—প্রতীকী চিত্র।
আলফা (স্বাধীন)-এর প্রধান পরেশ বড়ুয়া বাংলাদেশে রয়েছেন এবং খোদ ঢাকা শহরে বসেই তিনি তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করছেন বলে গোয়েন্দা সূত্রের খবর। ওই সূত্রটির দাবি, এত দিন মায়ানমারে গা ঢাকা দিয়ে থাকা পরেশের কাজকর্ম চালাতে অসুবিধা হচ্ছিল। তাই ফের বাংলাদেশের মাটিতে হাজির হয়েছেন এই আলফা নেতা। তাঁকে সব রকমের সহায়তা করছেন জামায়াত ইসলামী ঘনিষ্ঠ, তীব্র ভারত-বিরোধী প্রাক্তন বাংলাদেশি সেনা অফিসারেরা।
বাংলাদেশের জামাত নেতারা এবং তাঁদের ঘনিষ্ঠ প্রাক্তন সেনাঅফিসারেরা দেশে পালাবদলের পর থেকেই বলে আসছেন, ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলি তাঁদের লক্ষ্য। উত্তর-পূর্ব ভারতকে অশান্ত করে তাঁদের ‘অস্ত্র’ হতে পারেন পরেশ বড়ুয়া। ভারতের গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, গত সপ্তাহে বাংলাদেশে ঢুকেছেন ওই আলফা নেতা। এত দিন তিনি ছিলেন চিন সীমান্ত লাগোয়া মায়ানমারের তেনচং গ্রামে। বাংলাদেশের ডিজিএফআইয়ের এক মেজর পদমর্যাদার অফিসারের মাধ্যমে তিনি টেকনাফ এলাকায় সীমান্ত পার করে সে দেশে প্রবেশ করেন বলে সূত্রটির দাবি। সেই সূত্রটি জানাচ্ছে, চট্টগ্রামে তিন-চার দিন ‘সেফ হাউস’-এ রাখা হয় পরেশকে। দিন তিনেক আগে তিনি ঢাকায় এসেছেন। ডিফেন্স অফিসার হাউজিং স্কিমে, রোড নম্বর ৫-এ পরেশ আছেন বলেই খবর। সূত্রের খবর, পরেশ চট্টগ্রামে থাকাকালীন জামাত ঘনিষ্ঠ প্রাক্তন সেনা অফিসার রেজাউল হায়দার করিম তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন।ঢাকায় আসার পরেও তাঁর সঙ্গে করিমের ফের বৈঠক হয়েছে। ২০০৪ সালে চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র ও গোলাবারুদ আটকের ঘটনায় পরেশ এবং রেজাউল জড়িত ছিলেন। তাঁদের দু’জন সখ্য বহু দিনের।
রেজাউল ছাড়াও ঢাকায় পরেশের সঙ্গে বৈঠক করেছেন গোলাম আজমের ছেলে প্রাক্তন সেনা অফিসার আবদুল্লাহিল আমান আজমি। এই আজমিই সম্প্রতি জানিয়েছিলেন, ভারত টুকরো টুকরো না হলে তারা বাংলাদেশকে শান্তিতে থাকতে দেবে না। শুধু প্রাক্তন সেনা অফিসারেরাই নয়, বাংলাদেশের ডিজিএফআইয়ের কয়েক জন অফিসারও পরেশের সঙ্গে দেখা করেছেন গত কয়েক দিনে।
প্রশ্ন হল, কেন হঠাৎ বাংলাদেশে এলেন পরেশ? সূত্রের খবর, মায়ানমারের সাগাইন প্রদেশে থাকা আলফার শিবিরগুলিতে ভারত তিন দফায় হামলা চালিয়েছে। তাতে আফলার ১৭ জন নিহত হয়। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরেশের ‘ডান হাত’ বলে পরিচিত তথা দলের দ্বিতীয় নেতা নয়ন মেধী। বাংলাদেশের এক প্রাক্তন সেনা অফিসারের কথায়, ‘‘পরেশ ভাল করেই বুঝতে পারছিলেন, তেনচং গ্রামে বসে আলফার সংগঠন পরিচালনা করা সম্ভব নয়। নয়ন মেধী মারা যাওয়ার পরে দলের পুরো দায়িত্ব পরেশের উপরে পড়েছে। ফলে মায়ানমারের চেয়ে বাংলাদেশে সুবিধাজনক জায়গা। বর্তমানে বাংলাদেশ তো সব দিক থেকেই তাঁর জন্য অনুকূল।’’
ঢাকায় পরেশের উপস্থিতি স্বাভাবিক ভাবেই চিন্তা বাড়িয়েছে ভারতের গোয়েন্দাদের। তাঁদের আশঙ্কা, বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করে উত্তর-পূর্ব ভারতে উগ্রপন্থী তৎপরতা বাড়াতে সক্রিয়হবেন পরেশ।
প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর
সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ
সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে