নওয়াজ শরিফ
পানামা নথি ফাঁস হওয়ার পর থেকেই যথেষ্ট বিব্রত তিনি। সেই বিড়ম্বনা আরও কয়েকগুণ বাড়ল এ বার। মার্কিন পণ্য কেনা-বেচার সাইট ই-বেতে সরাসরি নিলামে তোলা হয়েছে পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে। শরিফের ছবি-সহ সেই বিজ্ঞাপনের শিরোনাম, ‘অপ্রয়োজনীয় পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী বিক্রিতে’। যিনি এই অদ্ভূত বিজ্ঞাপনটি দিয়েছেন, তাঁর নাম-পরিচয় অবশ্য জানা যায়নি এখনও পর্যন্ত। বিষয়টি নিয়ে হইচই শুরু হওয়ার পরপরই অবশ্য নিজেদের সাইট থেকে বিজ্ঞাপনটি সরিয়ে দিয়েছে ই-বে।
পণ্যটি কী রকম, তার ব্যাখ্যা থাকে শিরোনামের নীচে। তাতে আবার লেখা, ‘‘ব্যবহৃত দ্রব্য। তবে এখন কোনও কাজে লাগে না। ক্রেতাকেই নিজ দায়িত্বে এই পণ্য নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। বিক্রেতা তাতে হাতও দেবে না। আজই মধ্য লন্ডন থেকে কিনতে পারা যাবে।’’
শরিফ নিজে আপাতত লন্ডনে রয়েছেন। আর সেই সুযোগটি কাজে লাগিয়েই ওই মার্কিন সাইটে বিজ্ঞাপনটি দেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। বিজ্ঞাপনে ‘পণ্যকে’ লন্ডন থেকেই কেনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বিজ্ঞাপনটিতে যতই মজা করা হোক না কেন, কেউ কেউ আবার সেটিকেই যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখেছেন। ই-বে বিজ্ঞাপনটি সরিয়ে নেওয়ার আগেই মোট ১২ জন ক্রেতা একশোরও বেশি বার দর হেঁকেছেন সাইটে। এবং শেষ হাঁকা পণ্যের দর উঠেছিল ৬৬ হাজার দু’শো পাউন্ড। ভারতীয় মূল্যে যার পরিমাণ ৬২ লক্ষের কাছাকাছি।
শুধু নওয়াজই নন। নওয়াজের ভাই শাহবাজ শরিফের উদ্দেশেও যথেষ্ট বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ। সেই সঙ্গেই লেখা হয়েছে, ‘‘এই পণ্যের গোটা পরিবারেরই জিনগত ত্রুটি রয়েছে। এরা পুরোপুরি দুর্নীতিগ্রস্ত।’’ গোটা বিজ্ঞাপনটি দেখে অনেকেই মনে করছেন, পানামা নথিতে শরিফও তাঁর পরিবারের নাম জড়ানোতেই বীতশ্রদ্ধ হয়ে এই অদ্ভূত বিজ্ঞাপন পোস্ট করেছেন ওই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি।
সপ্তাহ খানেক আগে পানামা নথি ফাঁস হওয়ায় হইচই পড়ে গিয়েছিল বিশ্ব জুড়ে। সারা দুনিয়ার তাবড় ধনী ব্যক্তিরা লুকিয়ে চুরিয়ে বিদেশি সংস্থায় কী ভাবে অর্থ রাখেন, তার বিস্তারিত বর্ণনা ছিল সেই নথিতে। সেই তালিকাতেই ছিল নওয়াজ শরিফ ও তাঁর তিন সন্তানের নাম। পাক প্রধানমন্ত্রী অবশ্য প্রথম থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছেন। নওয়াজের দাবি, তাঁর বা তাঁর পরিবারের কেউই কোনও বিদেশি সংস্থায় বেআইনি ভাবে অর্থ রাখেননি। পুরোটাই তাঁর বিরুদ্ধে একটা বড়সড় চক্রান্ত।