India-Maldives Row

‘ভারতের বিরোধিতা করার জন্য মলদ্বীপকে বলিনি’! বিতর্কে ‘অনুপ্রবেশ’ করে এ বার বলে দিল চিন

সেপ্টেম্বরে মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ‘চিনপন্থী’ নেতা মহম্মদ মুইজ্জু দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ভারতের বিরুদ্ধে একের পর সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২৪ ১৯:১৫
Share:

জিনপিং, মুইজ্জু এবং মোদী। — ফাইল চিত্র।

ভারতের বিরোধিতা করার জন্য মলদ্বীপকে কোনও উস্কানি দেয়নি চিন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে মলদ্বীপের শাসক শিবিরের নেতাদের আপত্তিকর মন্তব্য ঘিরে বিতর্কের আবহে সোমবার এই দাবি করল শি জিনপিং সরকার। কমিউনিস্ট পার্টি শাসিত একদলীয় চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস বলেছে, ‘‘আমরা মলদ্বীপকে সমান স্তরের সহযোগী ভাবি এবং তাদের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করি।’’

Advertisement

সেপ্টেম্বরে মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ‘চিনপন্থী’ নেতা তথা ‘পিপল্‌স ন্যাশনাল কংগ্রেস’-এর প্রধান প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ভারতের বিরুদ্ধে একের পর সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। যা নিয়ে নয়াদিল্লি-মালে টানাপড়েন তৈরি হয়েছে। এই আবহে সম্প্রতি ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লক্ষদ্বীপে গিয়েছিলেন মোদী। সেই সফরের বেশ কিছু ছবি এবং ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়। অভিযোগ, মলদ্বীপের তিন মন্ত্রী, মরিয়ম শিউনা, মালশা শরিফ এবং মাহজ়ুম মাজিদ কিছু ছবিতে মোদীকে ‘পুতুল’ এবং ‘জোকার’ বলে মন্তব্য করেন। ভারত-ইজ়রায়েল সম্পর্ক নিয়েও আপত্তিকর মন্তব্য করা হয়। পরে অবশ্য বিতর্কের মুখে পোস্টগুলি মুছে দেওয়া হয়।

এই পরিস্থিতিতে মলদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম সোলি (যাঁকে পরাজিত করে মুইজ়ু সম্প্রতি ক্ষমতায় এসেছেন) এবং আর এক প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ নাসিদ মোদীর সমালোচনা করা মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি তোলেন। তাঁরা জানান, ভারত মলদ্বীপের গুরুত্বপূর্ণ ‘মিত্র’। সেই দেশের প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে এমন মন্তব্য দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। এর পরই ঘরে-বাইরে চাপের মুখে রবিবার মুইজ্জু সরকার তিন মন্ত্রীকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেয়।

Advertisement

প্রসঙ্গত, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের একাধিপত্যের মোকাবিলা করতে সক্রিয় মোদী সরকার। আমেরিকার নেতৃত্বে গড়া কোয়াড-এ তারা প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু তার আগে সমুদ্রপথ নিয়ে যথেষ্ট উদ্বেগে পড়ছে সাউথ ব্লক। তার অন্যতম কারণ ‘চিন ঘনিষ্ঠ’ মুইজ্জু। ক্ষমতায় এসেই তিনি মলদ্বীপে মোতায়েন ভারতীয় সেনার ফেরত পাঠিয়েছিলেন। সম্প্রতি, তিনি নয়াদিল্লির সঙ্গে চার বছরের পুরনো জলচুক্তি বাতিলের কথা ঘোষণা করেন।

ওই চুক্তির মাধ্যমে ভারতীয় নৌবাহিনীর নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, পরিবেশ সুরক্ষা এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণায় সাহায্য করার জন্য মলদ্বীপের জলসীমায় ‘হাইড্রোগ্রাফিক’ সমীক্ষা চালানোর অনুমতি মিলত। চুক্তি বাতিলের ফলে তা বন্ধ হয়েছে। মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর ঘনিষ্ঠ জননীতি বিষয়ক সচিব মোহাম্মদ ফিরুজুল আবদুল খলিল। সাংবাদিক বৈঠকে খলিলের ব্যাখ্যা— ওই চুক্তি অনুযায়ী মলদ্বীপের জলসীমার উপর দুই দেশ যৌথ ভাবে সমীক্ষা চালাচ্ছিল। মূল কাজটি করছিলেন ভারতীয় বিজ্ঞানীরা। প্রাপ্ত তথ্য, নমুনা বিশ্লেষণের দায়িত্বও ছিল ভারতের উপর। তিনি বলেন, ‘‘জল সংক্রান্ত তথ্য অন্য দেশের হাতে থাকুক, তা চান না আমাদের প্রেসিডেন্ট। এটি দেশের সার্বভৌমত্ব এবং নিরাপত্তার জন্য বিপজ্জনক বলেই মনে করেন তিনি।’’

চিনের উস্কানিতেই ধারাবাহিক ভাবে মুইজ্জু সরকার ভারত বিরোধিতা করছে বলে আন্তর্জাতিক কূটনীতি বিশেষজ্ঞদের একাংশের অভিযোগ। ঘটনাচক্রে, মুইজ্জু এখন চিন সফরে। তারই মধ্যে ভারতকে ‘বার্তা’ দিন জিনপিং সরকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন