শত্রু নন কিম, উল্টো মার্কিন সুরে ধোঁয়াশা

ট্রাম্পের ‘কাছের লোক’ রিপাবলিকান সেনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম বলছেন যুদ্ধের কথা। প্রয়োজনে কোমর বাঁধার হুমকি দিয়েছেন রাষ্ট্রপুঞ্জে মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালিও।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৭ ০৩:২৬
Share:

কিম জং উন। —ফাইল চিত্র।

এই হুঙ্কার, তো পরের মুহূর্তেই সুর নরম!

Advertisement

উত্তর কোরিয়ার বেপরোয়া পরমাণু কর্মসূচি ঠেকাতে আমেরিকা যে কী চাইছে, তা স্পষ্ট হচ্ছে না কিছুতেই। কিম জং উনকে গো়ড়া থেকেই ‘শিক্ষা’ দিতে চাইছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু কী ভাবে! ট্রাম্পের ‘কাছের লোক’ রিপাবলিকান সেনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম বলছেন যুদ্ধের কথা। প্রয়োজনে কোমর বাঁধার হুমকি দিয়েছেন রাষ্ট্রপুঞ্জে মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালিও। বিদেশসচিব রেক্স টিলারসনের কথায় আবার এরই মধ্যে অন্য সুর। বেশ খানিকটা মোলায়েমও। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা উত্তর কোরিয়ার শত্রু নই। তাই এখনই সেখানে ক্ষমতা বদলের কথা ভাবছে না আমেরিকা। একটা অজুহাত খাড়া করে সেনা পাঠানোরও কোনও পরিকল্পনা নেই আমাদের।’’ গত কাল সাংবাদিক বৈঠকে টিলারসন এমনকী উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনারও ইচ্ছে প্রকাশ করেন।

তবে শর্ত একটাই— অস্ত্র পরীক্ষা বন্ধ করতে হবে উত্তর কোরিয়াকে। যা নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও ইতিবাচক ইঙ্গিত দেয়নি কিমের দেশ। বরং সম্প্রতি নয়া ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পরে পিয়ংইয়ং জানিয়েছে, আমেরিকা তাদের হাতের নাগালেই।

Advertisement

যার জবাবে দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের সঙ্গে তড়িঘড়ি যৌথ মহড়ায় নামতে দেখা যায় মার্কিন সেনাকে। কিমকে ঠেকাতে চেয়ে ট্রাম্প একহাত নেন চিনকেও। ক্রমশ চড়তে থাকে পারদ। সেনেটর গ্রাহাম তো বলেই দেন, ‘‘যুদ্ধ হলে ওখানেই (কোরীয় উপসাগর) হবে। হাজারটা মানুষ মরলেও ওখানেই মরবে। এখানে নয়। প্রেসিডেন্ট নিজে আমাকে বলেছেন, যুদ্ধ ছাড়া গতি নেই।’’ অথচ এর ঠিক তিন দিনের মাথায় যুদ্ধের সম্ভাবনা কার্যত উড়িয়েই দিলেন টিলারসন। চলতি সপ্তাহের শেষেই এশিয়া সফরে যাচ্ছেন তিনি। সূত্রের খবর, সেখানে নিরাপত্তা বিষয়ক বৈঠকে থাকবেন কিমের মন্ত্রীরাও।

আরও পড়ুন: নভেম্বরে লন্ডন যাচ্ছেন মমতা

কেন হঠাৎ এই ভোলবদল? উত্তর খুঁজতে গিয়ে অনেকেই বলছেন, কিমের ওই ‘নাগালেই আমেরিকা’ হুমকিটাই কাঁপিয়ে দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসনকে। কেউ আবার বলছেন, এটাও একটা কূটনৈতিক চাল। টিলারসনকে দিয়ে শান্তির পক্ষে প্রচার চালিয়ে ফাঁকতালে উত্তর কোরিয়ার উপর অর্থনৈতিক চাপ বাড়াতে চাইছে আমেরিকা। কিমের দেশ যাতে বাধ্য হয় মতবদলে। শান্তিপূর্ণ ভাবে কিমকে চাপের মধ্যে রাখাটাই যে কৌশল, তার একটা ইঙ্গিত দিয়েছেন টিলারসনও।

দিন কয়েক আগেই ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, উত্তর কোরিয়া প্রসঙ্গে চিনের ভূমিকায় তিনি হতাশ। টিলারসনের যদিও পুরো দোষটাই বেজিংয়ের ঘাড়ে চাপাতে নারাজ। তাঁর কথায়, ‘‘বর্তমান পরিস্থিতির জন্য দায়ী শুধু উত্তর কোরিয়াই। তবে চিনের সঙ্গে ওদের সম্পর্কটা যে হেতু ভাল, তাই উত্তর কোরিয়াকে এক মাত্র বেজিংই ঠেকাতে পারে।’’

তা হলে কি কিমকে বাগে আনতে আলোচনাই একমাত্র পথ? ধোঁয়াশা জিইয়ে রেখেই হোয়াইট হাউসের সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত মিডিয়া সচিব সারাহ স্যান্ডার্স জানালেন, ‘‘আমাদের উদ্দেশ্য উত্তর কোরিয়ার আগ্রাসন ঠেকানো, ওদের পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ করা। তাই আমরা সব সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখছি। কী সেই পদক্ষেপ, এখনই তা বলা সম্ভব নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন