নিজেদের দাবিদাওয়া নিয়ে সরব হয়ে তাঁরা কলকাতায় আন্দোলন করেছিলেন। পুরুলিয়ার সেই চার সিভিক পুলিশকে আর কাজ দিচ্ছে না জেলা পুলিশ। এ’দের মধ্যে রয়েছেন জেলা সিভিক পুলিশ কমিটির সভাপতি মিলন মণ্ডল এবং বলরামপুর থানার মলয় রজক ও জিতেন মাঝি। চতুর্থ জনের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
মিলনবাবু এত দিন আড়শা থানার অধীনে কাজ করছিলেন। আচমকা কেন তাঁদের বসিয়ে দেওয়া হল, সংশ্লিষ্ট থানাগুলি থেকে তার কোনও সদুত্তর মেলেনি বলে মিলনবাবুর অভিযোগ। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীর কুমার জানিয়েছেন, “ওই চার জনকে বরখাস্ত করা হয়েছে।” কিন্তু, কেন? তাঁর সংক্ষিপ্ত জবাব, “এটা বিভাগীয় ব্যপার।”
মিলনবাবুর অবশ্য দাবি, গত ১০ জুলাই কলকাতার রানি রাসমণি রোডে চার দফা দাবির ভিত্তিতে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল সিভিক পুলিশ অ্যসোসিয়েশন’-এর প্রকাশ্য সমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্যই এই শাস্তির খাঁড়া। বস্তুত, রাতারাতি সংগঠন তৈরি করে রাজ্যের সিভিক পুলিশদের একটা বড় অংশ তাঁদের দাবিদাওয়া নিয়ে বিক্ষোভ-সমাবেশ করার পরেই তাঁরা প্রশাসনের বিষ নজরে পড়ে যান। ‘সিভিক পুলিশ ভলান্টিয়ার্স’ থেকে ‘পুলিশ’ শব্দটা ছেঁটে শুধুই ‘সিভিক ভলান্টিয়ার্স’ করে দেওয়া হয় নবান্নের নির্দেশে। এ বার জেলায় জেলায় তাঁদের প্রশাসনের রোষে পড়তে হবে বলে আশঙ্কা করছেন আন্দোলনকারী সিভিক পুলিশ (এখন ভলান্টিয়ার্স) কমর্ীর্দের একাংশ।
অ্যসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি সঞ্জয় পড়িয়ার কথায়, “দাবিদাওয়া নিয়ে সরব হয়েছি। তাতেই সরকারের কোপে পড়েছি। এ বার আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়ার কথা ভাবছি।” আন্দোলনকারী কয়েক হাজার সহকর্মীকে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে।বিষয়টি তাঁরা আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থাকে (আইএলও) লিখিত ভাবে জানিয়েছেন।
মিলনবাবু বলেছেন, “আড়শা থানার বাকি ২০৬ সিভিক পুলিশ কাজ পেলেও বাদ একমাত্র আমি। কেন, জানতে চাওয়ায় থানা থেকে শুধু বলা হয়, উপর থেকে অর্ডার এসেছে।” কাজ হারিয়ে মনোজ রজক বলেছেন, “সমাবেশে ছিলাম বলেই বোধহয় আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হল। কেন কাজ পাব না, তা জানতে চেয়ে ক’দিন আগে পুলিশ সুপারের অফিসে চিঠি দিলেও জবাব পাইনি।” মিলনবাবুদের আরও দাবি, ওই সমাবেশের ভিডিও ক্লিপিং রাজ্যের প্রতিটি থানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন থানার সহকর্মীদের তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেও বারণ করা হচ্ছে। জেলা তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন, এটা তাঁদের এক্তিয়ারের বাইরে।