সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের প্রতিবাদে সরব সুমনরা

বর্ধমান-কাণ্ডের জেরে মেরুকরণ এবং সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে চাপানউতোর বাড়ছে। এক দিকে, প্রাক্তন সাংসদ তথা সঙ্গীতশিল্পী কবীর সুমন, শিক্ষাবিদ মীরাতুন নাহারের মতো ব্যক্তিত্বরা সোমবার যুক্তি এবং তথ্য দিয়ে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের প্রতিবাদে সরব হন। বিজেপি আবার সিপিএমকে ‘জঙ্গি সন্ত্রাসের মদতদাতা’ বলে অভিযোগ করেছে!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৪ ০৩:১০
Share:

বর্ধমান-কাণ্ডের জেরে মেরুকরণ এবং সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে চাপানউতোর বাড়ছে। এক দিকে, প্রাক্তন সাংসদ তথা সঙ্গীতশিল্পী কবীর সুমন, শিক্ষাবিদ মীরাতুন নাহারের মতো ব্যক্তিত্বরা সোমবার যুক্তি এবং তথ্য দিয়ে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের প্রতিবাদে সরব হন। বিজেপি আবার সিপিএমকে ‘জঙ্গি সন্ত্রাসের মদতদাতা’ বলে অভিযোগ করেছে!

Advertisement

তৃণমূলে থাকার সময়েই দলের সঙ্গে সুমনের বিরোধ ছিল সুবিদিত। রাজ্যে সাম্প্রতিক মেরুকরণের আবহের প্রেক্ষিতে এ দিন কলকাতা প্রেস ক্লাবে প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের স্থায়িত্ব নষ্ট করতে বর্ধমান বিস্ফোরণ এবং তার পরবর্তী ঘটনাগুলি ঘটানো হচ্ছে। তাঁর বক্তব্য, “আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনেক নীতিরই বিরুদ্ধে লেগে আছি এবং থাকব। কিন্তু বর্ধমান বিস্ফোরণ ও পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ দেখে মনে হচ্ছে, মমতার সরকারের স্থায়িত্ব নষ্ট করতে এ সব ঘটানো হচ্ছে।” মমতাকে দেশের ‘মোদী-বিরোধী মুখ’ আখ্যা দিয়ে সুমন বলেন, “এতে লাভ বিজেপি-র। ২০১৬ সালে ভোটের আমটি পেড়ে খেতে চাইছে যারা!” তদন্তে নেমে যে ‘সন্দেহজনক’ বই মিলেছে বলে দাবি করা হচ্ছে, সেই বইটি আদতে আরবি ভাষার বর্ণপরিচয় বলেও সুমনের দাবি।

মালেগাঁও বিস্ফোরণ, গ্রাহাম স্টুয়ার্ট স্টেইনস হত্যা-সহ গৈরিক সন্ত্রাসবাদীদের বিভিন্ন কার্যকলাপের কথা উল্লেখ করে সুমন বলেন, “সারা দিন ধরে কেবল মাদ্রাসা, মাদ্রাসা, মাদ্রাসা। এই অবসরে যে ২৩টি জীবনদায়ী ওষুধের দাম লক্ষ টাকা হল, তা নিয়ে কেউ কিছু বলছে না!”

Advertisement

মীরাতুন জানান, সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের মূলে রয়েছে ‘ইসলাম’, ‘মাদ্রাসা’, ‘জিহাদ’ ইত্যাদি নিয়ে ভ্রান্ত ধারণা। তাঁর বক্তব্য, অপরাধের সঙ্গে একটা সম্প্রদায়কে যুক্ত করা হচ্ছে ভুল ধারণা থেকে। ‘জিহাদ’-এর আসল অর্থ প্রিয় ও প্রকৃত বন্ধুর জন্য প্রাণ দেওয়া। সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের জন্য সংখ্যালঘু তোষণের রাজনীতিকে দায়ী করেছেন মীরাতুন। রাজ্যের অনেক মাদ্রাসায় হিন্দুরাও পড়াশোনা করেন বলে তিনি জানান। বর্ধমানে এ দিনই সমাবেশ করে পিডিএসের সমীর পূততুণ্ড, অনুরাধা দেব, বামপন্থী নেতা অসীম চট্টোপাধ্যায়েরাও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার আবেদন জানান।

বিজেপি এ দিনও রাজ্যে জঙ্গি সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে সরব হয়। তবে এ দিন তারা বিঁধেছে সিপিএমকে। বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ বলেন, “রাজ্যে জঙ্গি সন্ত্রাস শুরু হয় সিপিএম আমলে। সিপিএম এ রাজ্যে মাওবাদীদের ডেকে এনেছিল। তারাই সংখ্যালঘু তোষণ করত।” সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুজন চক্রবর্তী পাল্টা বলেছেন, “সন্ত্রাসবাদের কোনও ধর্ম-বর্ণ হয় না। সন্ত্রাসবাদ মানুষের শক্র। এটাই আমরা বলছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন