অনিশ্চয়তার ভূত যেন কোনও মতেই স্কুল সার্ভিস কমিশনের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা (টেট)-র পিছু ছাড়তে চাইছে না!
পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে পঠনপাঠনের জন্য এসএসসি এ বার থেকে শিক্ষক নিয়োগের দু’টি পরীক্ষা নিচ্ছে। টেট এবং আরএলএসটি। দীর্ঘদিন ধরে জটিলতা চলছে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষক বাছাইয়ের জন্য স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর টিচার এলিজিবিলিটি টেস্ট বা টেট নিয়েই। কবে ওই পরীক্ষা হবে, তা নিয়ে জট তো আছেই। বিএড প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আর প্রশিক্ষণহীন দু’ধরনের প্রার্থীই এই পরীক্ষা দিতে পারবেন কি না, তা নিয়েও জটিলতা থেকে গিয়েছে। কমিশনের চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য বৃহস্পতিবার এ
কথা জানান।
এরই মধ্যে একটি বিষয়ে আশার কথা শুনিয়েছেন এসএসসি-প্রধান। দফায় দফায় মামলা হওয়ায় এবং ভোট এসে পড়ায় টেট অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ানোর শিক্ষক বাছাইয়ের পরীক্ষা আরএলএসটি কবে হবে, তারও ঠিক ছিল না। কমিশনের চেয়ারম্যান এ দিন জানান, আরএলএসটি-র ব্যাপারে শীঘ্রই নিয়মবিধি তৈরি হচ্ছে। সেটা সম্পূর্ণ হলেই ওই পরীক্ষা হবে।
কিন্তু তাতে টেটে বসতে ইচ্ছুক প্রার্থীদের উদ্বেগ কাটছে না। পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষক বাছাইয়ের পরীক্ষা প্রথমে হওয়ার কথা ছিল ৯ মার্চ। কিন্তু সর্বত্র সময়মতো ফর্ম না-পৌঁছনোয় পরে সিদ্ধান্ত হয়, ২৯ মার্চ ওই পরীক্ষা নেওয়া হবে। কিন্তু ২০ মার্চ একটি মামলার জেরে সেই পরীক্ষা ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। তার মধ্যেই শুরু হয়ে যায় লোকসভার দীর্ঘ ভোট পর্ব। পরীক্ষাও চলে যায় গভীর জলে। তার মধ্যেই বিজ্ঞাপনের ত্রুটি নিয়ে অন্য একটি মামলার জেরে হাইকোর্ট ফের স্থগিতাদেশ দেয় টেটের উপরে।
ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন বা এনসিটিই-র নিয়মবিধি অনুযায়ী চলতি বছরের ৩১ মার্চের পরে শিক্ষকতার প্রশিক্ষণহীন কোনও প্রার্থীকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করা যাবে না। এই সময়সীমা বাড়ানোর জন্য আবেদন জানিয়ে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু সেই চিঠির উত্তর আসেনি এখনও। এর মধ্যে ভোট পর্ব শেষ হয়ে কেন্দ্রে সরকারও বদলে গিয়েছে। মামলার পর মামলা, এনসিটিই-র বিধিনিয়ম, কেন্দ্রে সরকার বদল জটের জাঁতাকলে এসএসসি-র টেট।
সুবীরেশবাবু এ দিন বলেন, “মার্চের টেটের জন্য ছ’লক্ষেরও বেশি আবেদনপত্র জমা পড়েছিল। ওই সব আবেদনকারীর ৮০ শতাংশেরই বিএড নেই। ওই প্রার্থীরা পরীক্ষা দিতে পারবেন কি না, বোঝা যাচ্ছে না।”
২০১২ সালে এসএসসি শিক্ষক নিয়োগের জন্য যে-পরীক্ষা নিয়েছিল, তাতে সফল প্রার্থীদের শংসাপত্র দেওয়া হবে বলে জানান কমিশনের প্রধান। সেই শংসাপত্রের মেয়াদ হবে তিন বছর। এ ব্যাপারে বুধবারেই রাজ্য সরকারের অনুমোদন মিলেছে। এক লক্ষ ৭৩ হাজার প্রার্থী ওই শংসাপত্র পাবেন। কবে থেকে তাঁরা শংসাপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন, সেটা কমিশনের ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে বলে জানান চেয়ারম্যান।