বিক্ষোভের আঁচে উত্তপ্ত ফ্রান্স। ছবি: সংগৃহীত।
প্রতিবাদের সূচনা হয়েছিল, প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁর বশংবদ নেতা সেবাস্তিয়ান লেকর্নুরকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নেওয়ার বিরুদ্ধে। কিন্তু ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ‘ব্লক এভরিথিং’ আন্দোলনের অভিমুখ কিছুটা বদলে গেল ফ্রান্সে। মাক্রোঁ সরকারের বাজেট কাটছাঁট এবং ঋণনীতিকে নিশানা করলেন বিক্ষোভকারীরা।
শাসকজোটের অন্তর্বিরোধের জেরে সোমবার ফরাসি পার্লামেন্টে আস্থাভোটে পরাস্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রিত্ব ছেড়েছিলেন ফ্রাঁসোয়া বেরু। মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী পদে মনোনীত করেন তাঁর ঘনিষ্ঠ সেবাস্তিয়ানকে। ফরাসি সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী মনোনীত করার ক্ষমতা রয়েছে প্রেসিডেন্টের। কিন্তু নানা সরকারি নীতিতে ক্ষুদ্ধ ফরাসি কয়েক লক্ষ মানুষ বুধবার থেকেই রাজধানী প্যারিস-সহ বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ-অবরোধ শুরু করেন। শুরু হয় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ। বৃহস্পতিবার ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র দফতর জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ৩০০ বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মোতায়েন করা হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার পুলিশ।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, বিনিয়োগ টানার লক্ষ্যে মাক্রোঁ অতি ধনীদের কর ছাড়ের সুবিধা দেওয়ার যে পদক্ষেপ করেছিলেন, তা-ও ক্ষোভের অন্যতম কারণ। ফ্রান্সে অতি ধনীদের উপর ২ শতাংশ কর চালু রয়েছে। ১০ কোটি ইউরোর (প্রায় ১০৩৩ কোটি টাকা) বেশি মূল্যের সম্পত্তি রয়েছে ১,৮০০ ব্যক্তির। তাঁরাই অতি ধনীর মর্যাদাপ্রাপ্ত। অধিকাংশ ফরাসি নাগরিক পুরনো করনীতিকে সমর্থন করেন। মাক্রোঁ তার বিরোধিতা করেছিলেন। তাঁর সরকারের বাজেট কাটছাঁট এবং ঋণনীতিও বিক্ষোভের অন্যতম কারণ। এই পরিস্থিতিতে ফরাসি রাজনীতিতে আবার উগ্র দক্ষিণপন্থী শক্তির পুনরুত্থান ঘটতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই।