সংসদ চত্বরে মুনমুন সেনের সঙ্গে দেব ও অর্পিতা ঘোষ। মঙ্গলবার। ছবি: রমাকান্ত কুশওয়াহা
সংসদে আজ প্রথম বার পা। পরনে প্রখর গ্রীষ্মের সঙ্গে মানানসই হালকা ঘিয়ে রঙের শাড়ি। বাঁকুড়া থেকে জিতে আসা তৃণমূল সাংসদ মুনমুন সেনের দু’পাশে তখন দেব এবং অর্পিতা ঘোষ।
গত বারের তুলনায় এ বার তৃণমূলের সাংসদ সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ। তাঁদের অনেকেই আবার প্রথম বারের সাংসদ। ফলে ইনিংস শুরু করার আগে সংসদীয় দলের কাজও বিস্তর। তৃণমূলের রাজ্যসভার দুই সাংসদ মুকুল রায়, ডেরেক ও ব্রায়েন এবং লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানে আজ গোটা দিনই ফর্ম ভর্তি করা, সার্টিফিকেট নেওয়া, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার মতো কাজ সারলেন জনা তিরিশ সাংসদ। ঘুরে দেখলেন সংসদের লাইব্রেরিও।
এই সব ব্যস্ততার ফাঁকেই মুনমুন সেন বললেন, “যখনই বাঁকুড়ায় প্রচারমঞ্চে উঠতাম, চর্তুদিকে মহিলাদের মাথা দেখতাম। নারীশক্তির অভ্যুত্থান ঘটেছে। সেটা সম্ভব হয়েছে নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্যই।” তাঁর বক্তব্য, “এ বার লোকসভাতেও একই ভাবে দেখা যাবে নারীশক্তি। কারণ এ বার ৩৪ জন সাংসদের মধ্যে ১১ জন মহিলা।” ডেরেকের কথায়, “সংসদীয় দলের মধ্যে মহিলা প্রতিনিধিত্বের শতকরা হারে আমরাই এক নম্বরে। তৃণমূলে নারী প্রতিনিধিত্বের হার প্রায় ৩৪%। তুলনায় কংগ্রেস এবং বিজেপির ক্ষেত্রে এই হার যথাক্রমে ১০ এবং ১২%।” তৃণমূলের মহিলা সদস্যদের মধ্যে মুনমুন সেন, সন্ধ্যা রায়, শতাব্দী রায়, অর্পিতা ঘোষ, মুমতাজ সংঘমিতা, রত্না দে নাগেরা আজ তাঁদের সংসদীয় কাজ সেরে নিয়েছেন। তারকা-সাংসদ দেব পরে বলেন, “এখানে আসতে পেরে গর্বিত। শু্যটিংয়ের কাজ সে ভাবেই করব, যাতে সংসদে যথেষ্ট সময় দিতে পারি।”
কথা ছিল, আগামিকাল শপথ গ্রহণ করবেন তাঁরা। কিন্তু গোপীনাথ মুন্ডের মৃত্যুর কারণে কাল সংসদ বন্ধ। তাই পরশু দিন হবে শপথ। তবে গোটা সপ্তাহটাই সাংসদদের প্রায় প্রত্যেকে থেকে যাচ্ছেন দিল্লিতে। আগামিকাল রাতে বঙ্গভবনে নতুন সাংসদদের নিয়ে একটি ‘ওরিয়েন্টশন সেশন’ হবে। তাতে লোকসভার ৩৪ জন এবং রাজ্যসভার কিছু সাংসদের উপস্থিত থাকার কথা। সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে প্রতিনিধিত্বের বিষয়টি নিয়ে নতুনদের সব জানাবেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। সংসদীয় রীতিনীতি সম্পর্কে বলবেন সৌগত রায়। সংসদের মধ্যে কী করা উচিত আর কী করা উচিত নয়, তা জানানো মুকুল রায়ের দায়িত্ব। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে দলের সম্পর্কের বিষয়টি নিয়ে নতুন সাংসদদের বোঝাবেন ডেরেক।
এর পাশাপাশি এ বার বড় ঘরের জন্য তদ্বির করতে চায় তৃণমূল। দলের তরফে মুকুল রায়ের বক্তব্য, এর আগেও স্পিকারকে এ ব্যাপারে বলা হয়েছিল। সাড়া মেলেনি। তবে এ বার সাংসদের সংখ্যা আরও বেড়েছে। স্পিকারকে তাই চিঠি দিয়ে ঘরের কথা বলা হবে।