পারিবারিক এক বন্ধুর লালসার শিকার হয়ে বাবাকে সব জানিয়েছিল বছর পনোরোর কিশোরী। সহমর্মিতা দেখিয়ে মেয়ের পাশে দাঁড়ানো তো দূরের কথা, উল্টে টানা চার বছর সেই বাবাই ধর্ষণ করে গিয়েছে ওই কিশোরীটিকে। আঠারোর গণ্ডি পেরিয়ে বাড়ি ছাড়া হয় কিশোরী। মামলা করে বাবার বিরুদ্ধে। গত শুক্রবার আদালত ওই ধর্ষক পিতাকে ১৫০৩ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছে। বিচারক এডওয়ার্ড সারকিসিয়ান বলেছেন, ‘‘ওই ব্যক্তি গোটা সমাজের জন্য বিপজ্জনক।’’ ফ্রেসনোর সুপিরিয়র কোর্টের ইতিহাসে এই রায় বিরল। এত বছরের জন্য কোনও অপরাধী কখনও সাজা পায়নি এই আদালতে।
বছর একচল্লিশের ধর্ষক পিতার নাম রেনে লোপেজ। ঘটনা আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার একটি ছোট শহর ফ্রেসনোর। ঘটনার সূত্রপাত ২০০৯ সাল নাগাদ। মেয়েটির আইনজীবী নিকোল গ্যালস্টান আদালতে জানিয়েছেন, এক পরিচিতের হাতেই প্রথমে যৌন হেনস্থার শিকার হয়েছিল মেয়েটি। রেনে লোপেজকে সে কথা জানানোর পরে সে মেয়েকে নিজের সম্পত্তির মতো ব্যবহার করতে শুরু করে। সপ্তাহে তিন থেকে চার বার চলত ধর্ষণ। ২০১৩ সাল নাগাদ বাবার বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র থাকা শুরু করে মেয়েটি। এখন সে তেইশের তরুণী। গ্যালস্টান আদালতকে জানিয়েছেন, মেয়েটির গোটা কৈশোর নষ্ট করে দিয়েছে তাঁর বাবা। উল্টে গোটা ঘটনার দায় মেয়েটির ঘাড়েই বারবার চাপিয়েছে সে। তাকে যাতে কঠিনতম শাস্তি দেওয়া হয় আদালতের কাছে সেই আর্জি জানিয়েছিলেন গ্যালস্টান।
রোজকারের সেই অত্যাচারের কাহিনি একটি ডায়েরিতে লিখে রাখতেন ওই তরুণী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেই তরুণী বলেছেন, ‘‘আমার বাবা যখন আমার উপর যৌন নির্যাতন চালাত, তখন আমি অনেকটাই ছোট। কোনও ক্ষমতা ছিল না তখন। প্রতিরোধও করতে পারিনি। সহ্যের সীমা ছাড়ালে ২০১৩ সালে বাড়ি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিই। বাবার বিরুদ্ধে মামলা করি।’’
গত সেপ্টেম্বরে এক জুরির কাছে দোষী সাব্যস্ত হয় লোপেজ। নাবালিকাকে ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন-সহ ১৮৬টি অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। আদালতের সামনে নিজের অপরাধ স্বীকার করার সুযোগ তাকে দেওয়া হয়েছিল। এক বার নয় দু’-দু’বার। তাতে সাজার মেয়াদ অনেকটাই কম হতো। কিন্তু এক বারের জন্যও নিজের দোষ স্বীকার করেনি লোপেজ। উল্টে বারবার নিজের মেয়েকেই দোষী ঠাওরেছে সে।