সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারিতে সরকারি কলেজ শিক্ষকেরাও উদ্বিগ্ন। একক বা ব্যক্তিগত ভাবে শুধু নয়, সংগঠনগত ভাবেও। তাই সরকারি কলেজ শিক্ষক সমিতির বার্ষিক রিপোর্টটিও সারদা কেলেঙ্কারির উল্লেখ না-করে সম্পূর্ণ হয়নি!
শুধু তা-ই নয়, এই কেলেঙ্কারিতে আমানতকারীদের ক্ষতিপূরণে রাজ্য সরকার তেমন সফল হতে পারেনি বলেও মন্তব্য করা হয়েছে ওই রিপোর্টে। এই পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় আশ্বাস দিয়েছেন, সারদা কাণ্ডের দোষীরা ছাড় পাবেন না। তাঁর সংযোজন, “এ বিষয়ে যা দেখছেন, তার পুরোটাই সত্যি, এমন ভাবার কোনও কারণ নেই।”
সরকারি কলেজ শিক্ষক সমিতির বার্ষিক রিপোর্টে সারদা-সহ বিভিন্ন বেসরকারি অর্থ লগ্নি সংস্থার প্রসঙ্গ থাকায় অনেকেই কিছুটা আশ্চর্য হয়েছেন। সমিতির রাজনৈতিক চরিত্র নিয়েও জল্পনা শুরু করে দিয়েছেন অনেকে। সমিতির সভাপতি দেবাশিস সরকার বলেন, “প্রতি বছর শিক্ষা ছাড়াও বিভিন্ন বিষয় রাখা হয় রিপোর্টে। এখন অর্থ লগ্নি সংস্থা নিয়ে যা হচ্ছে, তাতে খুব স্বাভাবিক ভাবেই প্রসঙ্গটি আমাদের রিপোর্টে এসেছে।”
শিক্ষকদের উদ্বেগের প্রেক্ষিতে পার্থবাবু অবশ্য অর্থ লগ্নি সংস্থার জন্মের জন্য বাম সরকারকেই দুষছেন। তিনি বিরোধী দলনেতা থাকার সময় এ ব্যাপারে কী ভাবে বিধানসভায় সরব হয়েছিলেন, তারও উল্লেখ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী। “আমার কথার সত্যতা বিচার করতে হলে নথি ঘেঁটে দেখা হোক,” দাবি পার্থবাবুর। অনেকেই অবশ্য বলছেন, সারদা-সহ অর্থ লগ্নি সংস্থার জন্মের জন্য শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীদের তরফে নিয়ে বাম সরকারকে দোষারোপ করাটা নতুন কিছু নয়। কিন্তু ওই সংস্থাগুলি কী ভাবে গত কয়েক বছরে এমন বিষবৃক্ষের মতো ডালপালা বিস্তার করল, তা নিয়ে শাসক দলের নেতারা তেমন ভাবে কিছু বলেনই না।
সারদা কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের ক্ষেত্রেও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে বলে বারবার অভিযোগ করেছেন তৃণমূল নেতারা। কিন্তু এ দিন শিক্ষক সমিতির সভায় তা নিয়ে মুখ খোলেননি পার্থবাবু। শিক্ষকদের উদ্দেশে পার্থবাবু বলেন, “এখানে উপস্থিত শিক্ষকদের আশ্বস্ত করতে চাই যে, আপনারা যা দেখছেন, তার পুরোটাই সত্যি ভাবার কারণ নেই। আবার দোষীরা ছাড়া পেয়ে যাবে, এটাও ভাবার কারণ নেই।”
‘দোষী’ শব্দের ব্যাখ্যাও দিয়েছেন পার্থবাবু। তিনি বলেছেন, “দোষী তখনই হয়, যখন সেটা তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে ঘোষণা করা হয়।”