ইয়েমেনে বিমান হানায় নিহত ৪১

মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে মৃতদের পরিচয় নিয়ে তৈরি হয়েছে ধন্দ। এরা সত্যিই জঙ্গি নািক সাধারণ মানুষ, প্রশ্ন উঠছে তাই নিয়ে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

সানা শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৭ ০২:৪০
Share:

বলি: সানার হোটেলে আটকে এক নিহতের দেহ। ছবি: এএফপি।

হুথি জঙ্গিদের হটানোর লক্ষ্যে চলছিল অভিযান। ইয়েমেনের রাজধানী সানার কাছে বুধবার ভোররাত তিনটে নাগাদ একটি হোটেলের উপরে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনীর সেই বিমান হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৪১ জন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে মৃতদের পরিচয় নিয়ে তৈরি হয়েছে ধন্দ। এরা সত্যিই জঙ্গি নাকি সাধারণ মানুষ, প্রশ্ন উঠছে তাই নিয়ে।

Advertisement

সানায় দুই বিদ্রোহী গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব বহু দিন ধরেই। এক দিকে রয়েছে উত্তরের শিয়া যোদ্ধা, যারা পরিচিত হুথি জঙ্গি হিসেবে। আর হুথিদের সঙ্গে লড়াই চলে গদিচ্যুত প্রেসিডেন্ট আলি আবদুল্লা সালেহর অনুগামীদের। এই দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে দীর্ঘ দিন ধরে উত্তপ্ত সানা। বিদ্রোহীরা ২০১৫-র গোড়া থেকে সানার উপরে নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন সানা থেকে ৩৫ কিলোমিটার উত্তরে আরহাব শহরের দো’তলা ওই হোটেলে হামলা চালিয়েছে যুদ্ধবিমান। হোটেল থেকে কিছু দূরে হুথি নিয়ন্ত্রিত চেকপয়েন্টেও পরে বিমান হামলা চলেছে বলে সূত্রের খবর। কিন্তু হোটেলের ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে একের পর এক যাদের দেহ উদ্ধার হচ্ছে, তারা কারা? ডাক্তারদের দাবি, এরা মূলত সাধারণ কৃষক। কিন্তু সরকারি সূত্রে দাবি, মৃতদের মধ্যে বেশির ভাগই হুথি জঙ্গি। ওই জঙ্গি-গোষ্ঠী নিয়ন্ত্রিত সংবাদসংস্থা আল-মাশিরা টিভি চ্যানেলের ফুটেজে দেখা গিয়েছে, হোটেলের ভিতরে এক এক জায়গায় ঝুলছে মৃতদেহ। আশপাশ থেকে কম্বলে মুড়ে কেউ কেউ সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন বিকৃত সব দেহ। আল-মাশিরার দাবি, ৩০ জনেরও বেশি ‘বিদ্রোহী’ প্রাণ হারিয়েছে।

Advertisement

আর এক সূত্রে দাবি মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬০ ছুঁতে পারে। উদ্ধারকাজে যোগ দেওয়া চিকিৎসক আলি আল-রাকমি বলেছেন, হামলার সময়ে হোটেলে একশোরও বেশি মানুষ ছিলেন। তিনি নিজে ৩৫টি দেহ উদ্ধারের কাজ তত্ত্বাবধান করেছেন। কাছাকাছি হাসপাতাল উমরা-র প্রধান ফাদ মারহাবের দাবি, বিমান হানায় কেউই বেঁচে নেই। এমন নানা পরস্পর-বিরোধী বয়ান উঠে আসছে।

সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট হুথিদের উৎখাত করতে জোর অভিযান চালাচ্ছে। ২০১৬-র প্রথমার্ধে যত হামলা হয়েছে, এ বছর শুধু গত সপ্তাহে ইয়েমেনে তার চেয়েও বেশি বিমান হানা চলেছে, এমনটাই দাবি মানবাধিকার সংগঠনগুলির। স্কুল, হাসপাতাল, বাজার— কিছুই বাদ নেই হামলা থেকে। সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তুলছে মানবাধিকার সংগঠনগুলি। সরব রাষ্ট্রপুঞ্জ ও ব্রিটেনও। টানা সংঘর্ষ ও হামলায় দশ হাজারেরও বেশি সাধারণ মানুষ মারা গিয়েছেন। আশ্রয়হীন ৩০ লক্ষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন