International News

নাৎসি কায়দায় বন্দি নিধন সিরিয়ার জেলে! অভিযোগ আমেরিকার

মার্কিন বিদেশ দফতরের অভিযোগ, একেবারে নাৎসিদের কায়দাতেই গণহত্যা চালানো হচ্ছে দামাস্কাসের একটি জেলে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৭ ১৭:২২
Share:

সেই জেল। যেখান থেকে বেরিয়ে আসছে আগুনের ধোঁয়া।

সেটা ছিল গ্যাস চেম্বার। আর এটা জেলের মধ্যে বানানো একটা গণকবর স্থান! যেখানে রোজ বন্দিদের দলে দলে খুন করে তদের দেহগুলি পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে! আগুনে ঝলসে যাওয়া বন্দিদের শরীরগুলিকে গোপনে পুঁতে দেওয়া হচ্ছে সেই কবরে!

Advertisement

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে জার্মানিতে গ্যাস চেম্বারে ঢুকিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষকে খুন করেছিল নাৎসিরা। আর এই একুশ শতকে দামাস্কাসের জেলের মধ্যেই রোজ প্রায় ৫০ জন করে বন্দিকে মেরে পুড়িয়ে দিচ্ছে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আসাদের সরকার। নির্বিচারে, গোপনে।

মার্কিন বিদেশ দফতরের তরফে সোমবার এই অভিযোগ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, একেবারে নাৎসিদের কায়দাতেই গণহত্যা চালানো হচ্ছে দামাস্কাসের ওই জেলে। রীতিমতো উদ্বেগ প্রকাশ করে মার্কিন বিদেশ দফতরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘এটাই প্রমাণ করছে, দুই সহযোগী রাশিয়া আর ইরানের মদতে কী ভাবে অমানুষিক অত্যাচার চালাচ্ছে সিরিয়া সরকার।’’

Advertisement

সোমবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে তাদের বক্তব্যের সমর্থনে উপগ্রহের পাঠানো ছবি বিলি করা হয়েছে মার্কিন বিদেশ দফতরের তরফে। সেই সব ছবিতে দেখা যাচ্ছে, জেলের মধ্যে কয়েকটা বাড়ির ছাদে জমা বরফের পুরু স্তর গলে যাচ্ছে। মার্কিন বিদেশ দফতরের বক্তব্য, জেলে বন্দিদের যে রোজ মেরে পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে তাদের দেহগুলি, সেই আগুনেই গলে যাচ্ছে ওই বাড়িগুলির ছাদে জমা বরফের পুরু স্তর।


জেলের যে বাড়িটির ছাদে জমা বরফ গলে যাচ্ছে, তার এই ছবি পাঠিয়েছে উপগ্রহ

মার্কিন বিদেশ দফতরের ব্যুরো অফ নিয়ার ইস্টার্ন অ্যাফেয়ার্স বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি স্টুয়ার্ট জোন্স বলেছেন, ‘‘২০১৩ সাল থেকেই উত্তর দামাস্কাসের ওই সামরিক জেলের ভেতরে সইদনায়া কমপ্লেক্সটি বানানোর কাজ শুরু হয়। ওই কমপ্লেক্সটি আদতে একটি গণকবর স্থান বলেই মনে হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট আসাদের জমানায় যে হাজারে হাজারে মানুষকে খুন করা হচ্ছে, এটা তারই প্রমাণ। গোটা বিশ্ব যাতে তা জানতে না পারে, তাই ওই জেলের মধ্যে গোপনে, লুকিয়েচুরিয়ে এই ভাবে মেরে পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বন্দিদের দেহগুলি।’’

সিরিয়ায় ঠিক কত জন মানুষকে প্রেসিডেন্ট আসাদের জমানায় এই ভাবে মারা হয়েছে, মার্কিন বিদেশ দফতরের ব্যুরো অফ নিয়ার ইস্টার্ন অ্যাফেয়ার্স বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি স্টুয়ার্ট জোন্স অবশ্য সেই সংখ্যাটা স্পষ্ট করে বলেননি। তবে তিনি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের একটি রিপোর্টের উল্লেখ করেছেন। যে রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১১ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে ৫ থেকে ১১ হাজার মানুষকে সিরিয়ার জেলগুলিতে খুন করা হয়েছে। একটাই অপরাধ, তাঁরা প্রেসিডেন্ট আসাদের জমানার বিরোধিতা করেছিলেন।

আরও পড়ুন- নরমাংস দেওয়ার ভুয়ো খবরে বন্ধের মুখে লন্ডনের ভারতীয় রেস্তোরাঁ

তবে মার্কিন সংবাদমাধ্যমেরই একাংশ বলছে, অ্যামনেস্টির ওই রিপোর্ট বেশ কয়েক মাসের পুরনো। ওয়াশিংটন তার নিজের গোয়েন্দা রিপোর্ট দিতে পারেনি।

অ্যামনেস্টির তরফে বলা হয়েছে, ‘‘ঠিকই, ওই রিপোর্টে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত হিসেব নেওয়া হয়েছিল। তবে তার পর ওই সংখ্যাটা নিশ্চয়ই আরও বেড়েছে।’’

আরও পড়ুন- ‘জোনাকি’ ব্যাকটেরিয়ারাই এ বার খুঁজে দিতে পারবে ল্যান্ডমাইন!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন