আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।
ভারতীয়দের অবৈধ ভাবে আমেরিকায় অনুপ্রবেশের হার কমছে! আমেরিকার শুল্ক এবং সীমান্ত নিরাপত্তা দফতরের তথ্যে এমনটাই আভাস মিলেছে। চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জানুয়ারি-মে) অবৈধ ভাবে আমেরিকায় প্রবেশ করতে গিয়ে ধরা পড়েছেন ১০,৩৮২ জন ভারতীয়। গত বছরের প্রথম পাঁচ মাসে ৩৪,৫৩৫ জন ভারতীয়কে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরিসংখ্যান বলছে, গত বছরের প্রথম পাঁচ মাসের তুলনায় চলতি বছরে আমেরিকায় অবৈধ ভাবে প্রবেশ করতে গিয়ে ধৃত ভারতীয়দের সংখ্যা ৭০ শতাংশ কমে গিয়েছে।
২০২৪ সালের নভেম্বরে আমেরিকার নির্বাচনে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে পরাস্ত করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনী প্রচারের সময় থেকেই অবৈধবাসীদের বিরুদ্ধে সরব ছিলেন ট্রাম্প। ২০২৫ সালে প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের পর নিজের অবস্থান আরও স্পষ্ট করেছেন তিনি। অবৈধবাসীদের ধরপাকড় শুরু হয়েছে আমেরিকায়। তাঁদের পাকড়াও করে আমেরিকা থেকে তাড়াতে শুরু করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। অনুমান করা হচ্ছে, অবৈধবাসীদের বিরুদ্ধে ট্রাম্প খড়্গহস্ত হওয়ার কারণেই বেআইনি ভাবে আমেরিকায় প্রবেশের হার কমে গিয়ে থাকতে পারে।
তবে এর মধ্যেও ১০ হাজারেরও বেশি ভারতীয় গত পাঁচ মাসে নিজেদের জীবন বাজি রেখে অবৈধ ভাবে আমেরিকায় প্রবেশের চেষ্টা করছেন। ট্রাম্প প্রশাসনের তথ্য অনুসারে, এদের মধ্যে অন্তত ৩০ জন নাবালক রয়েছে, যাদের সঙ্গে কোনও অভিভাবক ছিল না। এই নাবালকদের মধ্যে অনেকেই গুজরাতের বাসিন্দা। তথ্য অনুসারে, গত বছরে আমেরিকায় অবৈধ ভাবে প্রবেশ করতে গিয়ে গড়ে প্রতিদিন ২৩০ জন করে ভারতীয় ধরা পড়তেন। এখন সেই সংখ্যা কমে ৬৯ হয়েছে।
বস্তুত, ভারতীয়দের অবৈধ ভাবে আমেরিকায় পাঠানোর জন্য পশ্চিম ভারতে বেশ কিছু চক্র সক্রিয় রয়েছে বলে বিভিন্ন সময়ে তদন্তে উঠে এসেছে। ‘টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’র প্রতিবেদন অনুসারে, গত বছরের শেষ দিক থেকে গুজরাতের বেশ কিছু চক্র প্রায় নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছে। ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারে যে আভাস মিলেছিল, তার-ই প্রভাবে এগুলি বন্ধ হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
শুধু ভারতীয়রাই নন, অন্য দেশ থেকেও আমেরিকায় অবৈধ ভাবে প্রবেশ কমে গিয়েছে। গত পাঁচ মাসে সার্বিক ভাবেও অবৈধ ভাবে প্রবেশের চেষ্টা কমেছে আমেরিকায়। ট্রাম্প হোয়াইট হাউসের দায়িত্ব গ্রহণ করেন ২০ জানুয়ারি। তাঁর প্রশাসনের শুল্ক এবং সীমান্ত নিরাপত্তা দফতরের তথ্য অনুসারে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে বিভিন্ন দেশের মোট ৮১,৪৯২ জনকে গ্রেফতার করেছিল আমেরিকা। ফেব্রুয়ারিতে তা কমে হয়েছে ২৮,৬১৭। তার পরের তিন মাসও ৩০ হাজারের নীচেই ছিল গ্রেফতারির সংখ্যা।