এল ঐতিহাসিক মুহূর্ত, নোবেল পুরস্কার নিলেন অভিজিৎ ও এস্থার

স্টকহল্‌মের কনসার্ট হলে আনুষ্ঠানিক ভাবে  নোবেল পুরস্কার নিচ্ছেন অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর স্ত্রী এস্থার দুফলো।

Advertisement

সংবাদসংস্থা

স্টকহল্‌ম| শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৯ ২২:০৮
Share:

নোবেল পুরস্কারমঞ্চে অভিজিত্ বন্দ্যোপাধ্যায় ও এস্থার দুফলো।

অবশেষে এল সেই ঐতিহাসিক মুহূর্ত। স্টকহল্‌মের কনসার্ট হলে আনুষ্ঠানিক ভাবে নোবেল পুরস্কার নিলেন অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর স্ত্রী এস্থার দুফলো। চিরাচরিত বাঙালির সাজে এ দিন পুরস্কার নিতে এসেছিলেন অভিজিৎ-এস্থার দম্পতি। নোবেল কমিটির তরফে মঙ্গলবার অভিজিৎ-এস্থারের কাজের বর্ণনা দিয়ে বলা হয়, ‘‘দারিদ্র দূরীকরণের গবেষণায় অভিজিৎ-এস্থারের মডেলটি অভিনব। তাঁরা গবেষণাগার থেকে বেরিয়ে মিশেছেন সাধারণ মানুষের সঙ্গে। দারিদ্রের মূল কারণ কী, তা আরও গভীর ভাবে বুঝতে সাহায্য করেছে তাঁদের গবেষণা ।’’

Advertisement

এ দিন ভারতীয় সময় রাত ন’টা নাগাদ অভিজিৎ-এস্থারের হাতে পুরস্কার তুলে দেয় সুইডিশ নোবেল কমিটি। এই গৌরবময় মুহূর্তের সাক্ষী হতে স্টকহল্‌মে হাজির ছিলেন অভিজিতের মা নির্মলা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ভাই অনিরুদ্ধও। অভিজিৎদের কর্মকাণ্ডের ভূয়সী প্রশংসা করে নোবেল কমিটি পুরস্কার প্রদানের মুহূর্তে বলে, ‘‘গত দুই দশকে বিশ্ব জুড়ে জীবনযাপনের উন্নতি হয়েছে। তবে রয়ে গিয়েছে বহু বাধাও। আজও বহু শিশু স্কুলছুট হয়ে যায় উন্নয়নশীল দেশগুলিতে। বহু শিশু মারা যাচ্ছে এমন রোগে যা সহজেই প্রতিকার সম্ভব। আজও বহু কৃষক জৈব সার ব্যবহার করতে পারেন না যা তাঁদের পক্ষেই লাভজনক হতে পারত। অভিজিৎরা এই প্রশ্নগুলির উত্তর খুঁজেছেন পরীক্ষামূলক পদ্ধতিতে। দারিদ্রের চরিত্রসন্ধান করেছেন ব্যক্তি হিসেবে দরিদ্রদের বিভিন্নতার কথা মাথায় রেখে। অভিজিৎ-এস্থাররা হাতেকলমে অনুসন্ধান চালিয়েছেন পরিমাণগত পদ্ধতির ওপর নির্ভর করে (কোয়ান্টিটিটিভ মেথড)। ’’

অভিজিদের গবেষণার ধরনকে ‘ক্যানসারের প্রতিকার অনুসন্ধানের মতো জরুরি’ বলেও ব্যখ্যা করা হয় এ দিন। নোবেল কমিটি মনে করিয়ে দেয়, অভিজিৎ-এস্থারের গবেষণার ‘এক্সপেরিমেন্টাল অ্যাপ্রোচ’ কয়েক কোটি মানুষের কাজে আসতে পারে।

Advertisement

আরও পড়ুন:ধুতি আর শাড়িতে হাজির অভিজিৎ-এস্থার, নোবেল মঞ্চে চাঁদের হাট
আরও পড়ুন:শোভনের ওয়ার্ড পরিদর্শনে ডেপুটি মেয়র অতীন, ড্রোন দিয়ে ধ্বংস করা হল মশার আঁতুর

অভিজিৎ-এস্থাররা তাদের গবেষণায় ‘র‌্যান্ডমাইজ়ড কন্ট্রোল ট্রায়াল’ ব্যবহার করেছিলেন। তাঁরা বেছে নেন দুটো কার্যত একই রকম জনপদ বা জনগোষ্ঠী, যাদের বৈশিষ্ট্য এক, সমস্যাও এক। একটা জনগোষ্ঠীতে তাঁরা চালু করেন কিছু নতুন ব্যবস্থা, আর অন্যটা চলতে থাকে আগের মতোই। নির্দিষ্ট সময় পর তাঁরা পরিসংখ্যান বিচার করে দেখেন, যে সমস্যার সমাধান খুঁজছিলেন, সেটা পাওয়া গেল কি না। পাকা চাকরির বদলে চুক্তিতে শিক্ষক নিলে কি বাচ্চাদের শিক্ষার মানে উন্নতি ঘটে? এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার জন্য বেছে নিতে হয় একই রকম অনেকগুলো স্কুল। তার কয়েকটাকে আগের মতোই চলতে দিতে হয়, আর বাকিগুলোয় নতুন পদ্ধতিতে শিক্ষক নিয়োগ করতে হয়। দুই দলের স্কুলে ছাত্রদের শেখার মানের তুলনা করলেই বোঝা যায়, কোন পদ্ধতিটা বেশি কার্যকর। এটাই । চিকিৎসাশাস্ত্রে বহুলব্যবহৃত এই আরসিটি পদ্ধতিকে অর্থশাস্ত্রে নিয়ে আসার কৃতিত্ব অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়দের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন