আদালতে ব্রেন্টন ট্যারান্ট। ছবি: এএফপি।
নিয়ম অনুযায়ী আদালতে তার হয়ে লড়ার জন্য আইনজীবী নিয়োগ করেছিল সরকার। কিন্তু সরকারি কৌঁসুলি তার লাগবে না বলে জানিয়ে দিল নিউজ়িল্যান্ডের মসজিদে সন্ত্রাস হামলায় অভিযুক্ত ব্রেন্টন ট্যারান্ট।
ক্রাইস্টচার্চের ওই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি আরও অন্তত ৩৪ জন। এর মধ্যে একটি ৪ বছরের বাচ্চার অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ অবস্থায় আগামী ৫ এপ্রিল ট্যারান্টকে আদালতে তোলা হলে হয়তো আরও বেশ কিছু চার্জ আনা হবে। ট্যারান্টের জন্য যে কৌঁসুলিকে দেওয়া হয়েছিল, তিনি জানিয়েছেন, ২৮ বছরের যুবকের মানসিক অবস্থা নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। যথেষ্টই স্থিতিশীল। ফলে এটা ধরেই নেওয়া যেতে পারে, ভেবেচিন্তেই সে আদালতে নিজে সওয়াল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এত দিন নিউজ়িল্যান্ডকে সন্ত্রাসমুক্ত দেশ হিসেবেই দেখে এসেছে বহির্বিশ্ব। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে হামলার পর থেকে বহু মার্কিন ধনী নিউজ়িল্যান্ডে জমিবাড়ি কিনেছেন। সরকারি হিসেব বলছে, ২০১৭ সালে, গোটা বছরে বিভিন্ন বিচ্ছিন্ন ঘটনায় সাকুল্যে ৩৫ জন নিহত হয়েছেন। ‘নিরুপদ্রব’ দেশটিতে তাই অস্ত্র-আইন নিয়ে বিশেষ চিন্তাভাবনাও ছিল না এত দিন। অস্ত্র রাখার জন্য লাইসেন্স লাগে। কিন্তু ২০১৭ সালে যত জন এই আবেদন জানিয়েছিলেন, তার ৯৯.৬ শতাংশ আবেদনই মঞ্জুর হয়ে গিয়েছিল। গত শুক্রবারের সন্ত্রাসের ঘটনায় নতুন করে ভাবছে গোটা দেশ। প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডের্ন অস্ত্র-আইন বদলের কথা ঘোষণা করেছেন। মন্ত্রিসভার বৈঠক চলছে এ নিয়ে। সেমিঅটোমেটিক অস্ত্র নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি আর্ডের্ন চান, এ বার থেকে প্রতিটি অস্ত্রের জন্য আলাদা আলাদা করে লাইসেন্স নিতে হবে। এত দিন ১৬ বছর বয়স হলেই লাইসেন্স মিলত। এ বার লাইসেন্স পেলে তা পরবর্তী ১০ বছর বৈধ। এবং কেউ এ ধরনের অস্ত্র কিনলে তা সরকারি খাতায় নথিভুক্তও করতে হত না।
অস্ত্র-আইনে বদল হতে পারে জেনেই সংশ্লিষ্ট দোকানগুলোতে কড়াকড়ি শুরু হয়েছে। ‘ট্রেড মে’ বলে একটি অনলাইন সংস্থা সেমিঅটোমেটিক অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে। এ সবের পাশাপাশি হামলার তদন্তও চলছে। সোমবার অস্ট্রেলিয়ার সন্ত্রাসদমন পুলিশ নিউ সাউথ ওয়েলসের দু’টি বাড়িতে হানা দেয়। এর মধ্যে একটি ট্যারান্টের বোনের। সে দেশের পুলিশ জানিয়েছে, তাদের পক্ষ থেকে যাবতীয় প্রয়োজনীয় তথ্য নিউজ়িল্যান্ডের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছে তারা। ট্যারান্টের পরিবারও সহযোগিতা করছে।