সঞ্জীব গ্রেফতার, হতবাক স্বর্ণখালি

হোর্ডিং-এ তাঁর ছবি রয়েছে। কিন্তু তিনিই নাকি রয়েছেন পুলিশের জিম্মায়! দক্ষিণ-পূর্ব রেলের ভিজিল্যান্স দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রেলের প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের স্বর্ণখালির সঞ্জীব বিশ্বাসকে (যাঁকে গোটা এলাকা ‘দাদা’ নামেই বেশি চেনে)। সেই সঙ্গে নদিয়ার আরও পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি ভিজিল্যান্স দফতরের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণগঞ্জ ও কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:০১
Share:

হোর্ডিং-এ তাঁর ছবি রয়েছে। কিন্তু তিনিই নাকি রয়েছেন পুলিশের জিম্মায়!

Advertisement

দক্ষিণ-পূর্ব রেলের ভিজিল্যান্স দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রেলের প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের স্বর্ণখালির সঞ্জীব বিশ্বাসকে (যাঁকে গোটা এলাকা ‘দাদা’ নামেই বেশি চেনে)। সেই সঙ্গে নদিয়ার আরও পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি ভিজিল্যান্স দফতরের। শনিবার রাতে কৃষ্ণগঞ্জের ঘুঘড়াগাছি গ্রামের একটি বাড়ির দোতলায় আচমকা হানা দেন ভিজিল্যান্সের অফিসারেরা। সেখান থেকে ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র, ডায়েরি-সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতার করা হয় সঞ্জীবকেও।

এই ঘটনায় হতবাক হয়ে গিয়েছে স্বর্ণখালি। গ্রামের সিংহভাগ বাসিন্দা বলছেন, “কোথাও একটা ভুল হচ্ছে। আমাদের সঞ্জীব মোটেই তেমন ছেলে নয়।” সঞ্জীবের বাবা অদ্বৈত বিশ্বাস বলছেন, “আমার ছেলেকে খুব কষ্ট করে লেখাপড়া শিখিয়েছি। সঞ্জীব এখন কাশীপুর গান ফ্যাক্টরিতে চাকরি করে। ও কেন এসব করতে যাবে?”

Advertisement

তবে চাকরির পাশাপাশি সঞ্জীব দীর্ঘদিন ধরেই এলাকার যুবকদের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রশিক্ষণ দিচ্ছিলেন। জনপ্রিয় ওই কোচিং সেন্টারে রেল, এসএসসি, পিএসসি, রাজ্য পুলিশ ও কলকাতা পুলিশের পরীক্ষায় বসার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হত। গ্রামবাসীদের দাবি, ওই কোচিং সেন্টারে প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বর্ণখালি তো বটেই বাইরের এলাকারও বহু ছেলেমেয়ে চাকরি পেয়েছেন। গত কয়েক বছরে ওই সেন্টারের জনপ্রিয়তা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। নদিয়া তো বটেই, ভিন্ জেলা থেকেও বহু ছেলেমেয়ে সেখানে কোচিং নেওয়ার জন্য স্বর্ণখালি ও লাগোয়া এলাকায় মেস ভাড়া করে থাকতে শুরু করেন। এ ভাবে ‘দাদা’ নিজেই একটা শিল্প হয়ে উঠেছিলেন।

কাশীপুর থেকে স্বর্ণখালি নিয়মিত যাতায়াত করতেন সঞ্জীব। ছুটির দিন ও অন্যান্য ফাঁকা সময়ে তিনি প্রশিক্ষণ দিতেন। স্থানীয় বাসিন্দা সুজিত মণ্ডল বিএ পাশ করার পর থেকেই ওই কোচিং সেন্টারে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। সুজিতের কথায়, “দাদা খুব কড়া ধাতের মানুষ। নিয়মিত পরীক্ষাও নিতেন। বহু ছেলেমেয়ে দাদার কাজে পড়েই তো চাকরি পেয়েছে।”

পরিবারের লোকজনের দাবি, সঞ্জীব কোচিং সেন্টারে এককালীন ফি নিতেন পাঁচ হাজার টাকা। যত দিন সেই ছাত্র বা ছাত্রী চাকরি না পাচ্ছেন ততদিন ওই টাকাতেই প্রশিক্ষণ নেওয়া যেত। স্বর্ণখালি বাজারের ওই কোচিং সেন্টারের সামনের একটি বাড়ির মালিক যতন সরকার বলেন, “কতজন ছাত্রছাত্রী ছিল তা অবশ্য বলতে পারব না। তবে ওই সেন্টারে ভর্তি হলে চাকরি পাওয়া একপ্রকার নিশ্চিত জেনেই খুব ভিড় হত। কিন্তু হঠাৎ করে এ সব কী হয়ে গেল বুঝতে পারছি না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন