Iran

এ বার ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত গ্রেফতার, ইরানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ লন্ডনের

ইরান সরকার ভুলবশত ইউক্রেনীয় বিমানে ক্ষেপণাস্ত্র দাগার কথা স্বীকার করার পর থেকেই দেশের একাধিক জায়গায় বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

তেহরান শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২০ ১৪:২৪
Share:

আমিরকবীর ইউনিভার্সিটির সামনে বিক্ষোভ পড়ুয়াদের। ছবি: এএফপি।

সোলেমানি হত্যা এবং ক্ষেপণাস্ত্র হানা নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের সঙ্ঘাত অব্যাহত। তার মধ্যেই এ বার ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতকে গ্রেফতার করে সে দেশের সরকারের বিরাগভাজন হল ইরান। শনিবারই ভুলবশত ইউক্রেনীয় বিমানে ক্ষেপণাস্ত্র দাগার কথা মেনে নিয়েছে তেহরান। তার পর থেকে সেখানে একাধিক জায়গায় সরকার বিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। সেই বিক্ষোভে ইন্ধন জোগানোর অভিযোগে গত কাল ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত রবার্ট নাইজেল পল ম্যাকেয়ার ওরফে রব ম্যাকেয়ারকে গ্রেফতার করা হয়। ঘণ্টা তিনেক পরই যদিও তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়, তবে এ নিয়ে জবাবদিহি করতে ফের তাঁকে ডেকে পাঠানো হতে পারে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।

Advertisement

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ইরান সরকার ভুলবশত ইউক্রেনীয় বিমানে ক্ষেপণাস্ত্র দাগার কথা স্বীকার করার পর থেকেই দেশের একাধিক জায়গায় বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বিমান ভেঙে পড়ায় যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের হয়ে শনিবার তেহরানে আমিরকবীর ইউনিভার্সিটির সামনে বিশাল জমায়েত হয়। তাতে শামিল হন রবও। সেখান থেকে বেরিয়ে ব্রিটিশ দূতাবাসে যাওয়ার পথে একটি সেলুনে ঢোকেন। সেখান থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এ ভাবে কোনও রাষ্ট্রদূতকে গ্রেফতারের ঘটনা আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে নজিরবিহীন। তা নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে ব্রিটেন। তাদের দাবি, রব ম্যাকেয়ারকে গ্রেফতার করে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে ইরান। ব্রিটেনের বিদেশ সচিব ডমিনিক রাব একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলেন, ‘‘কোনওরকম কৈফিয়ত ছাড়াই আমাদের রাষ্ট্রদূতকে গ্রেফতার করে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে তেহরান। এই মুহূর্তে সন্ধি ক্ষণে দাঁড়িয়ে রয়েছে ইরান সরকার। হয় রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে একঘরে হওয়ার পথে এগোক তারা, নইলে কূটনৈতিক আলাপ আলোচনার মাধ্যমে উত্তেজনা প্রশমনে পদক্ষেপ করুক।’’

Advertisement

রব ম্যাকেয়ারের এই ছবি প্রকাশ করেছে ইরানের সংবাদমাধ্যম।

ইউক্রেনীয় বিমানে ক্ষোপণাস্ত্র দাগা নিয়ে শুরু থেকেই আমেরিকাকে দোষারোপ করে আসছে ইরান। আমেরিকার বাড়াবাড়ির জন্যই এত বড় ভুল হয়ে গিয়েছে বলে ইতিমধ্যেই বিবৃতি দিয়েছেন সে দেশের বিদেশমন্ত্রী জাভেদ জারিফ। তার পরেও দেশের অন্দরেই বিক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে ইরান সরকারকে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, দেশের শীর্ষ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খোমেনেই এবং সরকারের শীর্ষ আমলাদের পদত্যাগের দাবি তুলছেন বিক্ষোভকারীরা। শনিবার আমিরকবীর ইউনিভার্সিটির সামনে বিক্ষোভের যে ছবি ও ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে, তাতেও খোমেনেইয়ের পদত্যাগের দাবি তুলতে দেখা গিয়েছে বিক্ষোভকারীদের।

শুরুতে বিমানে ক্ষেপণাস্ত্র দাগার কথা বেমালুম চেপে যায় ইরান। তার জন্য সরকারকে ‘মিথ্যুক’ বলেও দাগাতে শুরু করেন বিক্ষোভরা। অনেকে আবার সরকারের বিরুদ্ধে দায়িত্বজ্ঞানহীনতার অভিযোগও এনেছেন। তাঁদের প্রশ্ন, এক দিকে ইরাকে মার্কিন ঘাঁটি লক্ষ্য করে যখন ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছে, সেইসময় বিমানবন্দর থেকে ওই বিমানটিকে ওড়ার অনুমতিই বা দেওয়া হল কেন? যে বা যাঁরা এই গাফিলতির জন্য দায়ী, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের দাবিও তুলেছেন অনেকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন