ছবি: এএফপি।
ক্লাসে-ক্লাসে টাঙানো কিম জং ইল এবং কিম জং সানের ছবি। বংশ পরম্পরায় উত্তর কোরিয়ার দুই প্রাক্তন শাসক। দু’জনেই প্রয়াত, তবু এখনও রয়ে গিয়েছেন সসম্মানে। ব্ল্যাকবোর্ডের ঠিক মাথায়। পাশাপাশি। একটা-দু’টো নয়, জাপানে এমন অন্তত ৬০টি কোরীয় হাইস্কুল রয়েছে। কিন্তু কেমন আছে— সেটাই বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে আজ। তথ্য বলছে, এই মুহূর্তে ৫ লক্ষেরও বেশি কোরীয় জনজাতি গোষ্ঠীর বাস রয়েছে জাপানে। সামাজিক সুবিধা-লাভ কিংবা চাকরির ক্ষেত্রে এঁরা যে বৈষম্যের শিকার, এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এখন শোনা যাচ্ছে, এই স্কুলগুলিকেও কারা যেন বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। যত বার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছেন উত্তর কোরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট কিম জং উন, ঠিক তত বার।
আরও পড়ুন: দুর্নীতি দমনে ধৃত ১১ সৌদি রাজকুমার
রাষ্ট্রপুঞ্জকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়েই একের পর এক পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা করে চলেছে কিমের দেশ। যার জেরে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে ধারাবাহিক ভাবে কড়া পদক্ষেপ করার হুমকি দিয়ে আসছেন জাপানি প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। আমেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে নিয়মিত মহড়াও চালিয়ে যাচ্ছে জাপানের সেনা। কোরীয় স্কুলে হামলার হুমকিও কি এ সবেরই জের? স্কুল কর্তৃপক্ষ তেমনটাই বলছেন। যদিও হুমকির নেপথ্যে কারা, তা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন কর্তারা।
এখানকার পড়ুয়ারা তো বটেই, তাদের অভিভাবকদেরও অনেকে কখনও পা রাখেননি উত্তর কোরিয়ায়। তবু এঁরা নিজেদের কোরীয় বলেই মনে করেন। মানতে চান না উত্তর-দক্ষিণ ভেদাভেদও। ১৯১০ থেকে ১৯৪৫ পর্যন্ত জাপানের ঔপনিবেশিক অত্যাচার সয়ে এসেছেন এঁদের পূর্বসুরিরা। তাই জাপানে থাকলেও এঁদের একটা বড় অংশ আজও ছেলেমেয়েদের পড়তে পাঠান কোরীয় স্কুলেই। হুমকির মুখে স্বাভাবিক ভাবেই আজ তাঁরা বিচলিত।
টোকিওয় এমনই এক কোরীয় স্কুলের মাঠে দাঁড়িয়ে বছর সতেরোর হং এরই মধ্যে স্বপ্ন দেখছে। দেশের হয়ে ফুটবল খেলার। উত্তর কোরিয়ার গোলে দাঁড়িয়ে জাপানি স্ট্রাইকারদের প্রত্যেকটা শট আটকে দেওয়ার। বুক চিতিয়ে।