শনিবার সকালেই সম্ভবত দিল্লি থেকে কলকাতা ফিরবেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়। কিন্তু সিবিআইয়ের দফতরে যাবেন কবে? সে প্রশ্নের উত্তর শুক্রবার মেলেনি। সিবিআই সূত্রে বলা হচ্ছে, মুকুলকে আপাতত যে সময় দেওয়া হয়েছে, সেই মোতাবেক তিনি ২১ তারিখের মধ্যে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে আসেন ভাল। না হলে তাঁকে ফের নোটিস পাঠানো হতে পারে।
সারদা কেলেঙ্কারি নিয়ে সিবিআইয়ের কাছ থেকে ডাক পাওয়ার পরে গত সোমবার দিল্লিতে বসে মুকুল বলেছিলেন, কলকাতায় ফিরেই তিনি সিবিআই দফতরে যাবেন। কিন্তু বুধবার শহরে এসে নবান্নে যাওয়ার পরেই তাঁর মত পাল্টে যায়। সিবিআই-কে চিঠি পাঠিয়ে পনেরো দিন সময় চান তিনি। কারণ দেখান বনগাঁ লোকসভা ও কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। সিবিআই তাঁকে সাত দিন সময় দেয়। ১৪ তারিখ দেওয়া সাত দিনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২১ তারিখ। ফলে ওই দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করা হবে বলে জানান সিবিআই আধিকারিকেরা।
সিবিআইয়ের কাছ থেকে সময় পেয়েই বৃহস্পতিবার ফের দিল্লি চলে যান মুকুল। সঙ্গে যান রাজ্যের আইন ও বিচারমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। কেন এই দিল্লি সফর তা নিয়ে শুরু হয় জল্পনা। তৃণমূল সূত্রেই বলা হয়, মূলত দু’টি কারণে রাজধানী গিয়েছেন মুকুল। এক, বিজেপি নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সিবিআই-কে ঠেকানো সম্ভব কি না, তা খতিয়ে দেখা। দুই, আইনি পথে সম্ভাব্য গ্রেফতার ঠেকানোর চেষ্টা করা।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহও এ দিন বর্ধমানের বড়নীলপুরে অমিত শাহের সভার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে গিয়ে বলেন, “সিবিআইয়ের তলব পেয়ে মুকুল রায় বাঁচার তাগিদে দিল্লি গিয়েছেন। প্রথমত, কোনও রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য। দ্বিতীয়ত, আইনগত ভাবে বাঁচার জন্য। আইনের দিক থেকে তিনি বাঁচবেন কি না, বলতে পারব না। কিন্তু কেউই তাঁকে আশ্রয় দেবে না।”
আইনি পথে যাওয়া হলে মুকুল নিজে মামলা করবেন, না রাজ্য সরকার মামলা করবে তা নিয়েও জল্পনা রয়েছে। নবান্নের একটি সূত্রের মতে, রাজ্য সরকারই আদালতের নজরদারিতে সিবিআই তদন্তের আর্জি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাবে। সেই জন্যই আইনমন্ত্রী দিল্লি গিয়েছেন। আজ, শনিবারই সেই মামলা দায়ের করা হতে পারে বলে ওই সূত্রের দাবি।
তবে সিবিআই সূত্রের ধারণা, ব্যক্তিগত ভাবে মামলা করতে পারেন মুকুলও। সেটা অবশ্য সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে নয়, আগাম জামিনের আবেদন জানিয়ে। ওই সূত্রটির মতে, ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬০ ধারায় নোটিস জারি করে মন্ত্রী মদন মিত্রকে যে দিন ডেকে পাঠানো হয়েছিল, সে দিনই গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। মুকুলকেও ওই একই ধারায় নোটিস পাঠানো হয়েছে। এই অবস্থায় মদনের উদাহরণ দেখিয়ে মুকুল আদালতে বলতে পারেন, তাঁকেও কয়েক ঘণ্টা জেরার পরে গ্রেফতার করা হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করছেন। অতএব তাঁকে আগাম জামিন দেওয়া হোক। মুকুল নিজে অবশ্য এ দিন এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।