International News

পচে গিয়েছে পা, খাচ্ছে পোকায়, আমেরিকায় উদ্ধার মহিলা

পায়ে পচন ধরে গিয়েছে। পোকায় খেতে শুরু করেছে। আমেরিকায়, উত্তর জর্জিয়ার একটি বাড়ি থেকে গত সপ্তাহে এ ভাবেই উদ্ধার করা হল ট্রেসি সোরেলসকে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৮ ১৩:১৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

আবর্জনায় ভরে গিয়েছে সবক’টি ঘর। দেওয়াল বেয়ে ঘুড়ে বেড়াচ্ছে আরশোলা। চার পাশে মল-মূত্র ছড়ানো। তারই মাঝে পুতিগন্ধময়, নোংরা প্লাস্টিকের মধ্যে শুয়ে রয়েছেন এক মধ্যবয়সী স্থূলকায়া মহিলা। নড়তে-চড়তে পারছেন না। পায়ে পচন ধরে গিয়েছে। পোকায় খেতে শুরু করেছে। আমেরিকায়, উত্তর জর্জিয়ার একটি বাড়ি থেকে গত সপ্তাহে এ ভাবেই উদ্ধার করা হল ট্রেসি সোরেলসকে। পঙ্গু এবং বয়স্কদের অবহেলার আইনে ট্রেসির স্বামী ও ছেলেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Advertisement

জর্জিয়ার গিনেট কাউন্টি পুলিশ জানিয়েছে, আটলান্টা থেকে প্রায় ৪০ মাইল দূরে বুফোর্ডে পঞ্চাশোর্ধ ট্রেসির বাড়ি। দমকল বাহিনীর একটি ফোনের মাধ্যমে খবর পেয়ে গত সপ্তাহে বৃহস্পতিবার সেখানে পৌঁছয় উদ্ধারকারী দল। সেখান থেকেই ট্রেসিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

ট্রেসির শারীরিক অবস্থা দেখে রীতিমতো শিউরে উঠেছে পুলিশ। প্রশাসনের মতে, ট্রেসির দেখাশোনায় কোনও ভাবেই দায়িত্ব এড়াতে পারেন না তাঁর স্বামী টেরি সোরেলস এবং তাঁদের কিশোর ছেলে ক্রিশ্চিয়ান। ওই দু’জনকে গ্রেফতারের পর তাঁদের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় আদালত। সেই সঙ্গে ২২,২০০ মার্কিন ডলার করে জরিমানাও দিতে হবে তাঁদের। যদিও নিজেদের ‘দোষ’ স্বীকার করতে রাজি নন তাঁরা। ১৮ বছরের ক্রিশ্চিয়ান জানিয়েছেন, বছর দুয়েক ধরেই শয্যাশায়ী তাঁর মা ট্রেসি। দিনকে দিন তাঁর মায়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে। ক্রিশ্চিয়ানের দাবি, বাবা এবং সে— দু’জনেই যথাসম্ভব মায়ের দেখাশোনা করেন। তবে কারও কোনও চাকরি না থাকায় খুবই কষ্ট করে সংসার চালাতে হয়।

Advertisement

আরও পড়ুন
প্রকাশ্যে ফেসবুক ছাড়িয়ে লাভ কার

কারণ যা-ই হোক না কেন, স্থানীয় প্রশাসনের মতে, অত্যন্ত শোচনীয় অবস্থায় ছিলেন ট্রেসি।

কতটা শোচনীয়? উদ্ধারকারী দলের এক সদস্য তাঁর রিপোর্টে লিখেছেন, “বাড়ির দরজা খুলে ঘরে ঢুকতেই প্রথমেই নাকে এল মল আর আবর্জনার তীব্র গন্ধ। লিভিং রুমেই রাখা ছিল রোগীর বিছানা। প্লাস্টিকে মোড়া। তাতে মল আর কোনও অজানা তরলে ভরা। কিচেন পর্যন্ত গোটা মেঝেতে চড়ানো আবর্জনার স্তূপ। কিচেনের ভিতরটাও নোংরা আবর্জনায় ভরে গিয়েছে। প্রায় ছাদ পর্যন্ত উঠে গিয়েছে আবর্জনা। বাথরুমেও ছড়ানো রয়েছে নোংরা। প্রতিটি ঘরের দেওয়াল বেয়ে অসংখ্য আরশোলা ঘুরে বেড়াচ্ছে। বাবার ঘরে ঢুকে দেখা গেল, প্রায় দু’ফুট লম্বা একটি এনার্জি ড্রিংকের ক্যান রয়েছে। সে ঘরের ভিতরটাও ডুবে রয়েছে আবর্জনায়। বিছানায় কোন চাদর নেই। ছেলে ক্রিশ্চিয়ানের ঘরেরও প্রায় একই অবস্থা। একটা টেবল আর কম্পিউটার রয়েছে বটে। কিন্তু টেবলের খানিকটা বাদ দিয়ে সেখানেও ভরে উঠেছে নোংরায়।”

আরও পড়ুন
ঘরশত্রুই ঘা দিল জুকেরবার্গকে

উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা জানিয়েছেন, ট্রেসির পায়ের অংশে পচনের ফলে তা পুরোপুরি কালো হয়ে গিয়েছে। উদ্ধারের সময় দেখা গিয়েছে, তাতে আরশোলা আর পোকামাকড় ঘুরে বেড়াচ্ছে। এমনকী, তাঁর পায়ের মাংস খেতে শুরু করেছে পোকারা। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও ট্রেসি কত দিন বাঁচবেন, তা নিয়ে সন্দিহান চিকিত্সকরা!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন