ছবি: রয়টার্স।
ন’দিনে চার বার। ফের জঙ্গি হামলার কবলে আফগানিস্তান। এ বার হানা কাবুলের মিলিটারি অ্যাকাডেমির কাছে। যাতে ১১ জন সেনা প্রাণ হারিয়েছেন। মাত্র দু’দিন আগেই আফগানিস্তানের রাজধানী শহরে থাবা বসিয়েছে সন্ত্রাস। বিস্ফোরক ঠাসা অ্যাম্বুল্যান্সে জঙ্গি উড়িয়ে দেয় নিজেকে। একশোরও বেশি নিহত। সে ক্ষতে প্রলেপ পড়ার আগেই ফের ধাক্কা। এ দিনের হামলার দায় নিয়েছে আইএস।
সোমবার ভোরের আলো ভাল করে ফোটার আগেই স্থানীয় সময় ভোর চারটে নাগাদ মার্শাল ফাহিম মিলিটারি অ্যাকাডেমির কাছে একটি সেনাছাউনির প্রবেশপথে নিজেকে উড়িয়ে এক আত্মঘাতী জঙ্গি। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্র দৌলত ওয়াজিরি জানিয়েছেন, প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে পাঁচ জঙ্গি তাণ্ডব চালিয়েছে। প্রথম জঙ্গির পরে একই কায়দায় আর এক আত্মঘাতী জঙ্গি বিস্ফোরণ ঘটায়। ছিল আরও দু’জন, যারা আফগান ন্যাশনাল আর্মি-র গুলিতে নিহত হয়েছে। আর এক জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একের পর এক আত্মঘাতী বিস্ফোরণে আজ প্রাণ হারিয়েছেন ১১ জন সেনা। জখন আরও ১৬ জন। সেনা অফিসাররা জানান, জঙ্গিরা মই ব্যবহার করে সেনা ছাউনির ভিতরে ঢুকেছিল।
নিজেদের সংবাদমাধ্যম আমাক-এ এই হামলার দায় নিলেও দাবির সমর্থনে কোনও প্রমাণ দিতে পারেনি আইএস। তারা উল্টে দাবি করেছে, মিলিটারি অ্যাকাডেমিতেই হামলা চালানো হয়েছে। পরে আফগান সেনা বিষয়টি স্পষ্ট করে। আইএসের দাবি নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে যথেষ্ট। কারণ আফগানিস্তানের পাহাড়ি এলাকা নানগড়হর প্রদেশে আইএস ঘনিষ্ঠ জঙ্গিরা মূলত সক্রিয়। তাই কাবুলের হামলায় তাদের কতটা হাত রয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে।
মার্শাল ফাহিম ন্যাশনাল ডিফেন্স ইউনিভার্সিটি-র ভিতরে আরও দু’টি সেনা শিবির রয়েছে। তার মধ্যে একটি ন্যাটোর ঘাঁটি। সেখানে থাকেন অ্যাকাডেমির প্রশিক্ষকরা। গত বছর অক্টোবরেও কাবুলের এই এলাকার কাছাকাছি আত্মঘাতী হামলা হয়েছিল। অ্যাকাডেমির বাসে সে বার গাড়ি ভর্তি বিস্ফোরক নিয়ে চড়াও হয় আত্মঘাতী জঙ্গি। ১৫ জন সেনাকর্মী সে বার নিহত হন।
পর পর জঙ্গি হানায় চাপে প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি। আমেরিকার কঠোর জঙ্গিদমন নীতির জেরে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু প্রদেশ থেকে তালিবান জঙ্গিদের হটানো হয়েছে। কিন্তু তার পরে এই কয়েক দিনের মধ্যে পর পর হামলা সেই নীতিকে আলোচনায় ফিরিয়েছে। তালিবানের দাবি, কড়া মার্কিন নীতিতে মোটেই কোণঠাসা নয় তারা। শনিবার কাবুলের বিস্ফোরণও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি বার্তা বলে তারা জানিয়েছে। তালিবান মুখপাত্র জাইবুল্লা মুহাজিদ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘‘ট্রাম্প আর তাঁর লেজুড়দের বলছি, কড়া নীতি নিয়ে চললে আর বন্দুকের আবহে কথা বললে ভাববেন না আফগানরা ফুল ফোটাবে। যদিও মার্কিন সেনা জোট এবং আফগান সরকারের দাবি, সাধারণ মানুষের উপরে বড় মাপের হামলার অর্থ জঙ্গিরা বিপন্ন হয়েই বার বার সক্রিয়তা দেখাচ্ছে। কিন্তু আফগান প্রেসিডেন্টকে ঘিরে দেশে ক্ষোভ কমছে না।