ইউনিসেফের রিপোর্টে বাল্যবিবাহ নিয়ে উদ্বেগ। —প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
এশিয়ার মধ্যে বাল্যবিবাহের হার সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশে। রাষ্ট্রপুঞ্জের শাখা সংগঠন ইউনিসেফের এক রিপোর্টে সম্প্রতি এমনটাই জানানো হয়েছে। ইউনিসেফ জানিয়েছে, গত আড়াই দশকে বাল্যবিবাহের বিশ্বব্যাপী সার্বিক প্রবণতা কিছুটা কমেছে। আগে প্রতি চার জনের মধ্যে এক জন নাবালিকার বিয়ে হত। এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে প্রতি পাঁচ জনের মধ্যে এক জন। তবে বাংলাদেশ এখনও এ দিক থেকে পিছিয়ে রয়েছে। ইউনিসেফের প্রতিবেদন বলছে, বাংলাদেশে বর্তমানে ২০-২৪ বছর বয়সি মহিলাদের মধ্যে ৫০ শতাংশের বেশি মহিলারই বাল্যবিবাহ হয়েছে, যা এই মুহূর্তে এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
ইউনিসেফের ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, মহিলাদের স্বল্প বয়সে গর্ভধারণের নেপথ্যেও অন্যতম একটি কারণ বাল্যবিবাহ। এ ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। বাংলাদেশে বর্তমানে ২০-২৪ বছর বয়সি মহিলাদের মধ্যে ২৪ শতাংশ মহিলাই ১৮ বছর বয়সের আগে সন্তান প্রসব করেছেন। বয়ঃসন্ধিকালে (১৫-১৯) বছরের মধ্যে গত এক বছরে সঙ্গীর যৌন হিংসার শিকার হয়েছেন ২৮ শতাংশ মহিলা।
শিশুদের অধিকার নিয়ে কাজ করা ইউনিসেফের ওই রিপোর্টে ভারতের প্রসঙ্গও উল্লেখ করা হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, বাল্যবিবাহ রুখতে বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি দেখা গিয়েছে দক্ষিণ এশিয়ায়। গত আড়াই দশকে দক্ষিণ এশিয়ায় বাল্যবিবাহের হার ৫৪ শতাংশ থেকে ২৬ শতাংশে নেমে এসেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি উন্নতি হয়েছে ভারতে। এ দেশে বর্তমানে জীবিত মহিলাদের মধ্যে প্রতি তিন জনের মধ্যে এক জনের বাল্যবিবাহ হয়েছে। ভারতে বর্তমানে বাল্যবিবাহের হার ২৩ শতাংশ।
রিপোর্ট অনুসারে, গত তিন দশকে বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ করেছে ভারত। তার মধ্যে ২০১৬ সাল থেকে ভারতের ১৫টি রাজ্য ইউনিসেফের সহায়তা পেয়েছে। এ দেশে বাল্যবিবাহ কমার নেপথ্যে নারীশিক্ষা, দারিদ্র দূরীকরণ, পুলিশ এবং বিচারব্যবস্থা-সহ বিভিন্ন অনুঘটকের কথা উল্লেখ করেছে ইউনিসেফ। তবে বাল্যবিবাহ পুরোপুরি নির্মূল করতে আরও বেশি করে পদক্ষেপের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।