(বাঁ দিকে) শেখ হাসিনা এবং মুহাম্মদ ইউনূস (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর গত ১৩ মাসে বাংলাদেশে গ্রেফতার হয়েছেন প্রায় ৪৪ হাজার ৪৭২ জন। ধৃতদের প্রায় প্রত্যেকেই আওয়ামী লীগের নেতা বা কর্মী। ধৃতদের মধ্যে জামিন পেয়েছেন ৩২ হাজার ৩৭১ জন। বাংলাদেশের পুলিশ সদর দফতরের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৭৩ শতাংশই এখন জামিনে মুক্ত। এখনও জামিন পাননি বাকি ২৭ শতাংশ।
গত বছরের ৫ অগস্ট গণবিক্ষোভের জেরে প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে আওয়ামী লীগ নেত্রী হাসিনা বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তার পর সে দেশে বিভিন্ন মামলায় আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা-মন্ত্রী গ্রেফতার হন। গণহারে গ্রেফতারির এই ঘটনাকে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ বলেই দাবি করে আওয়ামী লীগ। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হওয়ার পর ঢাকা তো বটেই, সে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ‘ঝটিকা মিছিল’ বার করেছিলেন হাসিনার দলের কর্মী-সমর্থকেরা। সেই সমস্ত মিছিল থেকেও অনেক জনকে গ্রেফতার করা হয়।
সম্প্রতি বাংলাদেশের পুলিশ সদর দফতর ‘ফ্যাসিবাদের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার ও জামিনসংক্রান্ত তথ্য’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ ওই প্রতিবেদনের পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। ২০২৪ সালের ৫ অগস্ট থেকে চলতি বছরের ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পাওয়া পরিসংখ্যান বলছে, গ্রেফতারির সংখ্যায় সবচেয়ে এগিয়ে রাজধানী ঢাকা। তার পরে যথাক্রমে রয়েছে চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী।
প্রথম আলো-র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক মনে করছে, গ্রেফতারির পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ জমা দেওয়ার বিষয়ে পুলিশের দুর্বলতা রয়েছে। উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ জমা দিতে না-পারলে আদালত যে অভিযুক্তকে ছেড়ে দেবে, সে বিষয়ে অবহিত বাংলাদেশের পুলিশও। তবে গ্রেফতারির নামে কাউকে হয়রানির অভিযোগ উঠুক, এমনটাও চায় না তারা। ১৪ সেপ্টেম্বর জামিনের বিষয়টি তদারকির জন্য বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের একজন যুগ্ম সচিবকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কমিটির একজন সদস্য ‘প্রথম আলো’-কে বলেন, “কাউকে জামিন দেওয়া হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত নেবে আদালত। তবে অপরাধ থাকার পরও সংশ্লিষ্ট কারও গাফিলতির কারণে প্রকৃত অপরাধীদের জামিনের সুযোগ তৈরি হচ্ছে কি না, কমিটি সেটিই দেখবে।”