স্বচ্ছতার তাগিদেই কলেজের ভর্তি-তথ্য চান পার্থ

কলেজে কলেজে ছাত্র ভর্তির ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় অনলাইন ব্যবস্থা চালু করার উদ্যোগ অঙ্কুরেই মুড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। এখন সেই শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ই স্বচ্ছতা বজায় রাখার খাতিরে ছাত্র ভর্তি সংক্রান্ত তথ্য নিয়মিত তাঁর কাছে পাঠানোর নির্দেশ দিচ্ছেন!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:৫৫
Share:

কলেজে কলেজে ছাত্র ভর্তির ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় অনলাইন ব্যবস্থা চালু করার উদ্যোগ অঙ্কুরেই মুড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। এখন সেই শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ই স্বচ্ছতা বজায় রাখার খাতিরে ছাত্র ভর্তি সংক্রান্ত তথ্য নিয়মিত তাঁর কাছে পাঠানোর নির্দেশ দিচ্ছেন!

Advertisement

বুধবার বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধানদের নিয়ে বৈঠকে এই বার্তা দেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, “ভর্তি পর্বে দিনের শেষে পরিস্থিতি কী দাঁড়াল, আগের বার উচ্চশিক্ষা দফতরে সেই তথ্য পাঠিয়েছিল প্রতিটি কলেজ। এ বার তারা আমার দফতরকে সব জানাক। আমি নিজে তা দেখতে চাই।”

কলেজে ছাত্র ভর্তি হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম মেনে। এ ক্ষেত্রে কলেজের কিছু স্বাধিকার থাকে। মূলত এই যুক্তিতেই আগেকার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর পরিকল্পিত কেন্দ্রীয় অনলাইন ব্যবস্থা বাতিল করে দেন পার্থবাবু। প্রশ্ন উঠছে, এখন খোদ শিক্ষামন্ত্রী সরাসরি তথ্য চাইলে কি তা হলে সেই স্বাধিকার ক্ষুণ্ণ হবে না?

Advertisement

প্রশ্ন যে উঠতে পারে, তা আঁচ করেই পার্থবাবু এ দিন বলেন, “অটোনমি (স্বশাসিত) মানে দেওয়াল তুলে যা ইচ্ছে করা হবে। অথচ চোখ বুজে থাকতে হবে, তা কিন্তু নয়।”

কেন্দ্রীয় অনলাইন ব্যবস্থায় টাকা নিয়ে ভর্তি, দাদাগিরির মতো দুর্নীতির জায়গা প্রায় থাকেই না, তা হলে উদ্যোগ পর্বেই সেই ব্যবস্থা রুখে দেওয়া হয়েছিল কেন? এই প্রশ্নের সরাসরি জবাব মিলছে না। ঘটনা হল, পছন্দমতো ছাত্র ভর্তি করানোর দাবিতে ছাত্র সংসদের দাপাদাপিতে নাজেহাল বিভিন্ন কলেজ। আর বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই ধরনের ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ বা টিএমসিপি-র দিকে। কারণ, অধিকাংশ ছাত্র সংসদই তাদের অধীনে। এ দিনের বৈঠকে কারও নাম না-করে পার্থবাবু সেটা স্বীকারও করে নিয়েছেন। তাঁর কথায়, “অনলাইনের মধ্যে হেল্পলাইন ঢুকে যাচ্ছে। এ বিষয়ে আপনাদের (কলেজ-কর্তৃপক্ষ) লক্ষ রাখতে হবে।”

ছাত্র ইউনিয়নের জোরাজুরিতে কলেজের অধ্যক্ষদের মাথা নত করা চলবে না বলেও বার্তা দিয়েছেন মন্ত্রী। এ ক্ষেত্রে তাঁর দফতর যে অধ্যক্ষদের পাশেই আছে, আগে অনেক বার সে-কথা বলেছেন পার্থবাবু। এ দিনও বলেন। কার্যত হতাশ গলায় মন্ত্রী বলেন, “সরকারের সাফল্য, ব্যর্থতা আপনাদের (শিক্ষক ও অধ্যাপকদের) সাফল্যের উপরে নির্ভর করে।”

কী ভাবছেন অধ্যক্ষেরা?

নিউ আলিপুর কলেজের অধ্যক্ষ সুজিত বসু বলেন, “শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য যথেষ্টই ইতিবাচক। তিনি যে-ভাবে আমাদের পাশে থাকার কথা বলেছেন, তাতে সকলেরই মনোবল বাড়বে বলে আশা করি। কলেজে ভর্তি নির্বিঘ্নে হওয়াই বাঞ্ছনীয়।” আর এক অধ্যক্ষ বলেন, “সরকারের এই প্রচেষ্টা প্রশংসনীয়।”

কী প্রতিক্রিয়া টিএমসিপি-র?

“শিক্ষামন্ত্রী কী বলেছেন জানি না। পরে জেনে-বুঝে নেব,” বলেন টিএমসিপি-র সভাপতি অশোক রুদ্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন