আলো ঝলমলে রাতে অসংখ্য মানুষের ভিড়ে এই ট্রাক নিয়েই সোজা দু’কিলোমিটার চালিয়ে দিয়েছিল জঙ্গি। ছবি: গেটি ইমেজেস।
এক দিকে অসংখ্য মানুষ। তাঁরা উৎসবের আনন্দে মত্ত। অন্য দিকে মাত্র এক জন। উৎসবের নগরীতে থেকেও উৎসবের থেকে বহু দূরে। মৃত্যুর দূত। একাকী নেকড়ে। অন্যদের মধ্যে মিশে থেকে আচমকাই হানা দিয়ে অনেককে নিকেশ করাই যার একমাত্র লক্ষ্য।
ফ্রান্সের নিস শহর যেটা দেখল, দেখল গোটা বিশ্ব। জঙ্গি হানার ভয়ঙ্কর আরও একটা রূপ দেখা গেল এখানে। আলো ঝলমলে রাতে অসংখ্য মানুষের ভিড়ে একটা ট্রাক নিয়ে সোজা দু’কিলোমিটার চালিয়ে দিল জঙ্গি। আর্তনাদ, চিৎকার, আতঙ্ক, ভয়, গুলিগোলার আওয়াজের শেষে দেখা গেল অসংখ্য মৃত্যু। গুলি চলল একেবারে শেষে। যখন পুলিশের প্রতিরোধে ট্রাক থেমে যাওয়ার মুহূর্তে গুলি চালাল জঙ্গি। তার আগেই যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে।
সভ্যতার সামনে অতএব এটাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। লোন উল্ফ্ তথা একাকী নেকড়ের আর বোমা-বারুদ-অস্ত্রেরও দরকার পড়বে না হয়তো, কোনও একটা ট্রাক অথবা নিত্য নতুন অভিনব ‘অস্ত্রে’ যদি মুহূর্তে এই রকম অনেক মৃত্যুর টার্গেট পূরণ করা সম্ভব হয়। নিশ্চিত নিরাপত্তা ইতিমধ্যেই অসম্ভব পর্যবসিত হতে বসেছে। কিন্তু জঙ্গিদের অভিনব কৌশল নিরাপত্তার বোধটাকেই শূন্যে পৌঁছে দিতে যাচ্ছে এ বার।
এর জন্য দরকার মগজ ধোলাই। একটি মগজকে যদি ধোলাই করে আত্মঘাতী পথে ঠেলে দেওয়া যায়, অনেক মৃত্যুর জঙ্গি লক্ষ্য কঠিন থাকে না আর। তার চেয়েও বড় কথা, সর্বগ্রাসী এক ভয়ের জন্ম হয় সমাজজুড়ে। ধোলাই হওয়া কিছু মগজ, অসংখ্য নিরীহ মানুষের লাশ এবং চরাচর জুড়ে ভয়— জঙ্গিদের সাম্রাজ্যের মূল মন্ত্র এটাই।
ধর্মের নামে অধর্ম রুখতে পারে একমাত্র মানুষই। পাল্টা অস্ত্র হোক মগজই। মগজাস্ত্র।