জাস্টিন ট্রুডো।
প্রায় ১৮ দিন ধরে কানাডা-আমেরিকার সীমান্তে আর রাজধানী অটোয়ার রাস্তায় অন্তত চারশো ট্রাক জড়ো করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন কানাডার ট্রাক চালকদের একাংশ। কানাডা সরকার আন্তর্জাতিক ট্রাক-চালকদের জন্যে করোনা টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক বলে ঘোষণা করেছে। তার বিরুদ্ধেই এই প্রতিবাদ। পরিবহণ থমকে থাকায় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে দেশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এ বার জরুরি অবস্থা চালু কথা ঘোষণা করলেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।
জাতির উদ্দেশে এক ভাষণে জরুরি অবস্থার কথা ঘোষণা করে ট্রুডো বলেছেন, ‘‘বেআইনি এবং বিপজ্জনক কাজকর্ম চালিয়ে যেতে দিতে পারি না।’’ গত ৫০ বছরের মধ্যে এই প্রথম কানাডায় জরুরি অবস্থা জারি হল। দীর্ঘ পাঁচ দশক আগে কুইবেকে সন্ত্রাস দমন করতে জরুরি অবস্থার কথা ঘোষণা করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী তথা জাস্টিন ট্রুডোর বাবা পিয়ার এলিয়ট ট্রুডো। জরুরি অবস্থা চলাকালীন সরকারের হাতে বিশেষ কিছু ক্ষমতা থাকবে। সরকার চাইলে বিক্ষোভকারীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের লেনদেন আটকে দিতে বা ‘ফ্রিজ়’ করতে পারবে। যে কোনও জায়গায় জনসমাগমে লাগাম দিতে পারবে। মিছিল, প্রতিবাদ-সভার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা যাবে। ট্রাকচালকেরা কথা না-শুনলে তাঁদের ট্রাক আটক করে রাস্তা খালি করতে পারবে পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে এমনই অনেক ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবে সরকার। তবে ট্রুডো এবং তাঁর একাধিক মন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, জরুরি অবস্থা প্রয়োগ করা হলেও কারও মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করা হবে না। তবে সরকারের সমালোচকের একাংশের মতে, আগেই যদি সেনার সাহায্যে বিক্ষোভ দমনে পদক্ষেপ করা হত তা হলে পরিস্থিতি এতটা গুরুতর হত না। জরুরি অবস্থাও ঘোষণা করতে হত না।
এ দিকে, বিভিন্ন দেশে সংক্রমণ মোটামুটি কমতে থাকলেও ওমিক্রনের দাপট বাড়ছে পূর্ব ইউরোপে। মঙ্গলবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) জানিয়েছে, রাশিয়া, ইউক্রেন, জর্জিয়া, বেলারুশ, আর্মেনিয়া ও আজ়েরবাইজানের মতো দেশগুলিতে গত দু’বছরে প্রচুর কোভিড আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে, যাঁদের অধিকাংশই অতি সংক্রামক ওমিক্রন ভেরিয়েন্টে আক্রান্ত। এই সমস্ত দেশগুলির কাছে টিকাকরণ বাড়ানো ও কোভিড বিধি মেনে চলার বার্তা দিয়েছে হু।