Big and Beautiful Bill

আমেরিকায় আয় করে দেশে টাকা পাঠাতে ১% কর লাগবে, ট্রাম্পের ‘বড় ও সুন্দর’ আইন কী কী পরিবর্তন আনতে চলেছে

দ্বিতীয় বার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই ট্রাম্পের ‘এজেন্ডার’ কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল এই কর এবং ব্যয় সংক্রান্ত অর্থবিল। সেই বিল পাশ করাতে বার বার বাধার মুখে পড়তে হয় মার্কিন প্রেসিডেন্টকে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৫ ১৫:৪৪
Share:

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।

বিতর্ক, হইহট্টগোলের মধ্যেই আমেরিকায় পাশ হয়ে গিয়েছে ‘বড় এবং সুন্দর বিল’! মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই স্বপ্নের বিল শুক্রবার থেকে আইনে পরিণত হয়েছে। মার্কিন কংগ্রেসের দুই কক্ষে বিল পাশ হয়ে যাওয়ায় ‘বড়’ জয় পেলেন ট্রাম্প। আর ট্রাম্পের এই জয়ে কেউ খুশি হলেন, কারও কারও আবার মাথায় হাত!

Advertisement

দ্বিতীয় বার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই ট্রাম্পের ‘এজেন্ডার’ কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল এই কর এবং ব্যয় সংক্রান্ত অর্থবিল। সেই বিল পাশ করাতে বার বার বাধার মুখে পড়তে হয় মার্কিন প্রেসিডেন্টকে। ঘরে-বাইরে প্রশ্নের মুখেও পড়েন। তবে এই বিল নিয়ে নিজের অবস্থানে অনড় ছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার আমেরিকার আইনসভার নিম্নকক্ষ হাউস অফ রিপ্রেজ়েন্টিটিভসে পাশ হয়ে যায় বিলটি। মার্কিন আইনসভা বা কংগ্রেসের উচ্চ কক্ষ সেনেটে বিলটি অনুমোদন পেয়েছে। দুই কক্ষে পাশ হওয়ার পর বিলে সই করতে চলেছেন ট্রাম্প!

শুক্রবার থেকে কার্যকর হওয়া ‘বড় এবং সুন্দর’ বিলে যেমন কিছু ক্ষেত্র উপকৃত হবে, আবার কোনও কোনও ক্ষেত্রে তা শঙ্কারও কারণ!

Advertisement

ব্যবসায়ী, নির্মাতারা এই বিল নিয়ে খুশি। ট্রাম্প তাঁর প্রথম মেয়াদে ২০১৭ সালে ‘কর এবং চাকরি আইনে’ সই করেছিলেন। এই আইনের ফলে চাকুরিজীবীদের আয়ের উপর কর কমানো হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই আইন থেকে ধনী আমেরিকানেরা বেশি উপকৃত হবেন! শুক্রবার থেকে কার্যকর হওয়া আইনে পুরনো নিয়ম বলবৎ থাকছে। মেয়াদ বাড়ছে।

স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বড় পরিবর্তন করা হয়েছে। পরিবর্তনগুলির মধ্যে অন্যতম বিলে নিম্ন আয়ের ব্যক্তি এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ফেডারেল স্বাস্থ্যবিমা কর্মসূচি থেকে বিপুল অর্থ ছাঁটাইয়ের প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। বিলে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য কভারেজের আওতায় যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। এ ছাড়াও আগে আমেরিকার ‘মেডিকেড’ বছরে এক বার পুনঃনথিভুক্ত করতে হত। এ বার থেকে ছ’মাস অন্তর নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করে পুনঃনথিভুক্ত করতে হবে আবেদনকারীদের। ফলে ইতিমধ্যেই ওই বিল নিয়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে আমেরিকা জুড়ে।

তা ছাড়া এই বিল কার্যকর হলে অভিবাসন, সীমান্ত নিরাপত্তা এবং প্রতিরক্ষা খাতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অগ্রাধিকারমূলক পরিকল্পনায় প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান করা সহজ হয়ে যাবে। আমেরিকায় যে সব ব্যক্তির আয় টিপ্‌স বা ওভারটাইমের উপর নির্ভর করে, তাঁদের অতিরিক্ত কর প্রদানের আওতা থেকে বাদ রাখা হয়েছে।

ট্রাম্পের এই বিল প্রভাব ফেলতে পারে ভারতীয় অর্থনীতিতেও। ‘রেমিট্যান্সের’ উপর করের হার হ্রাস— এই বিলের অন্যতম বিষয়। বিলের মূল প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, ‘রেমিট্যান্সের’ উপর করের হার পাঁচ শতাংশ ধার্য করা হয়েছিল। পরে তা কমিয়ে সাড়ে তিন শতাংশ এবং চূড়ান্ত সংস্করণে তা মাত্র এক শতাংশ রাখা হয়েছে! এর ফলে আমেরিকায় বসবাসকারী ভারতীয়দের মতো অভিবাসীরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন।

ভারতীয় বা অন্য দেশের নাগরিক নিজের দেশের বাইরে চাকরি করে যে অর্থ দেশে পাঠান, তাকেই ‘রেমিট্যান্স’ বলা হয়। আমেরিকার নাগরিক নন, অথচ কর্ম বা ব্যবসা সূত্রে যাঁরা সেই দেশে থাকেন, তাঁরা নয়া কর কাঠামোর আওতায় পড়বেন। বিলে প্রস্তাব, মার্কিন নাগরিক নন, এমন ব্যক্তিরা যদি আমেরিকায় উপার্জিত টাকা নিজের দেশে পাঠাতে চান, তবে তার উপর এক শতাংশ কর গুণতে হবে। করের পরিমাণ কমায় খুশি ‘গ্রিন কার্ড’ বা ‘এইচ১বি’ ভিসা নিয়ে আমেরিকায় কাজ করা ভারতীয়েরা।

নগদ, মানি অর্ডার বা ক্যাশিয়ার চেকের মাধ্যমে যাঁরা আমেরিকা থেকে নিজের দেশে টাকা পাঠান, তাঁরাই কেবল নতুন কর ব্যবস্থার আওতায় আসবেন। কোনও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা পাঠানোয় কর ছাড় দেওয়া হয়েছে।

ভারতের বৈদেশিক আয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হল ‘রেমিট্যান্স’। বিশ্বব্যাঙ্ক এবং ভারতীয় রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের দেওয়া পরিসংখ্যান বলছে, ভারত শুধুমাত্র ২০২৪ সালেই প্রায় ১২৯০০ কোটি ডলার (১১ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি) ‘রেমিট্যান্স’ পেয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement