রূপকথার গল্পের মতো একদিন গুপ্তধনের খোঁজ পেয়ে গেলে কী করবেন ভেবেছেন কখনও? ধরুন, সোনা-রূপা, মণি-মাণিক্য-সহ সে এক এলাহি ব্যাপার। তবে, রূপকথা নয়, বাস্তবে এমন ঘটনাই কিন্তু ঘটেছে। হিরে-জহরত ঠাসা গুপ্তধনের ‘কলস’ হাতে পেয়ে গিয়েছেন এক দম্পতি। তারপর কী করলেন তাঁরা?
ঘটনাটি নিউ ইয়র্কের স্টেটেন আইল্যান্ডের। বাড়ির পিছনের বাগান পরিষ্কার করতে গিয়ে হঠাত্ই একদিন গুপ্তধন খোঁজ পেলেন ম্যাথিউ ও তাঁর স্ত্রী মারিয়া কলোনা ইমানুয়েল। বিপুল সম্পদ পেয়ে উচ্ছ্বসিত ম্যাথিউ বলেছেন, “ভাবা যায় না। ছেলেবেলার স্বপ্ন যেন সত্যি হল।’’ ঘটনাটি ঠিক কী?
স্টেনের আইল্যান্ডে নিজেদের ছোট্ট বাগান বাড়ি রয়েছে ইমানুয়েল দম্পতির। বাগানের পিছনের অংশ খোলা, তাই প্রায়ই হরিণ এসে পাতা খেয়ে গাছপালা ভেঙে রেখে যায়। দিনকয়েক আগে বাগানে নতুন গাছ লাগাবেন বলে মাটি খোঁড়াখুঁড়ি করছিলেন তাঁরা। সেই সময় হাতে শক্ত ধাতব কিছু ঠেকে। খানিকটা মাটি সরিয়ে বুঝতে পারেন ধাতব জিনিসটা আসলে একটা বাক্স।
মাটি খুঁড়ে দম্পতি দেখেন একটা পুরনো মরচে ধরা বাক্স। ম্যাথিউ জানিয়েছেন, দেখে মনে হয়েছিল কেব্লের বাক্স। সাবধানে বাক্স খুলতেই দম্পতির চোখ কপালে। বাক্সের ভিতর উপচে পড়ছে টাকা, সোনা-হিরে-জহরত। সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে ম্যাথিউ-মারিয়া বলেছেন, নগদ ৩৫ লক্ষ টাকার সঙ্গে অনেক আংটি, গয়না, দামি পাথরও ছিল বাক্সটির মধ্যে।
‘গয়নার বাক্স’ নিয়ে কী করলেন দম্পতি? মারিয়ার কথায়, “সম্পত্তি পেয়ে খুশি হয়েছিলাম ঠিকই, কিন্তু জানতাম সেটা আমাদের নয়। কী করব ভাবতে গিয়ে বাক্সের মধ্যে একটি চিরকুটে ঠিকানা খুঁজে পাই। সেটা আমাদেরই এক প্রতিবেশীর।’’ ২০১১ সালে ওই প্রতিবেশীর বাড়িতে ডাকাতি হয়ে বিপুল সম্পত্তি লুঠ হয়, বাক্সটি তারই মধ্যে একটি। এমনটাই জানিয়েছেন ম্যাথিউ।
না, বাক্সের একটা কানাকড়িও নিজেদের কাছে রাখেননি মারিয়া-ম্যাথিউ। সবটাই তুলে দিয়েছেন তাঁদের ওই প্রতিবেশীর হাতে। হারানো ধন ফিরে পেয়ে বিস্ময়ে হতবাক ওই প্রতিবেশীও। সম্পত্তি হাতছাড়া করলেন কেন? পাড়া-প্রতিবেশীদের প্রশ্নের উত্তরে দম্পতির জবাব, “আমাদের এই ভাল কাজই আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পত্তি।’’