সংখ্যালঘুদের পাশেই হাসিনা,বললেন কাদের

ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গিদের বাংলাদেশের মাটি থেকে উচ্ছেদ করেছেন শেখ হাসিনা। নিরাপত্তা নিয়ে দু’দেশ যে ভাবে বোঝাপড়া করে এগোচ্ছে, তাতে ভারত ও বাংলাদেশ— উভয় পক্ষই লাভবান হচ্ছে।

Advertisement

অনমিত্র চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৩৭
Share:

কলকাতা বিমানবন্দরে ওবায়েদুল কাদেরকে স্বাগত জানাচ্ছেন কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার তৌহিদ হাসান ও কাউন্সিলর মনসুর আহমেদ বিপ্লব। রয়েছেন আওয়ামি লিগের উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া। সোমবার রাতে। নিজস্ব চিত্র।

আগামী নির্বাচনে জয়ের জন্য এ বাংলার মানুষের শুভেচ্ছা ও আশীর্বাদ চাইলেন বাংলাদেশের শাসক জোটের প্রধান দল আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তাঁর কথায়, ‘‘শেখ হাসিনা সরকার জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আপসহীন লড়াই করছে। জঙ্গিদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আর বিএনপি-জামাতের আমলে বাংলাদেশ কার্যত জঙ্গিদের ডেরায় পরিণত হয়েছিল।’’

Advertisement

সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পরে সোমবার রাতে প্রথম কলকাতায় পা দিলেন ওবায়দুল কাদের। আনন্দবাজারকে বললেন, ‘‘আমাদের সরকারের আমলে দু’দেশের সুসম্পর্ক রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গিদের বাংলাদেশের মাটি থেকে উচ্ছেদ করেছেন শেখ হাসিনা। নিরাপত্তা নিয়ে দু’দেশ যে ভাবে বোঝাপড়া করে এগোচ্ছে, তাতে ভারত ও বাংলাদেশ— উভয় পক্ষই লাভবান হচ্ছে।’’

কাদের সাহেবের কথায়, আগের সরকার বাংলাদেশের যে ‘জঙ্গি-প্রবণ’ ভাবমূর্তি তৈরি করেছিল, তা থেকে বেরিয়ে সেই দেশ এখন উন্নয়নের সড়কে এগিয়ে চলেছে। পদ্মা সেতু হচ্ছে। ঢাকায় মেট্রো রেল তৈরি হচ্ছে। রূপপুরে পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। বাংলাদেশের উন্নয়নকে মডেল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জও। পশ্চিমবঙ্গ থেকে এখন হাজার হাজার মানুষ ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে যাচ্ছেন। কাদেরের মতে, একমাত্র এই সরকারের আমলেই বাংলাদেশে এই শান্তির বাতাবরণ বজায় থাকতে পারে। তাই প্রধানমন্ত্রী হাসিনা পশ্চিমবঙ্গের মানুষের শুভেচ্ছা পেতেই পারেন।

Advertisement

আরও পড়ুন: আইএস হামলা কাবুলের গোয়েন্দা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে

ডিসেম্বর বিজয়ের মাস। বাংলাদেশ দূতাবাসের পাঁচ দিনের ‘বিজয় উৎসব’-এর সমাপ্তি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে কলকাতায় এসেছেন সড়ক ও সেতুমন্ত্রী কাদের। তাঁর কথায়, ভারতের সেনাবাহিনী ও জনগণের সর্বাত্মক সহযোগিতা ও ত্যাগস্বীকারে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পেয়েছে। আজ ৮ লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ নুন-ভাত খেয়ে বাঁচতে পারলে তাঁরাও খেয়ে পরে থাকতে পারবেন। আর একাত্তরে তো পূর্ব পাকিস্তান থেকে আসা এক কোটির বেশি শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ!

নতুন বছরেই মেয়াদ শেষ হচ্ছে আওয়ামি লিগ নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে ২০১৪-য় ভোট বয়কট করেছিল খালেদা জিয়ার বিএনপি ও তার সঙ্গী জামাতে ইসলামি। এ বারেও তারা সেই দাবিতে অনড়। বিএনপি কি এ বার ভোটে লড়বে? আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘‘বিএনপি-কে ভোটের পথে আসতেই হবে।’’ কারণ হিসাবে তিনি জানান, বাংলাদেশের সংসদ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথা রদ করার পরে কোনও অনির্বাচিত সরকারের হাতে আর ক্ষমতা তুলে দেওয়ার সুযোগ নেই। কাজেই বিএনপি-র দাবি মানা সম্ভব নয়। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘‘ভারত, আমেরিকা, রাশিয়া— দুনিয়ার সর্বত্র নির্বাচিত সরকারকে রেখেই ভোট হয়। বাংলাদেশেও তা-ই হবে।’’

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু-বৌদ্ধরা কি এই সরকারের উপরে ক্ষুব্ধ? এই প্রশ্নের উত্তরে ওবায়দুল কাদেরের দাবি, সংখ্যালঘুদের উন্নয়ন একমাত্র আওয়ামি লিগের আমলেই হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমি নই, তথ্য বলছে এ কথা। সংখ্যালঘুরা হাসিনা সরকারকে নিজেদের সরকার বলে মনে করেন।’’ তাঁর কথায়— তার পরেও সরকারকে হেয় করতে বিভিন্ন শক্তি সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার কিছু ঘটনা ঘটায়। সরকার প্রতিবার নির্যাতিতদের পাশে দাঁড়িয়েছে। দুষ্কৃতীদের বিচারের ব্যবস্থা করেছে।

কাদের বলেন, ‘‘এ বার ৩০ হাজার ৭৭টি দুর্গাপুজো হয়েছে বাংলাদেশে। গত বছরের থেকে ২৩০টি বেশি। আর পুজোয় আনন্দ ভাগ করে নিতে পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রায় অর্ধ লক্ষ মানুষ গিয়েছিলেন বাংলাদেশে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন